সব কটা জানালা খুলে দাও না/আমি গাইবো, আমি গাইবো বিজয়ের গান।’ ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে দীর্ঘ ৯ মাস অবরুদ্ধ বাংলার সব অর্গল খুলেছিল একাত্তরের এই দিনে। উন্মুক্ত সুনীল আকাশের মুক্ত বাতাসে মুক্তির নিঃশ্বাস নিয়েছিল সাড়ে সাত কোটি বাঙালি। কালের পরিক্রমায় আজ সেই মহান বিজয় দিবস। আজকের প্রভাতে পূর্ব দিগন্তে উদিত সূর্য লাখো হরিদাসীর মুছে যাওয়া সিঁথির সিঁদুরে রাঙা। মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির গৌরবময় বিজয়ের ৪৩ বছর পূর্ণ হলো আজ। জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে গৌরবের মহিমায় সমুন্নত অনন্য এই দিনটি। এমন একটি দিনের প্রতীক্ষায় এ দেশের মানুষ প্রহরের পর প্রহর গুনেছে, লড়াই করেছে জীবন বাজি রেখে, ঝরিয়েছে বুকের তাজা রক্ত। অবশেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাসের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধে অর্জন করে চূড়ান্ত বিজয়। তখনকার রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) দখলদার পাক-হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার রক্তিম সূর্যালোকে উদ্ভাসিত হয়েছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। দেশের সর্বত্র আজ আনন্দ-উৎসব, শোক ও শ্রদ্ধার এক অপূর্ব সম্মিলনে পালিত হবে জাতীয় জীবনের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ এই দিন, ৪৪তম বিজয় দিবস। এ বছর দিবসটির তাৎপর্য অন্য বছরের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা শুরু হয়েছে কুখ্যাত কসাই কাদের মোল্লার ফাঁসির মাধ্যমে। একদিকে জাতির ললাটের কলঙ্ক তিলক মোচনের যাত্রা শুরু; অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী শক্তি আওয়ামী লীগসহ মহাজোট সরকারের নেয়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রক্ষা, সঠিক ইতিহাস প্রণয়ন ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যথাযথ মর্যাদা দেয়ার নানা উদ্যোগে নতুন আশা জেগেছে স্বাধীনতার পক্ষের মানুষের মনে।