আত্মা সম্পর্কে ইসলাম বলে আত্মা দেহকে সঞ্জাবিত করে তোলে এবং দেহে গতির সঞ্চার করে।দেহ ছাড়াও আত্মা থাকতে পারে তবে আত্মা ছাড়া দেহ অচল। মানবদেহে আত্মার নির্দেশ পালনের হাতিয়ারস্বরুপ। আত্মার দুটি প্রবৃত্তি রয়েছে।একটি সুপ্রবৃত্তি যা সৎ ও ভালো আর অন্যটি কুপ্রবৃত্তি যা খারাপ। আল্লাহর গভীর ধ্যান ও প্রেমই হচ্ছে আত্মার। আল্লাহর জিকির ও স্মরণ ছাড়া এই আত্মার কিছুই থাকে না। ইসলামে ভূত বা পেরত বলতে কিছুই নেই তবে জ্বীন জাতি আছে।
হিন্দুদের মৃত দেহ পোড়ানোর সময় পোড়া কম বেশি হলে আত্মা দেও, ভূত রুপে ঘুরে বেড়ায়; এই কথাটা ইসলাম সমর্থন করেনা।
কেননা, আত্মা হলো কোনো জীবের অংশ যা কোনো শরীর নয়। দেহ যখন জীবিত থাকে, তখন এর ভেতরে একটি আত্মা থাকে। আর মৃত্যুর সময় আত্মা দেহ থেকে বেরিয়ে যায়।
আল্লাহ বলেন, তারা তোমাকে রুহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বলে দাও, রুহ আমার রবের হুকুমঘটিত বিষয়। কিন্তু তোমরা সামান্য জ্ঞানই লাভ করেছ। (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৮৫)।
➤ খ্রিস্ট ধর্ম মতে আত্মার অবস্থানঃ খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করে স্বর্গে ও নরকে আত্মারা বসবাস করে।
➤ হিন্দু ধর্ম মতে আত্মার অবস্থানঃ হিন্দু বিশ্বাস মতে আত্মা হলো চিৎকণা, যা মানুষ, পশু, উদ্ভিদ, জল, স্থল, অন্তরীক্ষ সর্বত্র পরিব্যাপ্ত।
কিন্তু, আত্মা যদি তার জীবিত অবস্হায় ধর্ম বা পাপ অর্জন করে, তখন সে তার কর্মফল ভোগ করার জন্য স্বর্গ অথবা নরক ভোগ করে, অথবা, যোণী ভ্রমন করে পশু যোণী বা উদ্ভিদ যোণী প্রাপ্ত হয়, কিছু সময়ের জন্য। ঐ সময়ে সে তার পূর্ব জন্ম-অর্জিত পূণ্য বা পাপ বিনষ্ট করে আবার পবিত্র হয়ে যায়, এবং পরমাত্মার কাছে গিয়ে তার সহিত বিলীন হয়ে যায়। পরমাত্মা, দেবাত্মা, মানবআত্মা অর্থাৎ জীবাত্মা, প্রেতাত্মা 'ভূত' এই চারি প্রকার আত্মার মধ্যে দেবাত্মা হল পরমাত্মা দ্বারা নিয়োজিত শক্তি।
➤ ইসলাম ধর্মে মতে আত্মা ইল্লিয়্যিন ও সিজ্জিনে অবস্থান করে। আত্মাকে আরবিতে "রুহ" বলে।
আল্লাহ বলেন, কখনো নয়, নিশ্চয় পূণ্যবানদের আমলনামা ইল্লিয়ইয়্যীনে। (সুরা মুতাফিফফীন : ১৮)।
ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী কোনো মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তিনি যদি ইমানদার, সৎকর্মশীল হয় তাহলে তার রুহ ‘ইল্লিয়্যিন’ নামক জায়গায় অবস্থান করে বলে কোরআনে কারিমে বর্নিত রয়েছে। তাতে তারা কিয়ামত পর্যন্ত পরম শান্তিতে অবস্থান করবে। হাশরের দিন বিচারকার্য শেষে তাদের জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে।
আল্লাহ বলেন, কখনো না, পাপাচারীদের আমলনামা তো সিজ্জীনে আছে। (সুরা মুতাফিফফীন : ৭)।
আর অবিশ্বাসী ও পাপী লোকদের রুহ ‘সিজ্জিন’ নামক জায়গায় অবস্থান করে। এটি একটি বন্দিখানা, এতে তারা হাশরের মাঠে বিচারকার্য শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত অশান্তি ভোগ করতে থাকবে। বিচারকার্য শেষে তাদের জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।