মানুষের ঘামের দুর্গন্ধ থেকে বাচবার উপায় কি ?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ প্রতিরোধে করনীয়ঃ ০১. আর্ম পিট- আর্ম পিট বা বগলে এপোক্রাইন গ্ল্যান্ড অনেক বেশি থাকে। ফলে ঘামের উৎপত্তি এখানে অনেক বেশি। • আর্ম পিট পরিষ্কার রাখুন – প্রতিদিন anti-bacterial সাবান দিয়ে পরিষ্কার করুন। এতে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমন কম হবে আর ঘামও কম হবে। ফাইনাল ফলাফল শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ কম হবে। • আর্ম পিটের লোম পরিষ্কার করুন – বগলের লোম জমে থাকা ঘামকে বাষ্পীভূত হতে দেয় না, ব্যাকটেরিয়া অনেক সময় ধরে দূর্গন্ধ তৈরি করে। তাই নিয়মিত আর্ম পিট ওয়াক্স করুন। • diodarent ব্যবহার – diodarent ত্বককে আরও বেশি এসিডিক করে তোলে, যা ব্যাকটেরিয়ার জন্য অগ্রহণযোগ্য অবস্থা। Antiperspirant গ্লান্ডের sweating কার্যকারিতাকে বন্ধ করে দেয় ফলে শরীরে কম ঘাম হয়। ০২. গরম পানি দিয়ে গোসল করুন – প্রতিদিন অন্তত একবার গোসল করুন। মনে রাখবেন গরম পানি শরীরে থাকা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে আর যদি আবহাওয়া গরম থাকে তাহলে চেষ্টা করবেন কয়েকবার গোসল করে নিতে। ০৩. ন্যাচারাল ফাইবার যুক্ত কাপড় পরিধান করুন – সিল্ক, সুতি জাতীয় কাপড় ত্বককে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে দেয়। ফলে ঘাম সহজে বাস্পায়িত হতে পারে। ০৪. ঘামযুক্ত পায়ের ট্রিটমেন্ট – পায়ে ঘামের দুর্গন্ধ থাকলে জুতা খোলার সঙ্গে সঙ্গে সবার সামনে নিজেকে কি বিব্রতকর অবস্থাতেই না পড়তে হয়। • পায়ের তালুতে গরম পানির ছোঁয়া – আগেই বলেছি গরম পানি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। তাই প্রতিদিন অন্তত একবার হালকা গরম পানি দিয়ে পা ধুয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন। • মোজা – মোজার কাপড় টা এমন হওয়া উচিত যেন বাতাস এর ভেতর দিয়ে আসা যাওয়া করতে পারে। উল আর ম্যানমেড ফাইবারের সংমিশ্রণে তৈরি মোজাই উৎকৃষ্ট। প্রতিদিন পরিষ্কার ভাবে ধোয়া মোজা পরবেন। • জুতা – চামড়ার জুতা পায়ের ঘাম বাষ্পীভূত হতে সাহায্য করে। পর পর দুইদিন একই জুতা পরবেন না, কারণ জুতার ভেতরের ঘাম শুকানোর জন্য এক রাত যথেষ্ট না। ০৫. লেবু এবং মধু – লেবুর সাথে মধুর সংমিশ্রণ ঘামের দুর্গন্ধ প্রতিরোধের অন্যতম প্রধান ঘরোয়া উপায়। খুবই সিম্পল ,একটি বাটিতে হালকা গরম পানি নিন, তাতে ২ টেবিল চামচ মধু আর ৩ টেবিল চামচ লেবুর রস নিন। তারপর আপনার যেসব স্থান ঘামে সে সব জায়গায় এই সলিউশন দিয়ে রিন্স করে নিন। তারপর শুকনো তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন। লেবু শরীরে ঘামের পরিমান কমিয়ে আনে। ০৬. আপনি শুনে হয়ত অবাক হবেন যে ভিনেগার অতিরিক্ত ঘামের পরিমাণ অনেক কমিয়ে আনে। রাতে ঘুমানোর আগে ভিনেগার আপনার আর্ম পিটে লাগিয়ে ঘুমান আর সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত করতে থাকলে আস্তে আস্তে আপনি ঘামের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন। ০৭. গরম পানির সাথে নিম এক্সট্রাকট- নিম এক্সট্রাকট একটি শক্তিশালী প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারি। যা শরীরের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। একটি বাটিতে ফুটন্ত গরম পানি নিয়ে তাতে কিছু নিমের পাতা ছেড়ে দিন। তারপর অপেক্ষা করুন ২০ মিনিট। এই কয় মিনিটে নিম পাতা থেকে সমস্ত নির্যাস বের হয়ে যাবে আর পানিও একটু ঠাণ্ডা হয়ে আসবে। এবার শুকনো তোয়ালে এই পানিতে ডুবিয়ে আপনার যেসব স্থান ঘামে সেসব স্থান মুছে নিন। ০৮. টি ট্রি অয়েল- যদিও এটা আমাদের দেশে সহজলভ্য নয় তবুও কেও যদি পেয়ে থাকেন তবে ঘামের দুর্গন্ধ সারাবার কাজে ব্যবহার করতে পারেন। টি ট্রি অয়েল ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার জন্য উপকারী। একটি স্প্রে বোতলে পানি ভরুন তারপর এর সাথে ৩ ফোটা অয়েল মিশান। প্রতিদিন গোসল করার আগে ব্যবহার করুন। ০৯. রোজ ওয়াটার বা মিনট বাথ – গোসল করার আগে বালতিতে কিছু পুদিনা পাতা বা কয়েক ফোঁটা গোলাপ পানি দিন। তারপর ঐ পানি দিয়ে গোসল করুন। এতে তাৎক্ষনিকভাবে আপনার শরীর dioderize হবে। ১০. সব সময় নিজেকে শুকনো রাখার চেষ্টা করুন। গোসল করার পর ভালো ভাবে শরীর শুকিয়ে ভালো মানের diodarent ব্যবহার করুন। ১১. শশাতে পানির ভাগ বেশি থাকে যা শরীরের গন্ধ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন একটি করে শশা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ১২.ডায়টেশিয়ানের মতে সালফিউরিক সম্মৃধ খাবার যেমন ব্রকলি, বাধাকপি, ফুলকপি পরিমাণে কম খেতে হবে। কারণ এগুলোতে মিনারেল সালফার থাকে যা গন্ধযুক্ত গ্যাস আমাদের ত্বকের সাহায্যে নির্গত করে। তাহলে কিভাবে শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ দূর করবেন এই ব্যাপারে আর কোন সংশয় থাকার কথা না। কারণ উপরের সাধারন প্রাকৃতিক উপায় আর টিপস আপনাকে মুক্তি দিবে সকল বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে আর আপনিও থাকবেন প্রতিনিয়ত ক্লিন, ফ্রেশ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
MHR

Call

ঘাম হওয়ার কারণ ও করণীয় মামুনুর রশীদ শিশির, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমঃ গরমের সময় ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। তবে বেশি ঘাম হলে নানারকম সমস্যা হতে পারে। ঘাম শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি। গরমে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে তা স্বাভাবিক রাখতে ঘাম হয়। এছাড়াও ঘামের সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন বর্জ্য পদার্থ বেরিয়ে যায়। গরমের দিনে ঘাম হওয়া অতি সাধারণ একটি বিষয়। তবে অতিরিক্ত ঘামের কারণে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঘামের কারণ এবং এর বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচার উপায় জানালেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ কামরুল হাসান। তিনি বলেন, “মানুষের শরীরে অ্যাক্রিন ও অ্যাপোক্রিন গ্ল্যান্ড নামক দুইধরনের ঘামগ্রন্থি থাকে। রোদের কারণে শরীরের তামপাত্রা বেড়ে যায়। তাই তাপমাত্রা স্বাভাবিক করে আনার জন্য ঘাম হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন বিষাক্ত উপাদান বের করে দেওয়ার মাধ্যমে শরীরের ‘প্রটেকটিভ মেকানিজম’ হিসেবেও কাজ করে ঘাম।” ঘাম হওয়ার আরও কারণ সম্পর্কে ডা. কামরুল হাসান বলেন, “গরম ছাড়াও পরিশ্রম, উত্তেজনা, দুশ্চিন্তা, ভয়, রাগ ইত্যাদি কারণেও ঘাম হতে পারে। ঠাণ্ডা পরিবেশেও অনেকের হাত ও পায়ের তালু ঘামার সমস্যা দেখা যায়। এ ধরণের রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই থাইরয়েড গ্রন্থি কিংবা বিভিন্ন হরমোনজনিত সমস্যায় আক্রান্ত। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।” “নিউরোলজিকাল ও ঘুমের ওষুধ সেবন করলে কিংবা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণেও ঘাম হতে পারে।” বলেন ডা. কামরুল। ঘামের অপকারীতা সম্পর্কে তিনি জানান, শরীরে ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর অন্যতম মাধ্যম হল ঘাম। ঘামাচি, চুলকানি, ব্রণ ইত্যাদি তো আছেই। তাছাড়া শরীরের ক্ষতস্থানেও ঘামের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীর থেকে প্রচুর পানি বেরিয়ে যায়, ফলে পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ঘামে ভেজা পোশাক দীর্ঘ সময় পরে থাকার কারণে ছত্রাকের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শরীর ঘামে ভেজা থাকলে ত্বকে ধুলাবালি আটকে থাকার পরিমাণও বেড়ে যায়। ঘামের কিছু উপকারী দিকও আছে। এ সম্পর্কে ডা. কামরুল হাসান বলেন, “ঘামে শরীর ভেজা থাকার কারণে হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমে যায়। পাশাপাশি শরীর থেকে অতিরিক্ত লবণ বের করে দিয়ে লবণের ভারসাম্য বজায় রাখে। পরিষ্কার রাখে ত্বকের লোপকুপগুলো।” অতিরিক্ত ঘাম নিয়ন্ত্রণে করণীয়ঃ অতিরিক্ত ঘাম হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে। ফলের শরবত, গ্লুকোজ, স্যালাইন ইত্যাদি পান করাও বেশ উপকারী। তাছাড়া বাইরের গরম থেকে ঘরে ফিরে ঠাণ্ডা পানি না খেয়ে স্যালাইন বা গ্লুকোজ খাওয়ার পরামর্শ দিলেন ডা. কামরুল হাসান। চা-কফি, ভাজাপোড়া-জাতীয় খাবার যতটা সম্ভব কম খাওয়াই ভালো। গরমের মৌসুমে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপর বিশেষ নজর দিতে হবে। এক্ষেত্রে একাধিকবার গোসল করা যেতে পারে। তবে ঠাণ্ডা লেগে যাওয়ার ভয় থাকলে ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে নেওয়া যেতে পারে। গরমে বাইরে থেকে ফিরেই অতিরিক্ত ঠাণ্ডা স্থানে বসা, অতিরিক্ত ঠাণ্ডা পানীয় পান করা বা গোসল না করার পরামর্শ দেন ডা. কামরুল। তিনি বলেন, “বাইরে থেকে এসে কিছুটা সময় জিরিয়ে নিতে হবে। এতে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক হওয়ার সুযোগ পাবে। অন্যথায় ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে।” এছাড়া ঘামে ভেজা জামাকাপড় বেশিক্ষন পরে থাকা উচিত নয়। গরমের দিনে হালকা রংয়ের পোশাক বেশি আরামদায়ক। ঘামের দুর্গন্ধ এড়াতে পারফিউম ব্যবহার করা যেতে পারে। আর ঘামাচি থেকে বাঁচতে ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ