প্রান-রসায়নবিদের কাছে ফারমেন্টেশন হল এক প্রকার জৈব- রাসানিক প্রক্রিয়া যেখানে জৈব যৌগ ইলেক্ট্রন ( electon)গ্রহিতা বা ইলেক্ট্রন দাতা হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল মাইক্রোবায়োলজিস্টদের কাছে ফারমেন্টেশন হল অণুজীবের ব্যাপক আবাদের মাধ্যমে পন্য উৎপাদন করা। প্রান-রসায়নবিদের সংঞ্জামতে গাজন শুধু মাত্র অবাত ( Anaerobic respiration )শ্বসন প্রক্রিয়া। অপরদিকে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মাইক্রোবায়োলজিস্টরা অবাত ও সবাত (Aerobic respiration ) উভয় ধরণের প্রক্রিয়াকে গাজন হিসেবে ধরা হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শিল্পায়ন চোলাইকরণ প্রক্রিয়ায় যন্ত্রীকরণের সূত্রপাত করেছিল আর তা এই জনপ্রিয় পানীয়র ইতিহাসে এক মাইলফলক প্রমাণিত হয়েছে। এরপর, অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার করা হয়েছিল। ফরাসি রসায়নবিদ ও জীবাণুবিজ্ঞানী লুই পাস্তুর আবিষ্কার করেছিলেন যে, ইস্ট জীবিত জীবাণুর সমন্বয়ে গঠিত ছিল, যা বিয়ারকে গাঁজাতে সাহায্য করত। এই আবিষ্কার চিনিকে আ্যলকোহলে রূপান্তর করাকে আরও সূক্ষ্মভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব করেছিল। চোলাইকরণের পুরো প্রক্রিয়াকে চারটে ধাপে ভাগ করা যেতে পারে: শস্যের মণ্ড তৈরি করা, যবসুরা প্রস্তুতিকরণ, গাঁজন প্রক্রিয়া এবং পরিপুষ্ট অবস্থায় পৌঁছানো। শস্যের মণ্ড তৈরি করা। এই ধাপে যবকে বাছা হয়, মাপা হয় এবং অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় বস্তু থেকে পরিষ্কার করা হয়। এরপর, এগুলোকে জলে ভিজিয়ে রাখা হয়—যব অঙ্কুরিত হওয়ার জন্য যা আবশ্যক। প্রায় ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে অঙ্কুরোদ্গম ঘটে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত সর্বশেষ উৎপাদিত বস্তু হচ্ছে সবুজ মণ্ড, যেটাকে শুষ্ক করার জন্য বিশেষ চুল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়। অঙ্কুরোদ্গম থামানোর জন্য সবুজ মণ্ডের আর্দ্রতা ২ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে কমিয়ে আনা হয়। শুষ্ক প্রক্রিয়ার পর, অঙ্কুরগুলোকে মণ্ড থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় আর এরপর মণ্ডকে চূর্ণ করা হয়। এখন এটা পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য তৈরি।