সাল শব্দের অর্থ সন, অব্দ, বছর। বাংলা, আরবি, ইংরেজি তিনভাবে সাল গণনা করা হয়। বঙ্গাব্দ হচ্ছে বাংলা সাল, যেমনঃ আজকে ৯ ফাল্গুন, ১৪২৫ বাংলা সাল। হিজরি হচ্ছে আরবি সাল, যেমনঃ আজকে ১৪ জুমাদাল আখিরা, ১৪৪০ হিজরি সাল। আর খ্রিস্টাব্দ হচ্ছে ইংরেজি সাল, যেমনঃ আজকে ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ইংরেজি সাল। হিজরি ৯৬৩ সাল বা ইংরেজি ১৫৫৬ সাল থেকে বঙ্গাব্দ বা বাংলা সাল গণনা শুরু হয়। ইংরেজি ৬২২ সাল থেকে হিজরি সাল গণনা শুরু হয়। যীশুখ্রীস্টের জন্ম থেকে যে সাল গণনা হয়ে আসছে, তাকে খ্রিস্টাব্দ বা ইংরেজি সাল বলে। সুতরাং, বঙ্গাব্দ, হিজরি বা খ্রিস্টাব্দ সবই সাল, কিন্তু সকল সাল বঙ্গাব্দ, হিজরি বা খ্রিস্টাব্দ নয়। শুধু বাংলা সাল বঙ্গাব্দ, শুধু আরবি সাল হিজরি, শুধু ইংরেজি সাল খ্রিস্টাব্দ। সূত্রঃ বাংলা ডিকশনারী। ধন্যবাদ।
‘সাল’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ Year, বাংলায় ‘বছর, বৎসর, বর্ষ’ ‘সন’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ Year; বাংলায় ‘বছর/বর্ষ’ অন্যদিকে ‘খ্রিস্টাব্দ’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ Before Christ সুতরাং খ্রিস্টাব্দের পরিবর্তে ‘সন’ বা ’সাল’ লেখা বিধেয় নয়। ‘রবীন্দ্রনাথ ১৯১৩ সালে/সনে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন’ বাক্যটির অর্থ হচ্ছে - ‘রবীন্দ্রনাথ ১৯১৩ বছরে/বর্ষে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন।’ এটি হাস্যকর নয় কি? সাল বা সন ‘খ্রিস্টাব্দ’ শব্দের বিকল্প হতে পারে না। যেমন হতে পারে না হিজরি এর বিকল্প ‘সন বা সাল’। ‘খ্রিস্টাব্দ’ এর পরিবর্তে অনেকে ‘সাল/ সন’ লিখে থাকেন। এটি শুধু ভুল নয়, হাস্যকরও বটে। ইদানীং অনেকে খ্রিস্টাব্দ অর্থে ‘সাল’ লিখে থাকেন। ‘সাল‘ শব্দের অর্থ বছর বা Year, খ্রিস্টাব্দ শব্দের অর্থ AD; সহজ বাংলায় বলা যায় যিশুখ্রিস্টের পরে। কাজেই ‘সাল‘ ও ‘খ্রিস্টাব্দ’ দুটি ভিন্নার্থক শব্দ। সুতরাং ‘খ্রিস্টাব্দ’ বুঝাতে ‘সাল‘ লেখা বিধেয় নয়। ১৪০০ বঙ্গাব্দ বুঝাতে যেমন ‘সাল‘ লেখা উচিত নয়, তেমনি উচিত নয় ১৯০০ খ্রিস্টাব্দ বুঝাতে ‘সাল‘ লেখা। লিখুন ১৪০০ বঙ্গাব্দ, ১৯০০ খ্রিস্টাব্দ, ১২০০ হিজরি, ১১০০ মঘি ইত্যাদি। বিশ্লেষণটা বহুলাংশে গজ, মিটার বা লিটারের মতো। অনেকে বলেন, সবাই লিখেন আমি লিখব না কেন - এমন বললে কিছু বলার নেই। তবে আমার মনে হয়, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ `AD' -এর বাংলা প্রতিশব্দ ‘সাল’ না-করা পর্যন্ত `AD'-এর প্রতিশব্দ ‘সাল’ হতে পারে না।