চুলে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব, চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি(রঙ বা ট্রিটমেন্ট)করতে নানা রকমের রাসায়নিক উপাদানের অতিরিক্ত ব্যবহার, অপর্যাপ্ত ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, হরমোনের (থাইরয়েড)ভারসাম্যহীনতা, অতিরিক্ত ঔষধ গ্রহণ, খুশকি ও চর্মরোগ জাতীয় সমস্যা ইত্যাদি। অনেক সময় দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপও চুল পড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
চুল পরা হালকা থেকে সম্পূর্ণ টাক অবধি হতে পারে। অনেক করাণে চুল পরতে পারে। বড় অসুখ থেকে সেরে ওঠার পরে চুন পরে যেতে পারে, সার্জারির পরে, মায়েদের সন্তান প্রসব করার পরে কখন কখন এটা হয়। অল্প স্বল্প চুলতো পরেই তবে টাক পরে যাওয়াটা স্বাভাবিক নয়।
ঔষধের প্রতিক্রিয়া
ঔষধের কারণে হঠাৎ চুল পরে যেতে পারে এবং সারা মাথার চুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
অসুখ হওয়ার কারণে শারীরিক অসুস্থতার কারণে চুল পরতে পারে। যেমন থাইরয়েড হলে (হাইপোথাইরয়েডিসম বা হাইপারথাইরয়েডিসম), সেক্স হর্মনের ব্যালান্স নষ্ট হলে বা নিউট্রিশানের অভাবে আইরন, জিঙ্ক, বা/ও টিনের অভাবে। যারা খাবার খুব মেপে বা বেছে খায় বা যে সকল মহিলাদের খুব বেশি রজঃস্রাব হয়।
মাথায় ফাংগাল ইনফেকসান হলে মাথার কোন অংশে টাক পরে যেতে পারে ফাংগাল ইনফেকসান হলে এই কারণেই অনেক সময়ে বাচ্চাদের কোন কোন অংশে চুল পরে যায়।
বংশগত টাক পরার ধাত ছেলেদের চুল পরার একটা ধরণ আছে (প্রথমে মাথার সামনে তার পর মাথার মাঝখান)
এটা বেশির ভাগ পুরুষদের হয় এবং এটা অল্প বয়সেই শুরু হতে পারে। এটা তিনটি কারণে হতে পারে, বংশগত, হর্মনের জন্য বা বয়স বাড়ার ফলে। মহিলাদের চুল পরা সামনে থেকে না হয়ে মাথার মাঝখান থেকে শুরু হয়।
চুল পড়া বর্তমান সময়ের একটি খুব সাধারণ কিন্তু ভয়াবহ সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। তবে এটা যে কেবল নারীদের সমস্যা তাই নয়। অল্প বয়সে মাথার চুল পড়ে যাওয়া ছেলেদের জন্য ভীষণ দুশ্চিন্তার একটি কারণ। কেনোনা বয়সের সাথে সাথে মাথার চুল কমে আসা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও টিনেজার বা কিশোর ছেলেদের মাথায় টাক পড়তে দেখা একটি অন্যতম বিব্রতকর ও যন্ত্রণাদায়ক ব্যাপার। চুল পড়ার জন্য অনেকাংশে দায়ী থাইরয়েড গ্রন্থির অসুখ। রক্তস্বল্পতা, ওজন কমানোর জন্য খাওয়াদাওয়া একদম কমিয়ে দেওয়াও চুল পড়ার কারণ হতে পারে। সুষম খাবারের বদলে অতিরিক্ত ফাস্টফুড, চকলেট ইত্যাদি খেলে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি হয়েও চুল পড়ে যেতে পারে। ছেলেদের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাকব্রাশ করে চুল আঁচড়ালে সাধারণত কপাল চওড়া হয়ে থাকে। ব্যাকব্রাশ করার কারণে অনেকের মাথায় টাক পড়তেও দেখা যায়।
চুল পড়ার কারণ:- চুল পড়া একটি স্পর্শকাতর সমস্যা। চুল পড়ার কারন নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। চিকিৎসা শাস্রে বলা হয়, চুলপড়ার কারণ ডাইহাইড্রক্সি টেস্টোস্টেরন বা ডিএইটি (DHT), ডিএইচটি (DHT) একটি পুরুষ হরমোন। পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরন থেকে আলফারিডাকটেজ এনজাইমের সাহায্যে তৈরি হয় ডিএইচটি (DHT)।ডিএইচটি (DHT) চুলের ফলিকলের গোড়ায় গিয়ে তাদের বৃদ্ধি রোধ করে এবং রক্ত সঞ্চালন কমিয়ে দেয়। এভাবেই চুল পড়তে শুরু করে। সুতরাং DHT বেড়ে গেলে চুল পড়তে শুরু করে এবং এক পর্যায়ে টাকের সৃষ্টি হয়। চুল ঝরে পড়ার প্রকৃত কারন বিস্তারিত জানতেঃ soukhin.com.bd/?p=5131
বিভিন্ন বয়সের নারী ও পুরুষ বর্তমানে চুল পড়ার সমস্যায় আক্রান্ত। টিনএজার থেকে মধ্যবয়সী অনেকেরই চুল ঝরে যাচ্ছে। ছেলেদের মাথার সামনের দিকে চুল ফাঁকা হয়ে টাক দেখা দিচ্ছে। মেয়েদের বেণী চিকন হয়ে যাচ্ছে। যেহেতু বর্তমানে অনেকেরই চুল পড়ার সমস্যা রয়েছে, তাই নানা রকম বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে মিডিয়াগুলোতে। এসব পণ্য বিজ্ঞানসম্মত নয় এবং কেউ উপকৃত হয়েছেন বলে জানা যায়নি। ঠিক একই অভিযোগ রয়েছে রঙ ফর্সাকারী ক্রিমের প্রচারের ব্যাপারে। চুল পড়তে থাকলে এর কারণ নির্ণয় ও প্রতিকার করা প্রয়োজন। বর্তমানে চুল পড়ার চিকিৎসা অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তবে প্রথমে চুল পড়ার কারণ নির্ণয় করা প্রয়োজন। চুল পড়ার নানা কারণের মধ্যে রয়েছে খুশকি ও মাথায় ত্বকের নানা সংক্রমণ ও প্রদাহ, অতিরিক্ত ধূলা-ময়লার কাজ করা, চুল সঠিকভাবে পরিষ্কার না রাখা, হরমোনের তারতম্য, সঠিকভাবে চুলের পরিচর্যা না করা, সুষম খাদ্য গ্রহণ না করা, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, সময় মতো ও পর্যাপ্ত না ঘুমানো এবং নানা কেমিক্যালের ব্যবহার। যেমন জেল, স্প্রে, চুল সোজা বা কোঁকড়ানোর জন্য হিট দেয়া, রঙ করা ও বংশগত।