গরুর দুধ পাওয়া খুবই কষ্টকর তাই প্যাকেটের গুঁড়ো দুধ খাবো, এতে কি পুষ্টি পাবো? আর কিভাবে খাবো?
দুগ্ধজাত খাদ্য উপাদানের মাঝে গুঁড়ো দুধ তৈরি করা হয় তরল দুধকে বাষ্পীভূত করার মাধ্যমে। যেহেতু তরল দুধের মেয়াদ খুব অল্প, সেহেতু বেশীরভাগ মানুষ তরল দুধের পরিবর্তে গুঁড়ো দুধকে বেছে নেন ব্যবহার ও পানের জন্য। একইসাথে ব্যবহার ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে দারুণ উপযোগী বলেও অনেকেই গুঁড়ো দুধ ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। মিষ্টি জাতীয় যেকোন খাদ্য তৈরিতে গুঁড়ো দুধ ব্যবহারের ফলে খাবারের স্বাদ অনেক বেড়ে যায় এবং বাড়তি ক্রিমি ভাব যোগ। যার ফলে যে কোন ধরণের মিষ্টি জাতীয় খাদ্য তৈরিতে সকলেই গুঁড়ো দুধ ব্যবহার করে থাকেন।
অনেকেই তরল দুধের পরিবর্তে গুঁড়া দুধ পান করতে পছন্দ করেন। কারণ তারা ভাবেন তরল দুধের চাইতে গুঁড়া দুধ বেশী পুষ্টিকর। যদিও তরল দুধের মতো সকল পুষ্টি উপাদান গুঁড়া দুধেও বিদ্যমান, তবে গুঁড়া দুধের মাঝে কিছু সমস্যাও রয়েছে। গুঁড়া দুধে রয়েছে উচ্চ কোলেস্টেরল এবং চিনি। একই সাথে সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে এতে সংক্রমিত হতে পারে ব্যাকটেরিয়া। এছাড়াও জেনে নিন গুঁড়া দুধের ব্যাপারে আরও বিস্তারিত কিছু তথ্য।
গুঁড়ো দুধে থাকে অক্সিডাইজড কোলেস্টেরল
জ্বি এটা সত্যি। গুঁড়ো দুধে থাকে অক্সিডাইজড কোলেস্টেরল। অক্সিডাইজড কোলেস্টেরল হল মোমের মতো পদার্থ যা নালীর দেয়ালে আটকে থাকে। যার ফলে রক্তনালী গুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়। প্রাকৃতিক তরল দুধের মতো উপাদান গুঁড়ো দুধে তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত হয় কৃত্রিম উপাদান। যা থেকে তৈরি হতে পারে হৃদযন্ত্রের নানাবিধ রোগ।
পুষ্টিগুণ ও স্বাদ
বিভিন্ন গবেষণা মতে, তরল দুধের স্থান খুব সহজেই দখল করতে পারে গুঁড়ো দুধ। কারণ এতে রয়েছে একই ধরণের ভিটামিন সমূহ ও মিনারেল সমূহ। একইসাথে গুঁড়ো দুধের দ্বারা খুব সহজেই তৈরি করা যায় যেকোন ধরণের পানীয় ও শেক। তবে স্বাদের ক্ষেত্রে রয়েছে ভিন্নতা। অনেকের কাছে প্রাকৃতিক তরল দুধের সাথে গুঁড়া দুধে স্বাদ অপছন্দনীয়। সহজ কথা এটাই যে গুঁড়ো দুধ কোন দিক দিয়েই তরল দুধের চাইতে বেশি পুষ্টিকর নয়। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক, যেমন অক্সিডাইজড কোলেস্টেরলের উপস্থিতি।
সাশ্রয়ী
গুঁড়ো দুধ ব্যবহারের অন্যতম লোভনীয় দিক হচ্ছে, এটি খুবই সাশ্রয়ী। তরল প্রাকৃতিক দুধ কিংবা প্যাকেটজাত দুধের তুলনায় গুঁড়ো দুধ কেনা যায় অনেক কম দামে। গবেষকদের মতে, এত কম দামে গুঁড়ো দুধ পাওয়া যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, এটি তৈরিতে নিকৃষ্টমানে পণ্য ব্যবহার করা।
ল্যাকটোস ইন্টলারেন্টদের জন্য উপযোগী
যারা দুধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে পারেন না তাদের জন্য রয়েছে ‘লো ল্যাকটোস পাউডারড মিল্ক ফর্মুলা’। গবেষণা মতে, যারা সাধারণ দুধ গ্রহণ করতে পারেন না, তাদের জন্য এই লো ল্যাকটস পাউডার মিল্ক একদম নিরাপদ। এমন ধরণের দুধ তৈরি করা হয় ১৯৯৫ সালে মিলিটারির মানুষদের জন্য।
ভালোভাবে দ্রবীভূত হয় না
যেহেতু অনেক গুঁড়ো দুধ তৈরিতে খুব একটা ভালো ও উন্নত মানের উপাদান ব্যবহৃত হয় না, সেহেতু গুঁড়ো দুধ খুব ভালোভাবে মিশে যায় না। পানি বা অন্য কিছুর সাথে মেশানোর চেষ্টা করা হলেও দলা পাকিয়ে কিছু অংশ থেকে যায়। এমন দুধ খাওয়ার পর পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এরপরেও কথা থেকেই যায়। নানান প্রয়োজনে গুঁড়ো দুধের ব্যবহার করতেই হয়। তাই লক্ষ্য রাখুন, দুধটি যেন ভালো ব্র্যান্ড ও ভালো মানের হয়।