কি কি লক্ষনে বুঝা যাবে সে গর্ভবতী কি না।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Junait

Call

১০. খাবারে অনীহা:

গর্ভবস্থার শুরুর দিকে খাবারে অনীহা বোধ হওয়া বেশ স্বাভাবিক। যদি কোন খাদ্যদ্রব্যের (যেমন পেয়াজ) গন্ধ আপনার মাঝে বমি ভাব নিয়ে আসে তবে খেয়াল করুন এমনটা ক্রমাগত হচ্ছে কি না। এসময় বমি ভাব বা খাদ্যে অনীহার কোন স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। তবে খুব সম্ভবত আপনার শরীরে ক্রমবর্ধমান ইস্ট্রোজেন হরমোনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এটা। এসময় আপনার খুব পছন্দের কোন খাবার খেতে বিস্বাদ লাগলেও আশ্চর্য হবেন না। বরং এরকমই হয়ে থাকে!


০৯. মন মেজাজের উঠানামা:

এসময় মন মেজাজের কোন ঠিক ঠিকানা না থাকাই স্বাভাবিক। এমন মুড সুইংয়ের কারণ বেশ কয়েকটা। সম্ভবা মায়ের শরীরে এসময় হরমোন বদলের কারণে ব্রেনের অভ্যন্তরে মেসেজ বহনকারী নিউরোট্রান্সমিটারের পরিমানে পরিবর্তন আসে। এই পরিবতৃন বিভিন্ন জনে বিভিন্নরকম হয়ে থাকে। সম্ভবা মা এসময় বেশ আবেগী অনুভব করেন, আবার অনেকে এসময় বিষন্নতা/দুশ্চিন্তায় ভোগেন।


০৮. পেট ফুলে যাওয়া:

হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে এসময় সম্ভবা মায়ের পেট ফুলে যাওয়ার অনুভুতি হয়। এটা অনেকটা মাসিক হবার আগ মুহুর্তের অনুভুতি। এসময় আপনার এরকম মনে হতে পারে যে, পরিধেয় বস্ত্র কোমরের কাছে ছোট হয়ে গেছে, যদিও এখন পযৃন্ত আপনার জরায়ুতে তেমন কোন পরিবর্তন আসেনি।


০৭. ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ:

হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে এরসময় শরীরে যে ক’টি পরিবর্তন আসে তার একটি হল রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি। রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধির ফলে বার বার প্রস্রাবের বেগ হয়। এই উপসর্গ আপনার প্রথম ট্রিমেস্টার বা ৬ সপ্তাহের মাথায় দেখা যাবে। এই অবস্থা বেশ কিছুদিন চলতে থাকবে। এবং আপনার শরীরে বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে এই সমস্যা আরও বাড়তে থাকবে।


০৬. অবসন্নবোধ:

হঠাৎ হঠাৎ ক্লান্ত বোধ করছেন? কিংবা ক্লান্তিতে ভেঙ্গে পড়ছেন? আসলে কেউই এখন পর্যন্ত ব্যাখ্যা করতে পারেনি সন্তান সম্ভবা মা’র প্রথম দিকের ক্লান্তির কারণ কি। সম্ভবত প্রোজেস্ট্রেরন হরমোনের ক্রমবর্ধমান প্রবাহ আপনাকে এই ঘুম ঘুম অনুভুতি দিচ্ছে। এছাড়াও মর্নিং সিকনেস ও বার বার প্রস্রাব করাও আপনার ক্লান্তিবোধ বাড়াতে কাজ করছে।


তবে, ভাল খবর হচ্ছে, দ্বিতীয় ট্রিমেস্টার শুরুর সাথে সাথে আপনার এই ক্লান্তিবোধ কেটে গিয়ে আগের চেয়েও বেশি ভাল বোধ করবেন। অবশ্য আপনার গর্ভাবস্থার শেষ দিকে এই ক্লান্তিবোধ আবার ফিরে আসবে, কারণ তখন স্বাভাবিকভাবেই আপনি অনেক বেশি ওজন বহন করবেন এবং সে সময়ের বিশেষ কিছু উপসর্গ আপনার রাতের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবে।


০৫.  স্তন কোমল ও স্ফীত হওয়া

গর্ভধারণের পর শরীরে বিশেষ কিছু হরমোন প্রবাহের কারণে স্তনযুগল বেশ স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে, যা কি না গর্ভধারণের আরেকটি চিহ্ন। স্তনের এই ফুলে ওঠা এবং ব্যাথা অনেকটা মাসিক পূর্ববর্তী অবস্থায় ব্যাথার মত। তবে সুখের খবর, এই ব্যাথাযুক্ত অবস্থা প্রথম ট্রিমেস্টারেই শেষ হয়ে যাবে, কারণ এই সময়ের মাঝে আপনার শরীর এই পরিবর্তিত অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নেয়।


০৪. বমি বমি ভাব

সাধারণত গর্ভধাণের এক মাসের আগে বমি বমি ভাব দেখা দেয় না। তবে এর ব্যতিক্রমও আছে যাদের গর্ভধারণের দুই  সপ্তাহের মাঝেই বমিভাব দেখা দেয়। সাধারণত সকালেই এই বমিভাব হয়, তবে অনেকের এই সমস্যা সময় মেনে চলে না। প্রায় অর্ধেকের মতো গর্ভবতী মহিলা তাদের দ্বিতীয় ট্রিমেস্টারের শুরুতে বমিভাব থেকে মুক্তি পায়, আর বাকিদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আর মাসখানেক দীর্ঘায়িত হতে পারে। তবে কখনোই এই বমিভাব একেবারে নিরাময় হয় না। খুব কম সংখ্যক ভাগ্যবতী মা এ থেকে মুক্তি পেয়ে থাকেন।


০৩. মাসিক মিস হওয়া

আপনার মাসিক যদি সঠিক চক্র মেনে চলে এবং ঠিক সময়ে যদি আপনার মাসিক না হয়, তবে উপরের উপসর্গগুলো দেখা না গেলেও আপনি বাসায় বসেই প্রেগনেন্সি টেস্ট করার কথা চিন্তা করতে পারেন। তবে আপনার মাসিক যদি অনিয়মিত হয়, এবং আপনি যদি এর ঠিকমতো হিসাব না রাখেন, তবে বমি ভাব, স্তনে ব্যাথা এবং বেশি বেশি বাথরুমে যাওয়ার দিকে খেয়াল করুন।


০২. বর্ধিত শারীরিক তাপমাত্রা

যদি আপনি নিয়মিত আপনার শরীরের তাপমাত্রার চার্ট রেখে থাকেন, এবং যদি দেখেন একনাগাড়ে ১৮ দিনের বেশি তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, তবে খুব সম্ভবত আপনি গর্ভবতী।


আর সর্বশেষ…


০১. বাসায় প্রেগনেন্সি টেস্ট

যদিও বাজারে লভ্য সব টেস্টিং কিট দাবি করে তারা বেশ সফলভাবে গর্ভধারনের অবস্থা ধরতে পারে, তারপরও মাসিক মিস হবারও সপ্তাহখানেক পরে টেস্ট রেজাল্ট ভুল আসতে পারে, পুরোটাই এর ওপর নির্ভর করা ঠিক হবে না। তাই আপনি উপরের উপসর্গগুলো দেখা যাওয়ার আগেই বাসায় বসে টেস্ট করুন। নেতিবাচক ফল পেলে কয়েকদিন পরে আবার টেস্ট করে দেখুন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আপনার গর্ভধারনের বিষয়টি নিশ্চিত হবার বেশ আগে থেকেই আপনার বাচ্চার গঠন শুরু হয়, তাই সবসময়ই নিজের যত্ন নিন।


আর যখনই ইতিবাচক ফল পাবেন, সাথে সাথে আপনার গাইনি ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

গর্ভধারণের লক্ষণসমূহ যাদের নিয়মিত মাসিক হয় তাদের ক্ষেত্রে গর্ভধারনের সর্বপ্রথম চিহ্ন মাসিক বন্ধ হওয়া। মাঝে মধ্যে গর্ভবতী হলেও মাসিকের সময় সামান্য রক্তক্ষরণ হতে পারে। অন্যান্য লক্ষণ অসুস্থ বোধ করা- আপনি হঠাৎ অসুস্থ বোধ করতে পারেন বা বমি বমি ভাব হতে পারে। যদিও একে মর্নিং সিকনেস বলা হয়, তারপরও দিনের যে কোনও সময় এরকম হতে পারে। যদি এর কারণে একেবারেই কিছু খেতে না পারেন তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। স্তনের পরিবর্তন– গর্ভধারণ নিশ্চিত হওয়ার পর স্তনের আকারে পরিবর্তন আসা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে স্তনের বোঁটায় পরিবর্তন আসে। বোঁটা চেপে ধরলে একধরনের রস নি:সৃত হতে দেখা যায়। এটাও এক ধরনের সংকেত গর্ভধারণের। ক্রমেই স্তনের আকার বড় হতে পারে এবং ব্যাথা হতে পারে (অনেকের মাসিকের সময়ও এমন হতে পারে), সুঁড়সুঁড়িও অনুভূত হতে পারে। রক্তনালী (রগ) গুলি আরো বেশি করে দেখা যেতে পারে এবং স্তনের বোঁটা আরো শক্ত এবং কালচে মনে হতে পারে। বেশি বেশি প্রস্রাবের বেগ। রাতে প্রস্রাবের জন্য ঘুম ভেঙ্গে যেতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য । যোনিপথে কোনপ্রকার জ্বালাপোড়া ছাড়াই বেশি বেশি ক্ষরন হতে পারে। অতিরিক্ত ক্লান্তিভাব। মুখে তামাটে স্বাদ লাগা। আগে ভাল লাগত এমন খাবার বিস্বাদ লাগা (যেমন-চা, কফি, সিগারেট বা তেলযুক্ত খাবার) আর নতুন নতুন খাবার খেতে ইচ্ছে করা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ