শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

“তোমরা তোমাদের নাফসকে হত্যা করোনা। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু” (সূরা নিসাঃ ২৯)। 

“তিনি তোমাদের জন্য হালাল করে দেন ভাল ও উওম বস্তু আর হারাম করে দেন খারাপ ও ক্ষতিকর নোংরা (খাবাইস) বস্তু।”

(আল-আরাফ: ১৫৭)

আর ধুমপান নিশ্চই খাবাইস এর অন্তর্ভূক্ত, তাই তা পান করা বৈধ (হালাল) নয়।না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু” (সূরা নিসাঃ ২৯)। 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

 ধূমপান করা হারাম। অনুরূপভাবে হুক্কা টানাও হারাম। ধূমপান হারাম হওয়ার দলীল সমূহ নিম্নে বর্ণনা  করা হলোঃ- ১. মহান আল্লাহ্  বলেন,

وَلاَ تَقْتُلُوْا أَنْفُسَكُمْ إِنَّ اللهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيْمًا (النساء: ২৯)

অর্থাঃ “তোমরা তোমাদের নাফসকে হত্যা করোনা। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু” (সূরা নিসাঃ ২৯)। ২. আল্লাহ্ তা’আলা আরো বলেন,

وَلاَ تُلْقُوْا بِِأَيْدِيْكُمْ  إِِلَى التَّهْلُكَةِ (البقرة: ১৯৫)

অর্থাৎ “তোমরা নিজ হাতে নিজেকে ধ্বংসে পতিত করোনা”(সূরা বাক্বারাহ, ১৯৫)। চিকিৎসাশাস্ত্র প্রমাণ করেছে যে, ধূমপান একটি ক্ষতিকর বস্তু। আর যে সকল বস্তু স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর, ইসলামী বিধান তাকে হারাম করেছে। যেমন আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন,

{وَلاَ تُؤْتُوْا السُّفَهَاءَ أَمْوَالَكُمُ الَّتِي جَعَلَ اللهُ لَكُمْ قِِيَامًا} (النساء:৫)

অর্থাৎ “তোমরা তোমাদের সম্পদ নির্বোধদেরকে প্রদান করোনা। যে সম্পদকে আল্লাহ্ পাক তোমাদের জীবন-যাত্রার অবলম্বন করেছেন”(সূরা নিসাঃ ৫)।

উপরোক্ত আয়াতে ধূমপায়ী নির্বোধদেরকে আমাদের সম্পদ থেকে প্রদান করতে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা তারা সম্পদের অপচয় করবে, আর বিপর্যয় সৃষ্টি করবে।  তাহলে নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে যে, হুক্কা টানায় ও ধূমপানে সম্পদের অপচয় হয়। আর অত্র আয়াত অপচয়, অপব্যয় ও বিপর্যয় সৃষ্টি না করার প্রমাণ বহন করে। এছাড়াও রাসূলুল্লা-হ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহি অ-সাল্লাম) সম্পদ বিনষ্ট করতে নিষেধ করেছেন। ধূমপানে সম্পদের  অপচয় ও অপব্যয় হয়। আর এ অপব্যয়ই হচ্ছে সম্পদ বিনষ্ট করা। রাসূলুল্লা-হ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহি অ-সাল্লাম)  বলেছেন,       “لاَضَرَرَ وَلاَضِِرَارَ”

অর্থা “তোমরা নিজেদের ক্ষতিসাধন করোনা এবং অপরের ক্ষতি সাধনও করোনা”। ধূমপান এমনই এক বিষয় যা গ্রহণের কারণে নিজের ক্ষতির সাথে সাথেই পার্শ্ববর্তী মানুষের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া ধূমপায়ী ধূমপানের মাধ্যমে সম্পদ হারিয়ে নিজেকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায় এবং নিঃস্ব অবস্থায় দুনিয়াতে বসবাস করে। অতএব যে নিজেকে ধূমপানে অভ্যস্ত করলো, সে ধনবান থেকে নিঃস্বে পরিণত হলো।    (মুফতী শায়খ মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উসাইমীন  রাহিঃ)

ধূমপানের  অপকারিতা সম্পর্কে

আমরা যা জানি

১- ধূমপান একটি অপবিত্র, দুর্গন্ধময় ও ক্ষতিকারক বস্তু।

২- ধূমপান ক্যান্সার, যক্ষ্মা প্রভৃতির মত ধ্বংসাÍক রোগ সৃষ্টির অন্যতম  কারণ।

৩- ধূমপায়ী স্বয়ং নিজের নাফসকে ধ্বংস করে দেয়।

৪- ধূমপান নিজের ক্ষতির সাথে-সাথে পার্শ্ববর্তী লোকেরও কষ্টের  কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

৫- ধূমপান করার অর্থই হচ্ছে নেশাদার বা হারাম জিনিষ খেয়ে মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করা, ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের নাফসকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে সহযোগিতা করা আর অর্থের অপচয় করা। এ সমস্ত কাজের প্রত্যেকটাই শয়তানী কাজের অন্তর্ভুক্ত।

৬- ধূমপানকারী নিজে প্রকাশ্যভাবে গোনাহ করে থাকে আর সে এ গুনাহের কাজের  বিস্তার ঘটিয়ে থাকে। সেহেতু ধূমপানের গোনাহ বড় ধরনের গোনাহ।  অতএব ধূমপানকারীকে অতিশীঘ্রই  তাওবা করা উচিত।

৭- ধূমপানকারী সম্পদ ধ্বংসকারী , যাকে আল্লাহ্ মোটেই  পছন্দ করেন না।

৮- ধূমপান মানুষের হৃদযন্ত্রকে অকেজো করে ফেলে। আর শরীরের  শক্তিকে দুর্বল করে দেয়।

৯- এর দ্বারা দাঁতগুলো হলুদ হয়ে যায়, ঠোঁট দুটি কালো হয়ে যায়, চেহারার লাবন্য নষ্ট হয়ে যায়, দৃষ্টিশক্তি কমে যায় আর স্নায়ু  দুর্বলতা দেখা দেয় ইত্যাদি।

১০-এর দ্বারা কফ, কাশি এবং বক্ষব্যাধির সৃষ্টি হয়।

১১-এর কারণে যক্ষ্মা ও হৃদ রোগ হয়। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুও ঘটে।

১২-খাবারে রুচি নষ্ট করে ফেলে আর হজমে ব্যাঘাত ঘটায়।

১৩-এর দ্বারা রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয় আর হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যাবলীতে গোলযোগ দেখা দেয়।

১৪-সুরুচিশীল লোকদের নিকট ধূমপান একটি অপবিত্র ও ঘৃণিত বস্তু বলে গণ্য।

১৫-ধূমপান একটি নেশাদার বস্তু যা পরিষ্কার হারাম।

১৬-ধূমপান একটা দুর্গন্ধময় বস্তু। যারা সিগারেট খায়না তারা এর দ্বারা খুবই কষ্ট পায়,

অপরদিকে সম্মানিত ফেরেশতাকুলও খুবই কষ্ট পান।

১৭- এটা দ্বীন-দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য বড় ক্ষতিকর।

১৮- বর্তমান বড় বড় দেশগুলি কঠোরভাবে ধূমপান বিরোধী অভিযান চালাচ্ছে। সিগারেটের    মোড়কে লেখা হচ্ছেঃ ‘ধূমপানে বিষপান’, ‘ধূমপান স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর’ ইত্যাদি।

২০- এর ফলে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়।

২১-ধূমপানের বিজ্ঞাপন যেন বলে,‘আপনার ফুলদানী হোক ছাইদানী’।

২২-ধূমপানের বিজ্ঞাপন স্বাস্থ্য ও সম্পদ নষ্টের বিজ্ঞাপন।

২৩-ধূমপান ইসলামী শরী‘য়াত ও সুস্থ বিবেকের দৃষ্টিতে হারাম। অতএব ধূমপানকারীর সংগ    বর্জন করুন আর মহান আল্লাহর নিকট তাওবা করুন।

২৪-ধূমপান করার আগে ভেবে দেখুন- এটা হারাম না হালাল? উপকারী না ধ্বংসকারী? পবিত্র না অপবিত্র? চিন্তা করলে অবশ্যই জানতে পারবেন যে, এটা হারাম, ক্ষতিকর এবং অপবিত্র ।

২৫-বাহ্যিকভাবে ধূমপানের মাধ্যমে সমাজের লোকদেরকে ক্ষতিগ্র¯ত হওয়ার দিকে  নিমন্ত্রণ জানানো হয়।

২৬-মোট কথা ‘একজন ধূমপায়ী’ তার ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী, পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন এবং

সুশীল সমাজের নিকট-সর্বোপরি মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নিকট অর্থ অপচয়কারী,

বদ অভ্যাসের দাস ও হারাম খোর হিসাবে পরিচিত।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

আপনি এখানে বিস্তারিত দেখুন http://www.jamiyat.org.bd/archives/3684

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

আল-কুরআনের আলোকে ধুমপান: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন- “তিনি তোমাদের জন্য হালাল করে দেন ভাল ও উওম বস্তু আর হারাম করে দেন খারাপ ও ক্ষতিকর নোংরা (খাবাইস) বস্তু।” (আল-আরাফ: ১৫৭) আর ধুমপান নিশ্চই খাবাইস এর অন্তর্ভূক্ত, তাই তা পান করা বৈধ (হালাল) নয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন- “তোমরা নিজেদের জীবন ধ্বংসের সম্মূখীন করোনা।” (আল-বাকারা: ১৯৫) এ আয়াতের দাবিতেও ধুমপান নিষেধ।কেননা ধুমপানের কারনে অনেক জীবন বিধংসী রোগ ব্যাধী হয়ে থাকে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মদ ও জুয়া হারাম করতে গিয়ে ইরশাদ করেন- “তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দিন, উভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ।আর তার মধ্যে মানুষের উপকারিতাও আছে। তবে এগুলোর পাপ উপকারের চেয়ে বড়।” (আল-বাকারা: ২১৯) আল্লাহ তআলার এ বানী দ্বারা বুঝে আসে মদ জুয়ার মধ্যে উপকারিতা থাকা সত্তেও তা হারাম করেছেন। তাহলে ধুমপান তো মদ জুয়ার চেয়েও জঘন্য।কারন তাতে কোন ধবনের উপকার নেই।বরং ১০০ ভাগই ক্ষতি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জাহান্নামিদের খাবারের বর্ননা করতে গিয়ে ইরশাদ করেন- “এতা তাদের পুষ্টিও যোগাবেনা ও ক্ষুধা নিবারণ করবেনা।” (আল-গাশিয়াহ: ০৭) ধুমপানের মধ্যে এ বৈশিষ্টই রয়েছে যে তা পান কারির পুষ্টিও যোগায়না,ক্ষুধাও নিবারণ করেনা। ধুমপানের তুলনা জাহান্নামের খাবারের সাথই তুলনা করা যায়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন- “তোমরা অপচয় কর না। অপচয়কারিরা শয়তানের ভাই।” (আল-ইসরা: ২৭) ধুমপান একটি অপচয়। অনেক এমন অপচয় আছে যাতে মানুষের লাভ-ক্ষতি কিছুই নেই।এণ্ডলো সকলের কাছে অন্যায় ও সর্বসম্মতভাবে তা অপচয় বলে গণ্য। কিন্তু ধুমপান এমন একটি অপচয় যাতে মানুষের কোন লাভ নেই বরং ক্ষতিই বেশি। হাদীসের আলোকে ধুমপান: রাসূলে করীম (সা:) বলেন:- “আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তোমাদের তিনটা বিযয় ঘৃণা করেন। ১)ভিত্তিহীন ও সনদ-সূত্রবিহীন কথা-বার্তা। ২) অধিকহারে প্রশ্ন করা। ৩)সম্পদ নষ্ট করা।” (বুখারী ও মুসলিম) ধুমপানকারী ধুমপান করে সম্পদ নষ্ট করে তাতে কারো কোন দ্বি- মত নেই। রাসূলে করীম (সা:) বলেন:- “যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।” (বুখারী) ধুমপানকারী তার ধুমপানের দ্বারা পরিবার-পরিজন, সহযাত্রী, বন্ধু- বান্ধব ও আশে পাশের লোকজনকে কষ্ট দিয়ে থাকে। অনেকে নীরবে কষ্ট সহ্য করে মনে মনে ধুমপানকারীকে অভিশাপ দেয়। আবার দু একজন প্রতিবাদ করে বিব্রতকর অবস্হায় পরে যান।চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় এ কথা প্রমানিত যে ধুমপানকারীর প্রতিবেশি শারিরিকভাবে সমান ক্ষতিগ্রস্হ হন যতটা ধুমপানকারির নিজের হয়ে থাকে। রাসূলে করীম (সা:) বলেন:- “হালাল স্পষ্ট ও হারাম স্পষ্ট। এ দুইয়ের মাঝে আছে সন্দেহজনক বিষয়াবলী। (তা হালাল না হারাম) অনেক মানুষই জানেনা। যে ব্যক্তি এ সন্দেহজনক বিষয়াবলী পরিহার করল, সে তার উর্ম ও স্বাস্হ রক্ষা করল। আর যে ব্যক্তি এ সন্দেহজনক বিষয়াবলীতে লিপ্ত হল সে প্রকারান্তরে হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে গেল। (বুখারী ও মুসলিম) তাই যারা ইসলামের দৃষ্টিতে ধুমপান নিষিদ্ধ হওয়ার কোন প্রমান পাচ্ছেন না তাদের কমপক্ষে এ হাদীসটির দিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহবান জানাচ্ছি। নবী করীম (সা:) এরশাদ করেন:- “যে সকল কথা ও কাজ মানুষের কোন উপকারে আসেনা, তা পরিহার করা তার ইসলামের সৌন্দর্য।” (মুসলিম) আমরা সকলেই স্বীকার করি যে ধুমপান কোন উপকারে আসেনা বরং ক্ষতিই করে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ