শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

স্বাধীন বাংলার অভ্যুদয়ের ইতিহাস বিস্তর। ইহা সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব নয়। সংক্ষেপে চেষ্টা করছি।  ১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতবর্ষ বিভক্ত হয়ে ভারত ও পাকিস্তান গঠিত হলে জাতিগত অমিল থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র ধর্মের বিচারে বর্তমানের বাংলাদেশ তৎকালীন পাকিস্তানের একটি প্রদেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। জাতিগতভাবে যে পূর্ব বাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তানির মানুষ সম্পূর্ণ ভিন্ন তা বোঝা যাগ শীঘ্রই। তৎকালীন পাকিস্তানে বাঙালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও ক্ষমতা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের হাতে। ভাষার নির্ধারণের প্রসঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মাতৃভাষার পরিবর্তে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করতে চাইলে এর বিরুদ্ধে তুমুল আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনে শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ নাম না জানা অসংখ্য ব্যক্তি। আন্দোলনের তোপে পড়ে বাংলাকেও পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। তারপরও বৈষম্য থেমে ছিল না। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক সরকার গঠনের চিন্তা করে নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিজয়ী হলেও ক্ষমতা হারাবার ভয়ে এই সরকারকে পাকিস্তানিরা বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। পাকিস্তানের সামগ্রিক গতিবিধি বুঝতে পেরে ১৯৬৬ সালে বাঙালিকে বৈষম্য হতে মুক্ত করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা দাবি পেশ করেন। এই দাবি প্রতিহত করতে পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার দায় তুলে আগরতলা মামলা দায়ের করে এবং ফাঁসি শাস্তি হিসেবে নির্ধারণ করে। এর প্রতিবাদে ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থান হয় যার মুখে আইয়ূব খান পদত্যাগ করে ইয়াহিয়া খানের নিকট ক্ষমতা দেন। বাঙালিকে শান্ত করার উদ্দেশ্যে ১৯৭০ এ নির্বাচন দিলে উক্ত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয় লাভ করে সমগ্র পাকিস্তানের ক্ষমতা লাভ করে। কিন্তু তৎকালীন সরকার ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা করতে থাকলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের ফন্দি বুঝতে পেরে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণে সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন। কিন্তু ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি মিলিটারি নিরীহ বাঙালির ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। একই রাতে দেড়টায় বা ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে গ্রেফতার হবার পূর্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এই আহবানে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি। দীর্ঘ নয় মাস দৃঢ় সংগ্রাম, ত্রিশ লক্ষ প্রাণ, এক লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম এর বিনিময়ে আমরা ১৬ই ডিসেম্বর লাভ করি চুড়ান্ত বিজয়। একে একে সকল ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ১৬ই ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে যৌথ বাহিনীর প্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং আরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজি।  মোটামুটি এটাই ছিল ইতিহাস। এর পূর্বে ব্রিটিশ শাসন, মুঘল শাসন ও নানান ইতিহাস রয়েছে যা টানা সম্ভব নয়। আপনি সম্ভব হলে এই শীর্ষক বইটি পড়ে নিন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ