শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
MR Hossain

Call

 

নামাজের ইমামতি শুদ্ধ হওয়ার জন্য নিম্নোল্লিখিত শর্তগুলো বিদ্যমান থাকা আবশ্যক—

 

 

১। পুরুষ হওয়া।

২। মুসলমান হওয়া।

 

৩। বালেগ হওয়া। নাবালকের ইমামতি শুদ্ধ নয়। (সুনানে কুবরা লিল বায়হাকি : ৬০৬৯)

 

 

৪। বুদ্ধিসম্পন্ন হওয়া। পাগলের ইমামতি শুদ্ধ নয়।

৫। নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কেরাত পড়তে সক্ষম হওয়া। সুতরাং যে ব্যক্তি নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য যতটুকু কেরাত পড়া প্রয়োজন, ততটুকু পড়তে সক্ষম নয়, ওই ব্যক্তির ইমামতি শুদ্ধ নয়। (তিরমিজি : ১৯১)

 

৬। নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার যতগুলো শর্ত আছে, তার মধ্য থেকে যদি শুধু একটি শর্তও পাওয়া না যায়, তাহলে তার ইমামতি শুদ্ধ হবে না। নামাজ সহিহ হওয়ার শর্ত যেমন—পবিত্রতা, সতর ঢাকা ইত্যাদি। আর যার নামাজই হবে না, তার ইমামতির প্রশ্নই আসে না।

 

৭। ওজর তথা যাবতীয় অপারগতামুক্ত হওয়া। যেমন—নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়া, প্রস্রাব ঝরা, সর্বক্ষণ বায়ু নির্গত হওয়া ইত্যাদি। (বাদায়ে : ২/৫৪)

 

৮। শব্দের সঠিক উচ্চারণে সক্ষম হওয়া। যে ব্যক্তি ‘রা’ বলতে ‘গাইন’, ‘হা’ বলতে ‘খা’ উচ্চারণ করে, এরূপ লোকের ইমামতি সহিহ হবে না। কারণ সে লোক পবিত্র কোরআন শুদ্ধ করে পড়তে পারবে না। সঠিক উচ্চারণে কোরআন পড়তে না পারলে নামাজই শুদ্ধ হবে না। সে কারণে তার ইমামতিও সহিহ হবে না।

 

ইমামতির সর্বাধিক যোগ্য ব্যক্তি কে?

 

মাসআলা : বাদশাহ বা তাঁর নায়েব ইমামতির বেশি যোগ্য। (তিরমিজি : ২১৮)

 

মাসআলা : মসজিদের জন্য নিযুক্ত ইমাম ওই মসজিদে ইমামতির বেশি যোগ্য। যদি কারো ঘরে জামাত হয়, তবে ওই ঘরের মালিকই (যদি যোগ্যতা রাখে) ইমামতির বেশি হকদার। (আবু দাউদ : ৫০৪)

 

মাসআলা : উপস্থিত লোকদের মধ্যে যদি বাদশাহ, নায়েব, মহল্লার ইমাম এবং ঘরের মালিক না থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তিই বেশি হকদার, যিনি নামাজে শুদ্ধ ও অশুদ্ধ হওয়া সম্পর্কে মাসআলাগুলোর জ্ঞান রাখেন, এরপর হাফেজ, যিনি নামাজের আহকাম সম্পর্কে জানেন, এরপর মুত্তাকি ব্যক্তি, এরপর বয়স হিসেবে যিনি বড়। যদি সবাই এই গুণাবলিতে সমান হন, তাহলে তাঁদের থেকে যাঁকে নির্বাচন করা হয়, তিনিই ইমামতির হকদার। (সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর : ৬৩৭)

 

যাদের ইমামতি মাকরুহ

 

১। ফাসেকের ইমামতি মাকরুহ (ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে অপছন্দনীয়)। (দারে কুতনি : ১৩২৮)

 

২। বিদআতির ইমামতি মাকরুহ। (ইবনে মাজাহ ৪৯, দারে কুতনি ১৭৮৫)

 

৩। অন্ধ ব্যক্তির ইমামতি মাকরুহ। তবে তিনি যদি উপস্থিত সবার মধ্যে উত্তম ও বেশি যোগ্য হন, তাহলে সমস্যা নেই। (ইবনে আবি শায়বা ২/২১৫, সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬২৭)

 

৪। আলেমের উপস্থিতিতে ধর্মীয় জ্ঞানহীন ব্যক্তির ইমামতি মাকরুহ। (মুসনাদুল ফিরদাউস ১/৩৯১)

 

৫। এমন লোকের ইমামতি মাকরুহ, যার ব্যক্তিগত বিভিন্ন দুর্বলতার কারণে লোকেরা তাকে অপছন্দ করে। (তিরমিজি : ৩২৬)

 

৬। সুন্নাতসম্মত পরিমাণ থেকে নামাজকে দীর্ঘ করা মাকরুহ। (নাসায়ি : ৮১৪)

 

লেখক : মুহাদ্দিস ও মুফাসসির

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ