কত গুলো গাড়ির কাগজ-পত্র ঠিক আছে?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call
যানজট কমানোর উপায় এখানে দেখুন
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

এত বিপুলসংখ্যক মানুষকে সামাল দিতে ঢাকা আজ টালমাটাল। যেখানে-সেখানে পার্কিং আর গণপরিবহনের যেমন খুশি তেমন চলার ফলে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা ঢাকাকে পরিণত করেছে যানজটের নগরীতে। একটি আদর্শ নগরীর ২৫ ভাগ রাস্তা প্রয়োজন হলেও এখানে আছে মাত্র ৮ ভাগ। তার ওপর আবার ঢাকার অধিকাংশ ফুটপাথ দখল করে দোকান বসানোর কারণে পথচারীরা রাস্তা দিয়ে হাঁটেন। এছাড়া যানজটের সময় অনেক মোটরকারও ফুটপাথ দিয়ে চলতে দেখা যায়।

পরিকল্পনা ছাড়া যখন-তখন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে ঢাকা যেন পরিণত হয়েছে জনদুর্ভোগের নগরীতে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ঢাকার ভবিষ্যৎ কি হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকার সমস্যা খুব সহজেই সমাধান সম্ভব নয়। তবে একটু সচেতন হলেই সুযোগ রয়েছে পরিকল্পিত নগরী হিসেবে ঢাকাকে গঠন করার। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর উদাসীনতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। পরিকল্পনা ছাড়াই গড়ে উঠেছে রাজধানী শহর ঢাকা। এদিকে ঢাকায় নেই কোনো খেলার মাঠ, পর্যাপ্ত রাস্তা কিংবা ভালো স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা। বৃষ্টি হলেই পানি জমে ঢাকার রাস্তাগুলো সঙ্কীর্ণ হয়ে যায়। অন্যদিকে জন্মলগ্ন থেকে আজও নির্মিত হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। পরিকল্পনা না থাকায় অনেক ভবনের মালিক রাজধানীর অনেক রাস্তা বন্ধ করে দিয়েও তৈরি করেছেন তাঁদের বাড়ি।

এমন অবস্থার জন্য কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে অযান্ত্রিক যানবাহনের কোনো পরিসংখ্যান বিআরটিএর কাছে না থাকলেও ঢাকার রাস্তার সিংহভাগ দখল করে রাখে মানবচালিত রিকশা-ভ্যান, ঠেলাগাড়ি ইত্যাদি যানবাহন। প্রায়ই দেখা যায় একটি রিকশার সঙ্গে আরেকটি রিকশা লেগে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। আবার অনেক সময় দেখা যায় দুই রিকশাচালক রিকশা থামিয়ে মারামারি করছেন; এদিকে পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি আলাদা লেন থাকত, তাহলে রিকশা তার নির্দিষ্ট লেনে চলাচল করত। এমনটি আর দেখা যেত না যে, রিকশার পেছনে গাড়িও চলছে খুব ধীরে, হর্ন দিতে দিতে সাইড পেতে সময় ব্যয় হতো না।

অন্যদিকে দেখা যায় গণপরিবহনের গাড়ি এসে একটি স্টপেজে যাত্রী ওঠানামা করছে, পেছনে দাঁড়িয়ে আছে প্রাইভেটকারসহ অন্য সব গাড়ি। এমন চিত্র শহরের হলেও শহরের একটি অংশে কিন্তু আলাদা লেনে চলাচলের সুফল পাওয়া যাচ্ছে। দেখা গেছে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের প্রায় সব রাস্তায় রিকশার জন্য আলাদা লেন তৈরি করেছে সেনাবাহিনী কর্তৃপক্ষ। আলাদা লেনে চলাচল এবং সুশৃঙ্খলভাবে চলাচলের কারণে সেখানে যানবাহনের প্রাচুর্য থাকলেও নেই যানজট। আপাতত শুধু যদি রিকশার জন্য আলাদা লেন এবং পর্যায়ক্রমে গণপরিবহন ও দ্রুতগামী যানের জন্য আলাদা আলাদা লেন তৈরি করা হয়, তাহলে ঢাকার যানজট কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন অনেকেই।

নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও উন্নয়নকর্মী এবং পরিবহন ব্যবস্থাবিষয়ক গবেষক ইবনুল সাইদ রানা ভোরের পাতাকে বলেন, ‘ঢাকার যানজট কমাতে কর্তৃপক্ষ যখন ভিআইপি রাস্তায় রিকশা নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল, আমরা এর পক্ষে ছিলাম না। তার কারণ হলো রাজধানীর এমন অনেক রাস্তা রয়েছে যেগুলো পার হয়ে বাসায় যেতে হয় অনেক শহরবাসীকে, যাঁদের ব্যক্তিগত গাড়ি নেই কিংবা বিকল্প যানবাহন ভাড়া করার সামর্থ্যও নেই অনেকেরই। প্রান্তিক মানুষ সরকারি সিদ্ধান্তে আরও বিপদে পড়ল। এরকম কেন হবে? যার খেসারত সাধারণ মানুষকে দিতে হবে। আমাদের কথা হলো, রিকশা কিংবা অযান্ত্রিক পরিবহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ জরুরি। তবে তা বন্ধ করতে হবে কেন?

ভিআইপি রাস্তায় রিকশা বন্ধ করার পরও কিন্তু রাজধানীর যানজট কমেনি বরং বেড়েছে। সব রাস্তায় রিকশা আসতে না পারার কারণে সেসব রাস্তায় বেশি জট হচ্ছে। রানা ভোরের পাতাকে বলেন, ‘সময় এসছে বিষয়টি এখন কর্তৃপক্ষকে ভাবতেই হবে। কোনো কিছুকে বাদ দিয়ে নয় বরং আলাদা লেন করে সব যানবাহনকে নিয়ন্ত্রণ করে সমাধান করতে হবে ঢাকার ভয়াবহ যানজট।’

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ