কোন স্ত্রী রাগের বসে তার স্বামীকে মৌখিক ভাবে তিন বার তালাক বল্লে তালাক হবে কি না? আর্থাৎ ইসলামে কোন নারী কি পুরুষকে মৌখিক তালাক দিতে পারে?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

তালাক শব্দের অর্থ হচ্ছে বিয়ে বিচ্ছেদ। আর ইসলামি শরিয়তে তালাক নিকৃষ্ট কাজ বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে। রাসূল সা: এক হাদিসে বলেন , “তালাক হচ্ছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট হালাল কাজ।”

আর তালাক দেওয়ার ক্ষমতা শুধুমাত্র পুরুষদেরকে দেওয়া হয়েছে। নারীরা তালাক দিতে পারে না। তাই বলে নারীদের উপর অত্যাচার করা যাবে না। এ দিকে ইসলাম গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছে। নারী পুরুষের তালাক দেওয়ার ক্ষমতার মাঝে এই পার্থক্যের পেছনে অনেক হিকমত আছে। জ্ঞানী নারী ও পুরুষ সকলেই জানেন – পুরুষের তুলনায় নারীগণ চঞ্চলমতি হন। তারা খুব সহজেই কারো প্রতি খুশি হন, আবার অল্পতেই কাউকে শত্রুভাবা শুরু করেন। তাই, তারা যদি এতো সহজেই তালাক দেওয়ার অধিকারিণী হন তাহলে ভবিষ্যতে সংসারে এটা তাদের স্বামীর প্রতি বিরূপ প্রভাব ফেলবে। স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হলেই খুব সহজেই সম্পর্কছিন্ন করার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারেন।

তবে কোনো নারীর যদি সত্যিই উপযুক্ত কারণ থাকে তার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার মতো, (যেমন স্বামী ব্যভিচারী অথবা স্বামী কর্তৃক মারধরের কারণ শারীরিক ক্ষতির আশংকা থাকে, স্বামী দুঃশ্চরিত্রের হয়ে থাকে), তাহলে তার সুযোগ আছে “খোলা” করে তার কাছ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য। খোলা শব্দের অর্থ হচ্ছে পৃথক হওয়া। এটা তালাক নয়। ঐ নারী যদি পরবর্তীতে বিয়ে করতে চান তার ইদ্দত হচ্ছে এক ঋতু।

আর উপযুক্ত কারণ না থাকলে – কোনো নারী যদি অহেতুক তার স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চান – কোনোভাবেই স্বামীর সাথে থাকতে না চান – তাহলে স্বামী তার স্ত্রীর জন্য ব্যয় করা দেনমোহরের টাকা ফেরত চাইতে পারেন। তবে উপযুক্ত কারণ ছাড়া যেমন (অবৈধ সম্পর্কের কারণে অন্য পুরুষকে বিয়ে করার জন্য) কোনো নারী যদি তার স্বামীর কাছে তালাক চায় (খুলা করতে চায়) তাহলে এটা মারত্মক কবীরা গুনাহ এবং এটা মুনাফেক নারীদের একটা বৈশিষ্ট্য। সহীহ হাদীসে এদের সম্পর্কে বলা হয়েছে – এরা জান্নাতের সুগন্ধিটুকুও পাবে না (অর্থাৎ জাহান্নামে যাবে)।

ইবনু আববাস বলেন, ছাবেত ইবনে কায়েসের স্ত্রী রাসূলুল্লাহ সা: এর নিকট আসল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসূল ! আমি ছাবেত ইবনে কায়েসের দ্বীনদারী এবং চাল-চলনের নিন্দা করি না, তবে আমি মুসলিম নারী হয়ে (তার অসুন্দর হবার কারণে) তার নাফরমানী করব, এটা চাই না। তখন নবী বললেন, তুমি কি তার মোহর বাবদ বাগান ফেরত দিবে? মহিলা বলল, হ্যাঁ দিব। নবী করীম সা: ছাবেতকে বললেন, বাগান গ্রহণ কর এবং তাকে ‘খোলা’ হিসাবে এক তালাক প্রদান কর (বুখারী, মিশকাত হা : ৩২৭৪)।

এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, স্ত্রী স্বামীকে সরাসরি তালাক দিতে পারে না, তবে তালাক নেয়ার ব্যবস্থা করতে পারে। মহান আল্লাহ সবাইকে সুখি দাম্পত্য জীবন চলার তাওফিক দান করুন। আমিন

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

কোন স্ত্রী রাগের বসে তার স্বামীকে মৌখিক ভাবে তিন বার তালাক বললে তালাক হবে না! আর্থাৎ ইসলামে কোন নারী পুরুষকে মৌখিক তালাক দিতে পারে না। কেবলমাত্র তালাক স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে দিতে পারে। কোন পুরুষ যদি প্রকৃতপক্ষে অথবা ঠাট্টাচ্ছলেও তালাক দেয় যা যথার্থ বলে বিবেচিত হবে। আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি বিষয়ে প্রকৃতপক্ষে বললেও এবং ঠাট্টাচ্ছলে বললেও যথার্থ বলে বিবেচিত হবেঃ বিয়ে, তালাক ও রাজআত। (তিরমিজীঃ ১১৮৪) আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ হে নবী! তোমরা যখন তোমাদের স্ত্রীগণকে তালাক দিতে ইচ্ছে কর তাদেরকে তালাক দিও ইদ্দতের প্রতি লক্ষ রেখে এবং তোমরা ইদ্দতের হিসেব রেখো। আর তোমাদের রব আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করো। তোমারা তাদেরকে তাদের ঘড়বাড়ি থেকে বহিস্কার করো না। এবং তারাও বের হবে না, যদি না তারা লিপ্ত হয় স্পষ্ট অশ্লীলতায়। আর এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা; যে আল্লাহর সীমা লঙ্ঘন করে সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। আপনি জানেন না, হয়ত আল্লাহ এর পর কোন উপায় করে দেবেন। (সুরা তালাকঃ ১) অতঃপর তাদের ইদ্দত পূরণের কাল আসন্ন হলে তোমারা হয় যথাবিধি তাদেরকে রেখে দেবে, না হয় তাদেরকে পরিত্যাগ করবে এবং তোমাদের মধ্য থেকে দুজন ন্যায়পরায়ণ লোককে সাক্ষী রাখবে আর তোমার আল্লাহর জন্য সঠিক সাক্ষ্য দেবে। এ দ্বারা তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও শেষ দিবসের উপর ঈমান রাখে তাকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে। আর যে কেউ আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার জন্য 'উত্তরণের' পথ করে দেবেন। (সুরা তালাকঃ ২)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ