আলকুশী একটি বর্ষজীবী লতানো গাছ । আলকুশির ইংরেজি নাম Leguminosae । বিভিন্ন নামে পরিচিতি। যেমন- আত্মগুপ্তা, স্বয়ংগুপ্তা, মহর্ষভী, কুণ্ডলী, দুঃস্পর্শা, রোমালু, শীম্বী ইত্যাদি । একে দেখতে অনেকটাই শিমগাছের মতই দেখায় । এর বৃত্যংশ পাঁচটি, এতে বিষাক্ত রোম আছে । আলকুশীর যে অংশ ব্যবহার করা হয় বীজ ও শিকড় । বীজ চূর্ণ এক আনা, মূলের রস এক তোলা । আলকুশির ব্যবহারবিধি ও উপকারিতা বাজিকর হিসেবে আলকুশীর প্রধান ব্যবহার বাজীকর ঔষধ হিসেবে । যে ঔষধ অতিমাত্রায় শুক্র সৃষ্টি করে অথবা অশ্বের মত রমণে প্রবৃত্ত করে তাঁকে বাজীকর ঔষধ বলা হয় । আলকুশির বীজকে রাত্রিতে পানিতে (অথবা গরম দুধে) ভিজিয়ে রাখতে হবে এবং পরদিন সকালে বীজের খোসা ছাড়াতে হবে । খোসা ছাড়ান বীজকে এমনিতে অথবা দুধ-পানিতে একটু সিদ্ধ করে পিষে নিতে হবে এবং অল্প ঘি-এ ভাজতে হবে । পরে এর সাথে চিনি মিশাতে হবে । এ থেকে সকাল বিকাল ২ চা চামচ করে খেতে হবে এবং ঔষধ খাবার পর অন্তত এক কাপ দুধ খেতে হবে । এভাবে কিছুদিন খেলেই বাজীকরণ নির্বাহ হবে । যাতদের ধ্বজভঙ্গ, শুক্রতারল্য, বা স্ত্রীলোক দর্শনেই শুক্রক্ষরন হয় তাঁদের জন্য এটি অত্যন্ত বিশ্বস্ত পথ্য। আলকুশীর বীজ চূর্ণ করে মাষ কলাইয়ের সাথে জুস তৈরি করে খেলেও বলবান ও বাজীকরন নির্বাহ হয় । বাতব্যথা এক প্রকার বাতব্যাধি আছে যাতে হাত উপরে উঠানো যায় না । এরূপ ক্ষেত্রে আলকুশী শিকড়ের রস কয়দিন নিয়মিত খেলে তা সেরে যায় । আলকুশীর বীজ ঋতুস্রাবকারী এবং বেশ বলকারক । অন্যান্য রোগে সন্তান প্রসব অথবা অন্য কোন কারণে স্ত্রীলোকের যোনী প্রসারিত হয়ে গেলে আলকুশির শিকড়ের ক্বাথে একখণ্ড পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে তা যোনীতে ধারন করলে যোনী সঙ্কীর্ণতা প্রাপ্ত পায় । বিছা ও অন্যান্য বিষাক্ত পোকা-মাকড়ে দংশন করলে তাতে আলকুশীর বীজ চূর্ণ করে লাগালে বিষ নষ্ট হয়ে যায় । সাবধানতা: আলকুশীর অপকারিতা আলকুশীর ফলের উপরের শুয়া অত্যন্ত বিষাক্ত । এটি লাগলে ত্বকে অত্যন্ত চুলকানি ও জ্বালাযন্ত্রণা আরম্ভ হয় । কাজেই বীজ সংগ্রহ কালে অত্যন্ত সাবধান ও যত্নবান হওয়া আপরিহার্য । আলকুশির গাছ আমাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী যার ঔষধি গুণাগুণ অনেক । আমাদে সকলেরই উচিত নিয়মিত আলকুশী সেবন করা এবং এর যথার্থ ব্যবহার করা উচিত