Call

ইসলাম ধর্ম ও হিন্দু ধর্ম এই দুইটার মধ্যে পার্থক্যঃ

➤ ইসলামে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে রব হিসেবে গ্রহণ করে না। ইসলামে একেশ্বরবাদে বিশ্বাস করা হয় এবং আল্লাহর একক অস্তিত্ব ও পূর্ণ ক্ষমতায় বিশ্বাস করা ইসলামের একটি মৌলিক শর্ত যাকে তাওহিদ বা একত্ববাদ বলে।

অপরদিকে, হিন্দুধর্ম ঈশ্বরকে একেশ্বরবাদ, বহু-ঈশ্বরবাদ, অবতারবাদ, নাস্তিক্যবাদ প্রভৃতি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে।

➤ ইসলামের মধ্যে সাদৃশ্য হল, ইসলামে ইমান আনতে বলা হয়েছে। এই ইমান মূলত ছয়টি বিষয়ের উপর আনতে হবে। ১. স্রস্টার উপর ২. ফেরেশতাদের উপর ৩. নবী-রাসুলের উপর ৪. ইহকাল ও পরকালের উপর ৫. তাকদীর এর উপর ৬. কিতাবসমূহে বিশ্বাস।

স্রস্টার উপর বিশ্বাসের ব্যাপারে কোন সাধারণ হিন্দুকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি তার স্রস্টার কথা বলবে। তিনি বলবে সূর্য দেবতা, চন্দ্র দেবতা ও অনেক দেবতার নাম বলবে। কিন্তু, একজন মুসলমান শুধু আল্লাহর কথা বলবে। হিন্দুরা সূর্যের, চন্দ্রের, আলোর ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিসের স্রস্টা বলেন, কিন্তু, মুসলমানেরা সবকিছু স্রস্টার বলে থাকেন।

➤ ইসলাম ধর্মমতে মানবজীবন একটাই ও একবারই আসে। এতে পুনরায় দেহ ধারণ বলে কিছু নেই। শুধু কিয়ামতের দিন সবাইকে পুনরুত্থিত করা হবে ও বিচার করা হবে। জীবিত থাকা অবস্থায় কৃতকর্মের উপর ভিত্তি করে মৃত্যুপরবর্তী জীবনে প্রতিদান দেওয়া হবে যা অনন্তকালের জন্য প্রাপ্য হবে।

বিপরীতভাবে হিন্দুধর্মমতে, মানুষ মৃত্যুর পর কর্মফল ভোগের জন্য পুনরায় দেহ ধারণ করে পৃথিবীতে আসে। একে পুনর্জন্ম বলে। এবং মোক্ষ প্রাপ্তির মাধ্যমে জন্মচক্রের সমাপ্তি ঘটে ।

➤ ইসলাম ধর্মও ফেরেশতার অস্তিত্বে বিশ্বাসী যারা হলেন আল্লাহর সৃষ্ট স্বর্গীয় দূত।

অপরদিকে হিন্দুধর্মেও স্বর্গীয় দুত রয়েছে যাদের দেবতা বা দেবী বলা হয়। হিন্দুধর্মে স্বর্গীয় দূতদের পূজা করা হয়, যা ইসলাম ধর্মে নিষিদ্ধ।

➤ ইসলাম ধর্মে আল্লাহ ব্যতীত কোন কিছুর উপাসনা করা নিষিদ্ধ।

অপরদিকে হিন্দু ধর্মে দেবদূতদের পূজাকে আধ্যাত্মিক সাধনার অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়।

➤ ইসলাম ধর্মে ইবলিশ হল জ্বিন প্রজাতি হতে জন্ম নেয়া, মানুষের মনে কুমন্ত্রণা প্রদানকারী শয়তান শ্রেণীর নেতা।

ইসলামে শয়তানের অস্তিত্বে বিশ্বাসের মতই হিন্দুধর্মেও অসুরে বিশ্বাস করা হয়। হিন্দুধর্মে একাধিক অসুর রয়েছে কিন্তু তারা কোন নেতৃস্থানীয় অসুরে বিশ্বাস করে না।

➤ ইসলাম অনুসারীগণ দৈনিক নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে।

হিন্দুধর্মের অনুসারীগণ দৈনিক নিয়মিত ও অনিয়মিতভাবে তাদের উপাস্য দেবতা, দেবীগণের প্রতিমূর্তিকে সামনে রেখে উপাসনা ও ভক্তিমূলক পূজা করে থাকে।

ধর্ম মুলত একটাই ছিল পর্যায়ক্রমে ধীরে ধীরে তা আলাদা করেছে মানুষ। এই থেকেই মানুষ দ্বারাই বিভিন্ন ধর্ম সৃষ্টি।

কারণ, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হাদীস বর্ণনা করতেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ প্রতিটি নবজাতকই জন্ম লাভ করে ফিতরাতের উপর। অতঃপর তার মা-বাপ তাকে ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান বা অগ্নিপূজারী রূপে গড়ে তোলে। যেমন, চতুষ্পদ পশু নিখুঁত বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাদের মধ্যে কোন কান কাটা দেখতে পাও?

বরং মানুষরাই তার নাক কান কেটে দিয়ে বা ছিদ্র করে তাকে বিকৃত করে থাকে। অনুরূপ ইসলামের ফিতরাহ্তে ভূমিষ্ট সন্তানকে মা-বাপ তাদের শিক্ষা-দীক্ষা ও জীবন ধারায় প্রবাহিত করে ভ্রান্ত ধর্মী বানিয়ে ফেলে। পরে আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিলাওয়াত করলেনঃ

فِطْرَتَ اللهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا

‘‘আল্লাহ্‌র দেয়া ফিতরাতের অনুসরণ কর যে ফিত্রাতের উপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। (সুরা রূমঃ ৩০)।

(সহীহ বুখারী (তাওহীদ), অধ্যায়ঃ ২৩/ হাদিস নম্বরঃ ১৩৫৮ মুসলিমঃ ৪৬/৬, হাঃ ২৬৫৮, আহমাদঃ ৮১৮৫ আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৬৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১২৭৫ হাদিসের মানঃ সহিহ।


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ