শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

শুধু আল্লাহ নয়, গড, ঈশ্বর বা কোন অলৌকিক কিছুর অস্তিত্ব ছিল বা আছে তার পক্ষে পৃথিবীর ইতিহাসে কোন বাস্তববাদী বা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। এইজন্য বিশ্বে অনেক মানুষেই এই সম্পূর্ণ ধর্ম বিষয়টিতে বিশ্বাস করে না।


ধর্মালম্বিরা যেই সকল যুক্তি দিয়েছে তার অধিকাংশই কোনো না কোণো যুক্তি দ্বারা ভুল প্রমানিত করা হয়েছে, কিন্তু মানুষ অনুভবি অর্থাৎ ইমোশোনাল জীব, যে যদি কিছু মনে প্রানে বিশ্বাস করে, তবে তা মিথ্যা বা ভুয়া হলেও অবিশ্বাস করে না।    কিন্তু বিজ্ঞান এখনো প্রমান করতে পারে নি ১০০% ভাবে যে সৃষ্টিকর্তা নামক কিছু কখনো ছিলনা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সে আছে।



সহজে বোঝার জন্য একটি উদাহরনঃ আপনি রানা, আমি মিনা, সজল একটি তৃতীয় চরিত্র; এই তৃতীয় চরিত্র সম্পর্কে দুজেনেই জানে কিন্তু কেই বাস্তবিক ভাবে তার সাথে সম্পর্কিত নয়, মানে কখনো দেখে নি ।  রানা ও মিনা দুজনে একটা বেঞ্চে বসা। এখন এই বেঞ্চটি কে বানিয়েছে ? রানা বলছে সজল, কারণ সমাজ আমাদের বলে সজল সব কিছু করতে পারে। মিনা যুক্তি দিয়ে প্রমান করল বেঞ্চ টি একজন কাঠমিস্ত্রি কাঠ দিয়ে নির্মাণ করেছে। সহজেই বোঝা গেলো রানা যুক্তির অভাবে এই বিতর্কে হেরে গেছে এবং যুক্তির দ্বারা মিনা জিতেছে। কিন্তু আসল কথা, সজল নামে কি কারো আসলেই অস্তিত্ব আছে ? কারণ দুজনের কেউই অন্তিমে তার অস্তিত্ব বা অবিদ্যমানতা কোনটাই প্রমান করতে পারেনি। সবই ৫০-৫০। 

 


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

Call

প্রকৃতিগত প্রমাণ:

মাখলুক স্বভাবগতভাবেই স্রষ্টার উপর ঈমান রাখে। যার কলব ও মস্তিষ্ক থেকে আল্লাহ তায়ালা এই প্রকৃতিকে বিলোপ না করে দিবেন সে তার সৃষ্টিগত প্রকৃতি থেকে হটবে না। ফিতরাত বা প্রকৃতি আল্লাহর অস্তিত্বের ব্যাপারে প্রমাণ বহন করে এর শ্রেষ্ঠ দলীল হচ্ছে রাসূল সা.-এর এই হাদীস- "প্রত্যেক শিশুই ফিতরাত বা প্রাকৃতিক চেতনা নিয়েই জন্মগ্রহণ করে। অতঃপর তার পিতামাতা তাকে ইহুদী, নাসারা ও অগ্নিপূজারী বানায়। যেমন জীব-জন্তুরা নিখুঁত পশুই জন্ম দেয়। তোমরা এর মাঝে কি কোন খুঁত দেখ! " (-বোখারী।)


যুক্তিনির্ভর দলীল:

১। প্রতিটি সৃষ্টিরই স্রষ্টা রয়েছেন, কারণ সৃষ্টি মানেই স্রষ্টার মুখাপেক্ষি। অথচ এসব সৃষ্টি নিজেদের মাধ্যমে নিজেরা অস্তিত্বপূর্ণ হওয়া অসম্ভব। কেননা কোন বস্তু নিজেকে সৃষ্টি করতে পারে না। কারণ সৃষ্টিরর পূর্বে সে নিজেই অস্তিত্বহীন ছিল। তাহলে সৃষ্টিনিজেই নিজের স্রষ্টা হওয়া অবান্তর। সুতরাং প্রতিটি ঘটনারই কোন না কোন সংঘটক রয়েছে। সৃষ্টি জগতের বস্তুসমূহের পরস্পরের মধ্যে এবং প্রতিটি ঘটনা ও পরিণতির মাঝে যে অতুলনীয় শৃঙ্খলা, সঙ্গতিপূর্ণ সামঞ্জস্য এবং পারস্পারিক সংযোগ রয়েছে তা সৃষ্টিসমূহের আকস্মিকভাবে অস্তিত্বপূর্ণ হওয়ার বিষয়টিকে সুস্পষ্টভাবে অস্বিকার করে। প্রতিটি মাখলুকেরই একজন স্রষ্টা রয়েছেন। আর যখন এই সৃষ্টিসমূহের আপনা আপনিই অস্তিত্বপূর্ণ হওয়া অসম্ভব এবং আকস্মিকভাবে তার অস্তিত্বও যখন অযৌক্তিক, তাই স্পষ্ট হয়ে গেলো যে সৃষ্টিসমূহের অস্তিত্বদানকারী একজন রয়েছেন। তিনি হলেন আল্লাহ। যিনি সমগ্র জগতের প্রতিপালক। আর এই যুক্তিভিত্তিক দলীল এবং সুস্পষ্ট প্রমাণটি মহান আল্লাহ তায়ালাও উল্লেখ করেছেন। এ প্রেক্ষিতে তিনি বলেছেন- {তারা কি আপনা-আপনিই সৃজিত হয়ে গেছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা? } (সূরা: আত-তূর, আয়াত: ৩৫।)

অর্থাৎ মাখলুক স্রষ্টাবিহীন সৃষ্টি হয়নি। আর তারা নিজেরাও নিজেদেরকে সৃষ্টি করেনি। সুতরাং স্পষ্ট হয়ে গেলো যে তাদের স্রষ্টা হলেন মহামহিম সুমহান আল্লাহ তায়ালা। এ কারণে হযরত জাবির বিন মুতঈম রাযি যখন শুনলেন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম সূরা তূর -এর এই আয়াতগুলো তেলাওয়াত করছেন- {‘তারা কি আপনা-আপনিই সৃজিত হয়ে গেছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা?(36) না তারা নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছে? বরং তারা বিশ্বাস করে না। তাদের কাছে কি আপনার পালনকর্তার ভান্ডার রয়েছে, না তারাই সবকিছুর তত্ত্বাবধায়ক?’} (সূরা: আত-তূর, আয়াত: ৩৫-৩৭।)




বিস্তারিত এইখানে দেখুন

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

নিচের ঘটনাটি পড়ুন,


একবার এক নাস্তিক (যে আল্লাহর অস্তিত্বের কথা বিশ্বাস করে না, আসলে ও জানে না) এক দরবেশের কাছে এসে চারটি প্রশ্ন করে তার জবাব জানতে চাইল। প্রশ্ন চারটি হলো : 



১. বলা হয় যে, আল্লাহ সব জায়গায়ই আছেন, যদি থেকেই থাকেন তবে আমরা তাকে দেখতে পাই না কেন?

২. না দেখেই আল্লাহকে বিশ্বাস করার কথা বলা হয় কেন?

৩. ইবলিস তথা গোটা জিন জাতি আগুনের তৈরি। ওরা দোজখের আগুনে কিভাবে পুড়বে? অর্থাৎ আগুনকে আগুন দিয়ে কিভাবে পোড়ান যাবে।

৪. বলা হয় যে, আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কিছুই হয় না। তাই যদি হয়, তাহলে মানুষ তার কৃতকর্মের জন্য শাস্তি পাবে কেন?



দরবেশ নাস্তিক লোকটির প্রশ্নগুলো শুনে কৃত্রিম ক্রোধ দেখিয়ে একটি মাটির ঢেলা তার দিকে ছুড়ে মারলেন। লোকটির মাথায় আঘাত লেগে কেটে গেল। আহত লোকটি কাজির দরবারে দরবেশের বিরুদ্ধে নালিশ করল। কাজি ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ শুনে দরবেশকে লোকটির মথায় এভাবে আঘাত করার কারণ জিজ্ঞেস করলেন। দরবেশ উত্তরে বললেন : আমি তো তার চারটি প্রশ্নের জবাবই দিয়েছি মাত্র; তাকে আহত করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না। 



ঢিল ছুড়ে কিভাবে প্রশ্ন চারটির জবাব দেয়া হলো এ রহস্য উদঘাটন করার অনুরোধ করা হলে দরবেশ জবাব দিলেনÑ লোকটির প্রশ্ন হলো : আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান থাকলেও তাকে দেখা যায় না কেন? জবাব হলো : ঢিলের আঘাতে এ ব্যক্তি ব্যথা পেয়েছে, বলছে। ব্যথার যদি অস্তিত্ব থেকে থাকে তবে তা দেখা যায় না কেন? 



: ব্যথা বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও যেমন তা চোখে দেখা যায় না তেমনি আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান থাকা সত্ত্বেও থাকে চর্মচক্ষে দেখা যায় না। 



তার দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো : আল্লাহকে না দেখে বিশ্বাস করব কেন?

চোখে না দেখে যদি ব্যথার কথা বিশ্বাস করা যায় তবে আল্লাহকে না দেখে বিশ্বাস করার কী অসুবিধা?



তার তৃতীয় প্রশ্ন হলো : শয়তান ও জিন আগুনের তৈরি হয়েও দোজখের আগুনে পুড়বে কিভাবে?

: মানুষ তো মাটির তৈরি। মাটির তৈরি মানুষকে যদি মাটির ঢেলার আঘাতে কষ্ট দেয়া যায়, তবে আগুনের তৈরি জিনকে আগুনে পোড়ান কি তেমন কষ্টকর?



তার চতুর্থ প্রশ্ন হলো : আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কোন কিছুই ঘটে না, তাহলে মানুষের কৃতকর্মের জন্য মানুষকে শাস্তি দেয়া হবে কেন?

: আল্লাহর ইচ্ছায়ই যখন সব হয় তবে ঢিল ছোড়া, তার গায়ে আঘাত লাগা, রক্তপাত ও ব্যথা সবইতো তার ইচ্ছায়ই হয়েছে, সুতরাং এ ব্যাপারে অভিযোগ করার কী আছে? এরও যদি অভিযোগ ও বিচার চলে এবং শাস্তি বর্তায়, তবে মানুষের কৃতকর্মের বিচার, সুফল ও কুফল ভোগ কেন মিথ্যা হবে?



মানুষ সৃষ্ট বলেই তার দৈহিক ও জৈব গতিবিধি এবং মানসিক বৃত্তি ও বুদ্ধিমত্তা সীমিত। সাধনাবলে মানুষ যতই ঊর্ধ্বে উঠুক না কেন, অসীমের জ্ঞান লাভ করা তার পক্ষে অসম্ভব। কারণ তার ধারণা, ক্ষমতা ও আধারই অসম্পূর্ণ সৃষ্ট। সুতরাং সীমিত। স্রষ্টার জ্ঞান অসীম আর সৃষ্টির সাধনালব্ধ জ্ঞান সামান্য মাত্র। আল্লাহ তার অসীম জ্ঞান থেকে সামান্য মাত্র মানুষকে দিয়েছেন। সুতরাং সবই আল্লাহর কুদরত। আমরা যদি কেবলমাত্র মিথ্যা দূর করে সত্য গ্রহণ করতে পারি, তবেই স্রষ্টার সৃষ্টির উদ্দেশ্য সার্থক হবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ