শুরুতেই পরিচর্যা করলে অনেকাংশে চুল পাকা রোধ করা সম্ভব। *.সপ্তাহে দুই-তিন দিন তেল গরম করে তা মাথার স্কালপে ভালো করে ম্যাসাজ করতে পারেন। তেল চুলের পুষ্টি জোগায়। *.আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু বাছাই করুন। শ্যাম্পু ব্যবহার করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। *.চুলে # খুশকি দেখা দিলে শুরুতেই সাবধান হোন। কারণ অতিরিক্ত খুশকির কারণেও অসময়ে চুল পাকে। *.সে ক্ষেত্রে সপ্তাহে এক দিন লেবুর রস বা পেঁয়াজের রস স্কালপে দিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে খুশকি কমে যাবে। *.প্রথম যখন দেখবেন চুল পাকতে শুরু করেছে তখন হেনা (মেহেদী ) , ডিমের কুসুম ও টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মাথায় লাগান। এরপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। হেনা ব্যবহারের ফলে চুল পাকা রোধ হবে এবং চুলের সাদা ভাবটা কম বোঝা যাবে । *.যাঁরা খুব বেশি রোদে কাজ করেন অর্থাৎ চুলে সরাসরি রোদ লাগে তাঁদের চুল দ্রুত পাকার প্রবণতা দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে রোদে কাজ করলে মাথা ঢেকে রাখুন। অথবা রোদ থেকে ফিরে ক্রিম সমৃদ্ধ # শ্যাম্পু দিয়ে চুল শ্যাম্পু করুন। *.অনেকে চুলে নানা ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করেন। যেমন: জেল, ক্রিম, কালার ইত্যাদি। এসব ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। সব সময় ভালো ব্র্যান্ড ব্যবহার করা উচিত। *.ভিটামিন-ই ক্যাপসুলও চুলে ব্যবহার করতে পারেন। তবে সরাসরি ভিটামিন-ই ক্যাপসুল চুলে বা স্কালপে ব্যবহার না করাই ভালো। তেল বা জেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। অল্প বয়সে চুল পাকলে আরও কিছু পরামর্শ : বংশগত হলে , অর্থাৎ আপনার বাবা-চাচা-কাকা-দাদার মত করে আপনারও চুল দ্রুত সাদা হয়ে পরলে ব্যাপারটা একটু কঠিন। আর তা না হলে, এগুলো মেনে চলুনঃ *.অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা করবেন না *.অতিরিক্ত চা-কফি-ড্রিংক্স খাবেন না।*.বেশি তেলযুক্ত খাবার খাবেন না। বেশী মশলাযুক্ত খাবার খাবেন না। *.বেশী টক বা এসিডিক খাবার খাবেন না। এগুলো খাবেনঃ আটার রুটি, সিরিয়াল, মাংস সব ধরনের, সয়া, গাঢ় সবুজ সবজি, হলুদ ফলমূল, সবুজ শাক, কলা, টমেটো, ফুলকপি, গরু- খাশির কলিজা-ফেশকা, দই, পাউরুটি, কাজু-পেস্তা আর কাঠ বাদাম, ডিম, চিংড়ি মাছ, গাজর। এই প্যাকগুলো দিতে পারেনঃ *.শুকনো আমলকি নারিকেল তেলে ডুবিয়ে সিদ্ধ করে তেলটা কালো করে সেটা ভালো করে ঘষে ঘষে মাথায় দেবেন। *.নারিকেল তেল আর লেবুর রস মিশিয়ে মাথায় দিতে পারেন। *.এক চা চামচ লবন এক কাপ ১৫ মিনিট জ্বাল দেয়া কালো চা-এর সাথে মিশিয়ে সেটা মাথায় ম্যাসাজ করতে হবে। *.দুই চামচ মেহেদি, এক চামচ দই, এক চামচ মেথি গুড়া, তিন চামচ কফি, ২ চামচ পুদিনার রস, ৩ চামচ মিন্ট রস একসাথে মেখে মাথায় মেখে ৩ ঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলবেন।
পাকা চুলের সমস্যা দূর করার এমন কিছু সহজ উপায় তুলে ধরা হলো এখানে। আমলকী ঘরে বসে পাকা চুলের সমস্যা সমাধানে আমলকীর জুড়ি নেই। ভিটামিন সি আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ আমলকী তারুণ্য ধরে রাখতে খুবই কার্যকর। নিয়মিত আমলকী খেলে চুলের স্বাস্থ্য তো ভালো থাকেই সঙ্গে চুল পাকা রোধ করতেও তা সাহায্য করে। আমলকী থেঁতলে নিয়ে হালকা করে বেটে নিন, একটু পানি মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করুন। আমলকীর মণ্ড চুলের গোড়ায় ঘষে ঘষে মাখুন। ১৫-২০ মিনিট রেখে দিয়ে বেশি করে পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে দু-একদিন আমলকীর মণ্ড মাখলে চুল পাকা রোধ করতে উপকার পাবেন। কারি পাতা আর নারকেল তেল খাবারদাবারের মেনুতে নিয়মিত কারি পাতা রাখুন। কারি পাতার পুষ্টি উপাদান আপনার পেকে যাওয়া চুলগুলোকে হারিয়ে যাওয়া রঙে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি নারকেল তেলে কারিপাতা মিশিয়ে চুলে মাখুন। নারকেল তেলে কিছু তাজা কারিপাতা ছিঁড়ে ছিঁড়ে ছেড়ে দিয়ে পাঁচ-সাত মিনিট ধরে গরম করুন। চুলা থেকে নামিয়ে তেলটা জুড়াতে দিন। তেল জুড়ালে চুলের গোড়ায় ঘষে ঘষে সারা মাথায় মাখুন। আধা ঘণ্টা রেখে দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এমনকি রাতের বেলায় এই কারিপাতা-নারকেল তেল চাইলে সারা রাতও রেখে দিতে পারেন। পরদিন সকালে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
১ নং : ১ চা চামচ হরতকীর গুড়া, ২ চা চামচ পরিমান মেহেদী পাতার গুড়া, অর্ধ কাপ পরিমান নারকেল তেল। সম্পুর্ন উপকরণগুলো একসাথে করুন এবং নাড়তে থাকুন। সম্পূর্ন মিশে গেলে এটি এবার ফুটিয়ে নিন। ঠান্ডা হওয়ার পর পুরো মিশ্রনটুকো আপনার চুলে মেখে নিন। ২ ঘন্টা অপেক্ষা করুন তারপর ভালভাবে ধুয়ে ফেলুন। শ্যাম্পু ব্যাবহার করুন। ২ নং: ১০ গ্রাম কেশুতপাতা নিন, হরতকীর ছাল, ১০/১২ গ্রাম মেহেদী পাতা, ৬-৮টি জবুফলের মাঝের অংশ নিন, ২/৩ টি আমলকি ও প্রয়োজনমত বিটের রস দিয়ে ফুটিয়ে নিন। এবার তৈরিকৃত হেয়ার টনিকটি প্রতিদিন লাগান গোসলের আগে। ৪০ মিনিট পড়ে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি খুবই কার্যকর পদ্ধতি। এটি করেই অনেকের চুল বছরের পর বছর ভাল থাকতে পারে। অকালে চুল পাকা রোধ ৩ নং: বাদামের তেল, আমলকীর রস ও লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে প্রতি সপ্তাহের অন্তত ২ দিন ব্যাবহার করা উচিত। তাহলে আপনার চুল আরো স্বাস্থ্যবান আর চুল পাকার সম্ভাবনা একদমই কমে যাবে। ৪ নং: যদি আপনার ইতিমধ্যে চুর পাকা শুরু হয়ে থাকে এবং যা বেশি না মাত্র একটি-দুটি পর্যায়ে আছে তাহলে টকদই, ডিমের কুসুম ও মেহেদী একসাথে করে প্যাক তৈরি করে চুলে মাখুন। আপনার চুল পাকা কমে যাবে। ৫ নং : ২ টেবিল চামচ পরিমান আমলকী গুঁড়া, ১ টেবিল চামচ পরিমান মেথির গুড়া ও ১ কাপ পরিমান নারিকেলের তেল একসাথে করে হালকা তাপে গরম করুন। এটির রং বাদামী রং হলে নামিয়ে রাখুন। এরপর ঠান্ডা করার পর ছেকে প্রতি সপ্তাহে ২ বার চুলের গোড়া পর্যন্ত লাগান। ২ ঘন্টা পরে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন। এছাড়াও আপনার চুল ভাল রাখতে নিয়মিত ভাল ব্রান্ডের শ্যাম্পু (যেটি আপনার চুলে স্যুট করে ) ব্যাবহার করুন। ভাল শাখ সবজি খান এবং প্রচুর পরিমান বিশুদ্ধ পানি পান করুন। আপনার চুল ভাল রাখতে বিভিন্ন জেল, কালার, চুলের ক্রিম, স্প্রে ও সিরাম ব্যাবহারে সতর্ক হতে হবে। বেশি ভাল হয় এগুলো ব্যাবহার না করলে। এভাবে চললে আপনার চুলতো পাকা কমবেই উপরোন্তু চুল হবে সুন্দর, ঝলমলে কালো ও সিল্কি।