মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে যদি জিহাদ হয়, আর তাতে কিছু নারী আটক হয়, এদেরকেই দাসী বানানো হয়। পরবর্তীতে এদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের কারণে এদেরকেই যৌনদাসী বলা হয়। বর্তমান সময়ে এই সিস্টেম চালু নেই। তাই বর্তমানে যৌনদাসীর কোনো অস্তিত্ব নেই। এমতাবস্থায় শুধু বিয়ে করা স্ত্রী ছাড়া অন্য কোথাও যৌন সম্পর্কে করলেই সেটা জিনা এবং হারাম হবে। ★ ইসলামে যৌনদাসী প্রসঙ্গ ★—— ইসলামকে আক্রমণ করার যতগুলো মোক্ষম অস্ত্র ইসলামবিদ্বেষীদের হাতে রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই প্রোপাগাণ্ডা যে ইসলাম ক্রীতদাসি ও যুদ্ধবন্দিনীদের সাথে যৌন-সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ করে দিয়েছে বরং ক্রীতদাসি ও যুদ্ধবন্দিনীদের যৌনদাসীতে পর্যবসিত করেছে। তাদের এই প্রোপাগাণ্ডায় যে কেউ ভেবে বসতে পারেন, ইসলামই বুঝি ক্রীতদাসি আর যুদ্ধবন্দিনীদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের প্রবর্তক। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে ক্রীতদাসি আর যুদ্ধবন্দিনীদের সাথে অতিপ্রাচীনকাল থেকে চলে আসা যথেচ্ছ, অমানবিক ও অনিয়ন্ত্রিত যৌনাচারকে ইসলাম সীমিত, মানবিক ও নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে আনার পাশাপাশি তাদেরকে জৈবিক চাহিদা পূরণের একটি বৈধ ও মর্যাদাপূর্ণ সুযোগ প্রদান করেছে যার ফলে একদিক দিয়ে তাদের সন্তান জন্মগতভাবে স্বাধীন ও পিতার সম্পদের উত্তারিকারী হয়, অন্যদিক সন্তান গর্ভধারণের মাধ্যমে ক্রীতদাসিটি ক্রমান্বয়ে মুক্তি লাভ করে। মূল আলোচনায় যাবার আগে কয়েকটি বিষয় আমাদের ভালোভাবে মনে রাখতে হবে: ০.১ দাসপ্রথা ইসলামের উদ্ভাবন নয়, বরং দাসপ্রথা অতিপ্রাচীনকাল থেকে চলে আসা একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। ইসলাম একদিকে সমাজে প্রচলিত অমানবিক দাসপ্রথাকে নিজ আওতার ভেতরে মানবিক করতে সচেষ্ট হয়েছে, অন্যদিকে নানাবিধভাবে দাসমুক্তকরণের পথ উন্মুক্ত করেছে। ০.২ ক্রীতদাসির সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপনের অধিকার দাসপ্রথার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, ইসলামের কোন অপরিহার্য, অবশ্য করণীয়, অথবা আকাঙ্ক্ষিত বিষয় নয়। ইসলাম নিজ গণ্ডির ভেতরে এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেছে মাত্র। ০.৩ দাসপ্রথার নিয়মকে ইসলামের সাথে গুলিয়ে ফেলা যাবে না। . ★ কেন এর অনুমোদন? ★—— ইসলাম যদিও স্বাধীন ব্যক্তির বেচাকেনা নিষিদ্ধ ঘোষণা করার মাধ্যমে ক্রীতদাসপ্রথার মূল উৎস বন্ধ করে দিয়েছে, দাসমুক্তির নানাবিধ পথ উন্মুক্ত করেছে কিন্তু যুদ্ধবন্দিদের ক্রীতদাস/ক্রীতদাসী বানানোর এই পথটি বন্ধ করেনি। কেন? ১.২.১ ইসলাম একটি বাস্তব ধর্ম। একগালে চড় খেলে আরেক গাল পেতে দেবার ধর্ম ইসলাম নয়। ইসলামে যুদ্ধবন্দিদের ক্রীতদাস/ক্রীতদাসি বানানো কোন জরুরী বিষয় না হলেও যুদ্ধবন্দিদের ক্রীতদাস/ক্রীতদাসি বানানো তখনকার সময়ে একটি প্রচলিত নিয়ম ছিল। যুদ্ধে মুসলিমরা অমুসলিমদের হাতে বন্দি হলে তাদেরও একই পরিণতি বরণ করতে হতো। যতদিন পর্যন্ত মুসলিম যুদ্ধবন্দিদের ক্রীতদাস/ক্রীতদাসি হবার সম্ভাবনা দূর না হয়, ততদিন পর্যন্ত মুসলিমদের জন্য অমুসলিম যুদ্ধবন্দিদের ক্রীতদাস/ক্রীতদাসি বানানোর সমঅধিকার থেকে বঞ্চিত করে নিজ অনুসারীদের নিশ্চিত বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেবার মতো আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ইসলাম কিছুতেই নিতে পারে না। তবে ক্রীতদাস প্রথার এই উন্মুক্ত দ্বার বন্ধ করার চাবি অমুসলিমদের হাতেই রয়েছে। অমুসলিমরা মুসলিমদের সাথে মুসলিম যুদ্ধবন্দিদের ক্রীতদাস/ক্রীতদাসি না বানানোর চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে ক্রীতদাস প্রথার এই উন্মুক্ত পথটি চিরতরে বন্ধ করে দিতে পারে। ১.২.২ মুক্তিপণ বা বন্দিবিনিময়ের মাধ্যমে মুক্তকরণের পরও যে বিপুল সংখ্যক যুদ্ধবন্দি রয়ে যেত, তাদের নি:শর্তভাবে মুক্ত করে দেওয়া ইসলামী রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য যেমন হুমকিস্বরূপ ছিল, তেমনি কারাবন্দি করে রাখাও ছিল ব্যয়বহুল ও অর্থনীতির ওপর অতিরিক্ত চাপস্বরূপ। সহজ পন্থা ছিল প্রচলিত নিয়মে ক্রীতদাস/ক্রীতদাসি হিসেবে তাদেরকে বিভিন্ন পরিবারের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া। ১.২.৩ যুদ্ধবন্দিদের ক্রীতদাস/ক্রীতদাসি হিসেবে বিভিন্ন পরিবারে বণ্টন করে দেবার ফলে একদিকে যেমন সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় থাকতো, অন্যদিকে মুনিবের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ করে ক্রীতদাস/ক্রীতদাসি নিজেদের মুক্ত করার সুযোগও পেত। অন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে খুব কাছে থেকে ইসলামকে পর্যবেক্ষণ করে ইসলামে দাখিল হবার একটি সুযোগও তাদের সামনে খোলা থাকতো। . আরো বিস্তারিত পড়ুন: http://www.shodalap.org/bngsadat/25753/

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ