কৈশোর থেকে যখন কোনো মেয়ে নারীত্বে পদার্পণ করে তখন কিছু শারীরিক-মানসিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে। আর এর পেছনে রয়েছে পিটুইটারি গ্রন্থি। এ গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস অন্যান্য গ্রন্থিগুলোকে সক্রিয় ও নিয়ন্ত্রিত করে। তাই কৈশোরের শেষে পিটুইটারির পরিচালনায় থাইরয়েড, ওভারি গ্রন্থিগুলোর কার্যকলাপ শুরু হয়। ওভারির অপরিণত ডিম্বকোষগুলো এ সময় পরিণত হয়ে ওঠে এবং তারা ইসট্রোজেন নামে এক প্রকার হরমোন নিঃসৃত করে। এ হরমোনের প্রভাবে মেয়েদের মধ্যে নারীসুলভ লাবণ্য লক্ষণীয় হয়ে ওঠে এবং মেয়েদের যৌন অঙ্গাদি ঠিকভাবে গঠিত হয়।
যৌবনের শুরুতে পিটুইটারির নিয়ন্ত্রণে মাসে একবার করে একটি পরিণত ডিম্বকোষ ওভারি থেকে বেরিয়ে পড়ে। এটি ঘটে ঋতুচক্রের ১০/১৫ দিনের মধ্যে। অতঃপর গর্ভনালী বেয়ে ডিম্বকোষটি চলে যায় জরায়ুতে।
ডিম্বকোষটি বেরিয়ে যাওয়ায় ওভারিতে সৃষ্টি হয় একটি হলুদ রঙের তরল পদার্থ। এ থেকেই ‘প্রজেসটেরোন’ নামে এক প্রকার হরমোন নিঃসৃত হয়ে জরায়ুর বৃদ্ধি ও নিয়মিত মাসিকের সূত্রপাত ঘটায়।
জরায়ুর ভেতরের গায়ে শ্লেষ্মা ঝিল্লির আবরণে ‘ইসট্রোজেন’ ও ‘প্রজেসটেরোনের’ সম্মিলিত ক্রিয়া শুরু হয়। সেই ঝিল্লির বিবর্তনের ফল ঋতুস্রাব। ইসট্রোজেন ও প্রজেসটেরোনের প্রভাবেই ২৮ দিন অন্তর চক্রাকারে পরিবর্তনের ফলে হয় নিয়মিত মাসিক ঋতুস্রাব।
তবে সন্তান সম্ভবা মেয়েদের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম ঘটে। যৌন মিলনের পর পুরুষের শুক্রাণু ডিম্বকোষটির সঙ্গে মিলিত হলে ডিম্বকোষের সে অবস্থাকে বলা হয় ‘উর্বর ডিম্ব’। সাধারণত শুক্রকীট ও ডিম্বের মিলন ঘটে ফেলোপিয়ান টিউবের মধ্যে এবং সেখান থেকে উর্বর ডিম্বটি চলে যায় জরায়ুতে এবং ২৮০ দিন থাকার পর সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। এ সময়ের মধ্যে ডিম্বাশয়ে আর ডিম্ব প্রস্ত্তত হয় না। ফলে ঋতুস্রাব বন্ধ থাকে এবং সন্তান সৃষ্টির কাজ চলতে থাকে।