১।

নার্গিস আসার খানম (সৈয়দা খাতুন) বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী। কবি তার ছায়ানট; পূবের হাওয়া; চক্রবাক কাব্য গ্রন্থের অনেক কবিতা নার্গিসকে কেন্দ্র করে রচনা করেন। ছায়ানটের মোট ৫০ টি কবিতার মধ্যে "বেদনা অভিমান'; "অবেলায়"; "হার মানা হার"; "অনাদৃতা"; "হারামনি"; মানস বধু; বিদায় বেলায়; পাপড়ি খেলা; ও বিধূর পথিক সহ মোট নয়টি কবিতা নার্গিসকে কেন্দ্র করে লেখেন।

নার্গিস আসার খানম বর্তমান কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার দৌলতপুর গ্রামের খাঁ বাড়ির আসমাতুন্নেসার মেয়ে। তার পিতার নাম মুন্‌শী আবদুল খালেক। নার্গিসের মামা আলী আকবর খান নজরুলের সাথে কলকাতায় পাশাপাশি থাকতেন। তিনি নজরুলকে তার বাড়ি কুমিল্লায় নিয়ে যান ১৯২১ সালে, উদ্দেশ্য ছিল তার পরিবারের কোন মেয়ের সাথেই নজরুলের বিয়ের ব্যবস্থা করা। নজরুলও নার্গিসকে পছন্দ করেন এবং বিয়েতে রাজি হন। এই সময় আলী আকবর খান নজরুলকে তার কলকাতার কোন বন্ধুদের চিঠি দিতেন না এমনকি নজরুলের চিঠিও কলকাতায় পোস্ট করার আগেই সরিয়ে ফেলতেন। বিয়ের প্রায় কিছুদিন আগে নজরুল এই ঘটনা গুলো জানতে পারেন। নার্গিসের দ্বিতীয় স্বামী কবি আজিজুল হাকিম পরবর্তিতে সেই চিঠি গুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করেন।

১৩২৮ বঙ্গাব্দের ৩ আষাঢ় শুক্রবার কবির সাথে নার্গিসের বিয়ের দিন ধার্য হয়। সেদিন বিয়ের আকদ্‌ সম্পন্ন হলেও (কিছু ঐতিহাসিক দ্বিমত পোষণ করেন) কাবিনে ঘর জামাই থাকার শর্ত নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। নজরুল বাসর সম্পন্ন না করেই নার্গিসকে ছেড়ে দৌলতপুর ত্যাগ করেন। এরপর নজরুলের সাথে নার্গিসের দেখা হয় ১৫ বছর পরে। তখন তাদের আনুষ্ঠানিক বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। কবি আজিজুল হাকিমের সাথে নার্গিসের দ্বিতীয় বিয়ে সম্পন্ন হয়। [১]

https://bn.wikipedia.org/wiki/

২। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্ত্রীর নাম প্রমীলা নজরুল ইসলাম। পরিবার প্রদত্ত নাম আশালতা সেনগুপ্তা ওরফে দোলোনা সংক্ষেপে দুলী। ‘প্রমীলা’ নামটি কাজী নজরুল ইসলামের দেয়া। পরবর্তীকালে আশালতা সেনগুপ্তা প্রমীলা নজরুল, প্রমীলা দেবী, প্রমীলা সেনগুপ্ত ইত্যাদি নামে পরিচিতি লাভ করেন।

মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার ঐতিহ্যবাহী তেওতা গ্রামে প্রমীলা সেনগুপ্তার জন্ম। পিতার নাম বসন্ত কুমার সেনগুপ্ত। মায়ের নাম গিরিবালা সেনগুপ্তা ওরফে গিরিবালা দেবী। মা ও বাবা একই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বসন্ত কুমার সেনগুপ্তের আরও দু’ভাই ছিলেন। তিনি ছিলেন মধ্যম। জগত কুমার সেনগুপ্ত ছিলেন তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা এবং ইন্দ্র কুমার সেনগুপ্ত ছিলেন তাঁর কনিষ্ঠ ভ্রাতা। প্রমীলা সেনগুপ্তা বাঙলা ১৩১৫ সালের ২৭ বৈশাখ (১০ মে ১৯০৮) জন্মগ্রহণ করেন। কবি আবদুল কাদির সাহেব ‘নজরুল প্রতিভার স্বরূপ’ গ্রন্থে (পৃ: ৬৭) তাঁর জন্মতারিখ উল্লেখ করেছেন ১৭ বৈশাখ, বাংলা ১৩১৬। চুরুলিয়ায় প্রমীলার সমাধি গাত্রে তাঁর জন্ম ২৭ বৈশাখ ১৩১৫ উল্লেখ আছে। কবি আবদুল কাদির সাহেবের গ্রন্থ থেকে জানা যায় ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জ মহকুমার অন্তর্গত তেওতা গ্রামে আশালতার জন্ম হয়। তাঁর ডাক নাম ছিল দোলোনা দেবী। গুরুজনরা আদর করে ডাকতেন দুলী। বলে। কৈশোরে তার গাত্রবর্ণ ছিল চাঁপাকলির মতো। নজরুল জেলে থাকতে চম্পাকান্তি দোলোনা দেবীকে স্মরণ করেই তাঁর দ্বিতীয় কাব্যের নামকরণ করেছিলেন ‘দোলন-চাঁপা’ (আশ্বিন ১৩৩০)। আশালতার পিতা বসন্ত কুমার সেনগুপ্ত ত্রিপুরা রাজ্যে নায়েবের পদে চাকরি করতেন। তিনি অকালে পরলোক প্রাপ্ত হলে বিধবা গিরিবালা দেবী অনূড়া আশালতাকে নিয়ে কুমিল্লা চলে আসেন। আশালতার খুল্লতাত ইন্দ্রকুমার সেনগুপ্ত কুমিল্লার কোর্ট অব ওয়ার্ডসের ইন্সপেক্টর ছিলেন।’ http://www.dailysangram.com/post/120510-


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ