পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন।-

يَا أَيُّهَا النَّاسُ كُلُواْ مِمَّا فِي الأَرْضِ حَلاَلاً طَيِّباً وَلاَ تَتَّبِعُواْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ.

হে মানব মন্ডলী, পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তু-সামগ্রী ভক্ষ কর। আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। সে নিঃসন্দেহে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। [ সূরা বাকারা: ১৬৮ ]

এ আয়াতে স্বাভাবিক অবস্থায় কোন বস্তু আহার যোগ্য হওয়ার ক্ষেত্রে দুটি শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে।

এক. হালাল। দুই. পবিত্র।

 

তাই উক্ত আয়াতের ভিত্তিতে একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, আপনি যে ঔষধ খেতে চাচ্ছেন তা সেবন করা আপনার জন্য বৈধ। তবে উক্ত ঔষধে নাপাক কিছুর মিশ্রণ থাকলে তা খাওয়া আপনার জন্য মোটেও বৈধ হবে না।            

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

যৌন উত্তেজকসমূহ দুই ধরণের: ১। প্রাকৃতিক। যেমন– খাদ্যদ্রব্য ও নানাবিধ উদ্ভিদ ইত্যাদি। এগুলো গ্রহণ করতে কোন অসুবিধা নেই; যদি না এতে শারীরিক কোন ক্ষতি সাব্যস্ত না হয়। এমন কিছু সাব্যস্ত হলে সেটা থেকে বিরত থাকতে হবে। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “ক্ষতি করা উচিত নয়, আর ক্ষতির সম্মুখীন হওয়াও উচিত নয়।”[মুসনাদে আহমাদ, সুনানে ইবনে মাজাহ (২৩৪১), আলবানী ‘সহিহ ইবনে মাজাহ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন] ‘আল-আদাব আল-শারইয়্যাহ’ গ্রন্থে (২/৪৬৩) বলা হয়েছে: “নাপাক জিনিস, পবিত্র কিন্তু হারাম জিনিস, ক্ষতিকর জিনিস ইত্যাদি ঔষধ হিসেবে ও সুরমা হিসেবে ব্যবহার করা হারাম।”[সমাপ্ত] আলেমদের বই-পুস্তকে কিছু কিছু খাবারের উপকারিতা এবং এ খাবারগুলো যে যৌনশক্তি বাড়ায় ও সহবাসের শক্তি বৃদ্ধি করে এমন আলোচনা সুপ্রসিদ্ধ। যেমন– নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস: “তোমরা ভারতীয় এই চন্দন (আগর কাঠ) ব্যবহার করবে। কেননা তাতে সাতটি আরোগ্য রয়েছে। [সহিহ বুখারী (৫২৬০) ও সহিহ মুসলিম (৪১০৩)] এর ব্যাখ্যায় ইবনে হাজার (রহঃ) উক্তি। তিনি ভারতীয় চন্দনের উপকারিতার মধ্যে উল্লেখ করেন যে, “এটি পাকস্থলিকে উত্তপ্ত রাখে, কামোদ্দীপনা তৈরী করে, মুখের দাগ দূর করে”।[ফাতহুল বারী থেকে সমাপ্ত] আলেমগণ মেথি, পেস্তা-বাদাম, carob, তরমুজের বীচি ইত্যাদির ব্যাপারেও একই ধরণের কথা উল্লেখ করেছেন।[দেখুন: আল-আদাব আল-শারইয়্যাহ, পৃষ্ঠা- (৩/৭), (২/৩৭০, ৩৭৫)] তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- এসব জিনিস ব্যবহারের ক্ষেত্রে কেউ যেন মাত্রা ছাড়িয়ে না যান কিংবা এমন যেন না হয় যে, ব্যক্তি শুধু এসব নিয়ে পড়ে থাকে। কোন কোন খাবার ও পানীয় যৌনশক্তি বাড়ায় সেসব খুঁজে বেড়ানো তার নেশা হয়ে যায়। ২। এ উদ্দেশ্য ব্যবহৃত ঔষধ। এসব ঔষধের মূল বিধান হচ্ছে- হালাল বা বৈধ হওয়া; যদি না এতে হারাম কিছু না থাকে যেমন– নেশাকর কিছু কিংবা শরীরের জন্য ক্ষতিকর কিছু। যদি থাকে তাহলে পূর্বোক্ত হাদিসের কারণে সেগুলো ব্যবহার করা হারাম। কিন্তু, এগুলো তাদেরই ব্যবহার করা উচিত যাদের প্রয়োজন দেখা দেয়; যেমন– যৌন অক্ষমতা, অসুস্থতা কিংবা বার্ধক্য। নির্ভরযোগ্য বিশ্বস্ত ডাক্তারের পরামর্শের ভিত্তিতে এসব ব্যবহার করা উচিত। কেননা এসব ঔষধের কোন কোনটির এমন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যার ফলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। আর কোন কোন ঔষধের এমন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই তবে যার প্রয়োজন নেই তার জন্যে এগুলো ব্যবহারে কোন কল্যাণ নেই; এমনকি এগুলো ব্যবহারের ফলে যদি সুখানুভূতি বেশি হয় যেমনটি প্রশ্নকারী ভাই বলেছেন তা সত্ত্বেও। সে ব্যক্তি কতই না সুন্দর বলেছেন: “ঔষধ হচ্ছে- সাবানের মত; কাপড় পরিস্কার করে বটে; তবে কাপড়কে নরম করে ফেলে”। তাই এ সকল ঔষধ যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চলা ভাল। আমরা একটা উদাহরণ দিয়ে বলতে চাই বর্তমান যামানায় সবচেয়ে বেশি প্রসারিত ঔষধ হচ্ছে ‘ভায়াগ্রা’। কেউ কেউ কোন প্রকার পরীক্ষা করা ছাড়া ও ডাক্তারের পরামর্শ করা ছাড়া ভায়াগ্রা ব্যবহার করে সাংঘাতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। যায়েয সামরিক হাসপাতালের হার্ট বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আব্দুল্লাহ্ আল-নাঈমি এক সেমিনারে যৌন উত্তেজক ঔষধ সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন: “এ ঔষধের বহু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া খুব জটিল। কানাডাতে প্রায় ৮,৫০০ লোকের উপর একটি গবেষণা চালানো হয়েছে। এতে দেখা যায় যে, এদের মধ্যে প্রায় ১৬% লোক মাথা ব্যথায় ভুগেন। কেউ কেউ লালবর্ণ ধারণ করা ও তাপ বেড়ে যাওয়ার রোগে ভুগেন; বিশেষতঃ চেহারাতে। কেউ কেউ হজমির সমস্যায় ভুগেন। কারো কারো – বিশেষত যাদের নিম্ন রক্তচাপ আছে- রক্তচাপ এত নীচে নেমে যায় যে, তা ক্ষতিকর পর্যায়ে পৌঁছে যায়।”। তথ্যসুত্রঃ ইসলাম জিগ্গাসা ও জবাব

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ