১৪২৬ বঙ্গাব্দ থেকে আশ্বিন মাস ৩১ দিনে গণনা করা হবে।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সঙ্গে জড়িত ঐতিহাসিক দিবসগুলোকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সাথে সমন্বয় করার জন্য বাংলা ক্যালেন্ডার পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন থেকে পয়লা বৈশাখসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো নির্দিষ্ট দিনে পালন হবে। নতুন বর্ষপঞ্জি অনুসারে এখন থেকে বাংলা বছরের প্রথম ৬ মাস তথা বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন ৩১ দিনে হবে। এর পূর্বে প্রথম ৫ মাস তথা বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র ৩১ দিনে পালন করা হত। এখন ফাল্গুন মাস ছাড়া বাকি ৫ মাস তথা কার্তিক, অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ ও চৈত্র ৩০ দিনে গণনা করা হবে। ফাল্গুন মাস হবে ২৯ দিনের এবং অধিবর্ষ বা লিপইয়ারের বছর ফাল্গুন মাস গণনা করা হবে ৩০ দিনে। বর্ষপঞ্জি পরিবর্তনের কাজটি করেছে বাংলা একাডেমি গবেষণা, সংকলন এবং অভিধান ও বিশ্বকোষ বিভাগ। এখন থেকে ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২৬শে মার্চ, ১৬ই ডিসেম্বর, নজরুল জয়ন্তী ও রবীন্দ্র জয়ন্তীর মত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলো বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসারে যেসব দিনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেই দিনে পালন করা হবে। ১৯৫২ খৃস্টাব্দে ভাষা আন্দোলনের সময় রফিক, জব্বার, শফি, সালাম, বরকতদের তাজা প্রাণ কেড়ে নেয়ার সেই ২১শে ফেব্রুয়ারির ঘটনা ঘটেছিলো ৮ই ফাল্গুন। যে দিনটিকে এখন সমগ্র বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। প্রায়ই দেখা যেত বছর ঘুরে সে দিনটি গিয়ে পড়ত ৯ই ফাল্গুন। অনুরুপভাবে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ছিল ১লা পৌষ। কিন্তু বাংলা পঞ্জিকায় দিনটি পড়ত ২ রা পৌষ। কিন্তু নতুন নিয়মে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির সাথে বাংলা বর্ষপঞ্জির দিন গণনার সমন্বয় করা হয়েছে। এই পরিবর্তন চালু হয়েছে ১৪২৬ বাংলা বর্ষপঞ্জির ১লা বৈশাখ থেকে। আগের নিয়মে যেহেতু প্রথম ৫ মাস ৩১ দিনেই হতো সেহেতু আশ্বিন মাস পর্যন্ত পরিবর্তন টের পাওয়া যেত না। নতুন নিয়মে প্রথম বারের মতো ৩১ দিনের আশ্বিন মাস পালন করা হয়। সেটি ছিল বুধবার, অক্টোবর ১৬, ২০১৯। বৃহস্পতিবার অক্টোবর ১৭, ২০১৯ থেকে ১লা কার্তিক গণনা শুরু হওয়ায় ঐ দিনেই নতুন ক্যালেন্ডারে প্রথম পরিবর্তন দেখা যায়। বাংলাদেশে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত বর্ষপঞ্জি সংস্কার করা হলো। নতুন করে পরিবর্তন আনার জন্য বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক শামছুজ্জামান খানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিতে ড. অজয় রায়, জামিলুর রেজা চৌধুরিসহ আরও বেশ কয়জন বিজ্ঞ সদস্য ছিলেন। প্রথম বাংলা বর্ষপঞ্জি সংস্কার হয়েছিল ভারতে বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার নের্তৃত্বে ১৯৫২ সালে। তিনি ছিলেন বাংলাদেশেরই সন্তান। পরে ১৯৫৬ সালে ড. মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বর্ষপঞ্জি সংস্কারের যেসব সুপারিশ করেন নতুন বর্ষপঞ্জি তারই আলোকে করা হয়েছে। ঐতিহাসিক মতে ১৫৫৬ সালে মোঘল সম্রাট জালালুদ্দিন মোহাম্মদ আকবর বাংলা সন প্রবর্তন করেন। খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য সভার জ্যোতির্বিদ আমির ফতেহ উল্লাহ সিরাজীর সহযোগিতায় ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে 'তারিখ-ই-ইলাহি' নামে নতুন একটি বছর গণনা পদ্ধতি চালু করেন। এটি কৃষকদের কাছে 'ফসলি সন' নামে পরিচিতি লাভ করেছিল। যা পরবর্তিতে 'বাংলা সন' বা 'বঙ্গাব্দ' নামে প্রচলিত হয়ে উঠে। ঐ সময়ে প্রচলিত রাজকীয় সন ছিল 'হিজরি সন' যা 'চন্দ্রসন' হওয়ায় প্রতি বছর একই সময় প্রজাদের নিকট হতে খাজনা আদায় সম্ভব হতো না। বাংলা সন শূণ্য থেকে শুরু হয়নি। যে বছর বাংলা সন প্রবর্তিত হয় সে বছর ছিল ৯২৩ হিজরি সন। সে অনুযায়ি সম্রাটের নির্দেশে ৯২৩ বছর বয়স নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলা সন। নতুন ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আগামী ১০০ বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি, ২৬শে মার্চ, ১৬ই ডিসেম্বর যে তারিখে ঘটেছে, ইংরেজি ক্যালেন্ডারের সঙ্গে তার কোন হেরফের হবে না।

তথ্যসূত্রঃ ১. দি ডেইলি স্টার। ২. বিবিসি বাংলা। ৩. দৈনিক যুগান্তর ও ৪. দৈনিক প্রথম আলো।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

বাংলা বর্ষ  যখন লিপইয়ার(অধিবর্ষ) হয় তখন কার্তিক মাস ৩১ দিনে হয়। এটা চার বছর পরপর হয়। 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

বাংলা সনের আশ্বিন মাস কোন ৩১ দিন হয় না।কারণ বাংলা বারোমাসের প্রথম পাঁচ মাস ৩১ দিনের হয়।যথা- বৈশাখ,জ্যৈষ্ঠ,আষাঢ়,শ্রাবণ এবং ভাদ্র মাস ৩১ দিনের হয়।বাংলা বারোমাসের ৬ষ্ঠ তম মাস আশ্বিনমাস তাই এটি কখনো ৩০ দিনের হতে পারে না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ