পা মচকানোর তিন ধরনের ঘটনা দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে ব্যথার তীব্রতার ভিন্নতা রয়েছে। মৃদু পা মচকানো মানে কেবল গোড়ালির ল্যাটারাল লিগামেন্ট স্ট্রেচ হওয়া বা টান লাগা; এ জন্য তেমন কোনো চিকিৎসারও দরকার নেই। মাঝারি তীব্রতার মানে লিগামেন্ট খানিকটা ছিঁড়েও গেছে এবং গোড়ালির সন্ধিও গেছে মচকে। আর তীব্র মাত্রার মানে লিগামেন্ট সম্পূর্ণই ছিঁড়ে যাওয়ার সঙ্গে গোড়ালির সন্ধি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত। পরের দুটির জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা জরুরি।
পায়ের পাতা হঠাৎ বেকায়দায় পড়ে গেলে পা মচকানোর মতো ঘটনা ঘটে। এর পর পা ফুলে যায় ও তীব্র ব্যথা শুরু হয়। এ ব্যথা দীর্ঘদিন থাকতে পারে। দ্রুত ঠান্ডা সেঁক, ব্যথা ও প্রদাহনাশক বড়ি, ডাইক্লোফেনাক জেল ব্যবহার, পায়ের বিশ্রাম—এই হলো পা মচকানোর চিকিৎসা। ইদানীং ৭ থেকে ১০ দিনের বেশি বিশ্রাম দেওয়া হয় না। বরং সাপোর্ট নিয়ে শিগগিরই হাঁটা-চলা শুরু করতে বলা হয়। বারবার একই জায়গায় পা মচকানো পরে ওই সন্ধিতে ক্ষয়জনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই খেলাধুলা ও দ্রুত হাঁটা-চলার সময় সাবধানে থাকুন, পায়ের পাতার ভারসাম্য বজায় থাকে এমন জুতা পরুন
জেনে নিন হঠাৎ পা মচকে গেল কী করবেন। * বিশ্রাম: পা ফুলে গেলে, যন্ত্রণা হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিশ্রাম। যন্ত্রণা কমে গেলেও বিশ্রাম না নিয়ে হাঁটাহাটি, খাটাখাটনি করলে গোড়ালির ফোলা থেকেই যাবে। * বরফ: ফোলা কমাতে সবচেয়ে উপকারী বরফ। সরাসরি বরফ দেবেন না, একটা পরিস্কার কাপড়ে বরফ পেঁচিয়ে সেটা দিয়ে সেঁক দেয়াটাই সঠিক উপায়। চোট পাওয়ার প্রথম ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা বা ফোলা না কমা পর্যন্ত প্রতি এক-দুই ঘণ্টা পর পর ১০ থেকে ২০ মিনিট ধরে বরফের সেঁক দিন। * ক্রেপ বা ব্রেস: ফোলা কমাতে যেমন সাহায্য করবে আইস প্যাক, তেমনই যন্ত্রণা উপশমে কাজে আসবে ক্রেপ বা ব্রেস। চোট পাওয়ার প্রথম ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা অবশ্যই ব্রেস লাগিয়ে রাখুন। এতে ব্যথা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবে অতিরিক্ত টাইট করে ব্রেস লাগাবেন না। এতে রক্ত জমাট বেঁধে ব্যথা বাড়তে পারে। * পা তুলে রাখুন: পা যত নামিয়ে বা ঝুলিয়ে রাখবেন তত ফোলা বাড়বে। তাই দিনে অন্তত দুই থেকে তিন ঘণ্টা পা তুলে রাখুন। শোয়ার সময় হার্ট লেভেলের থেকে পা উঁচুতে রাখুন। পা মচকালে চেষ্টা করবেন যত কম হাঁটা যায়। হাঁটতে যদি হয়ই, একটা ক্র্যাচ বা লাঠির সাহায্য নিন। যদি আক্রান্ত জয়েন্ট বেশি ফুলে যায় এবং ব্যথা তীব্র হয়, বুঝতে হবে হাড়ে চিড় ধরেছে বা ভেঙে গেছে। যদি ফুলে না যায় কিন্তু একই সঙ্গে ব্যথাও দীর্ঘদিন ভালো না হয়, বুঝতে হবে লিগামেন্ট বেশি ছিঁড়ে গেছে। উভয় ক্ষেত্রে ডাক্তারের সাহায্য নিতে হবে। পা মচকানো এড়াতে খেলাধুলা ও দ্রুত হাঁটা- চলার সময় সাবধানে থাকুন, পায়ের পাতার ভারসাম্য বজায় থাকে এমন জুতা পরুন, সিঁড়ি ভাঙার সময় সাবধান হোন।