নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায় অনেক। এ বিষয়ে শেখ মো. সালেহ আল মোলাজ্জেদ (রা.) একটি কিতাবও লিখেছেন। পরবর্তী সময়ে আরো অনেকেই লিখেছেন, অনেকগুলো বই আছে। নামাজে মনোযোগ তৈরির জন্য, যাতে মনঃসংযোগ নামাজের মধ্যে খুব নিবিড় করা যায় এ জন্য কী কী পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়, সে বিষয়গুলো রয়েছে। আমি মৌলিক তিনটি কাজের কথা স্পষ্ট করে বলব। অনেক কাজের কথাই এসব কিতাবে উল্লেখ আছে। কিন্তু এ তিনটিই হচ্ছে মূলত মৌলিক কাজ। প্রথম কাজ হচ্ছে, পরিপূর্ণভাবে একজন ব্যক্তি তাহারাত হাসিল করবে, অর্থাৎ পবিত্রতা হাসিল করবে। পবিত্রতার ক্ষেত্রে যদি তাঁর কোনো ত্রুটি থেকে যায়, তাহলে তাঁর মনোযোগ সালাতে আসবে না। কারণ, সেখানে শয়তান থেকে যাবে। শয়তান সেখানে এসে অসওয়াসা দেওয়ার চেষ্টা করবে। সালাতের মনোযোগ বিনষ্ট করবে শয়তান তাঁর এই তাহারাতের ত্রুটির সুযোগ নিয়েই। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, সালাতকে উপলব্ধি করা। সালাতের মধ্যে আমরা যেই কথাগুলো বলছি, যে কাজগুলো করছি, সেগুলো সত্যিকারভাবে বান্দাকে উপলব্ধি করা। শরিয়তের মওকেফ যে অবস্থানটা রয়েছে, সেটি বোঝা। শাইখুল ইসলাম ইবনুল কাইয়িম (র.) বলেন, ‘বান্দার অবস্থান হচ্ছে দুটি, একটি দুনিয়াতে অন্যটি আখিরাতে।’ বান্দার দুনিয়ার অবস্থানটা যদি সে সত্যিকারভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সামনে যথাযথ করতে পারে, তাহলে আখিরাতে হাশরের ময়দানে আল্লাহতায়ালার সামনে যখন দাঁড়াবে, তখন তাঁর অবস্থানটা সহজ হয়ে যাবে। সুতরাং এই যে মওকেফটা, এই যে সালাতের মধ্যে অবস্থানটা, সেটা সত্যিকারভাবেই উপলব্ধিতে আনতে হবে। বুঝতে হবে যে আপনি কী কাজ করছেন সালাতে। সালাতে কোন সুরা পড়ছেন, কী পড়ছেন, কী বলছেন সালাতে, সে বিষয়গুলো বুঝতে হবে। কোথায় আপনি আল্লাহতায়ালার তামজিদের কথা ঘোষণা করছেন। নামাজটা হতে হবে প্রাণময়। দেখা গেল একজন দৌড় দিয়ে এসে সুবহানা রাব্বিয়াল আলার জায়গায় সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম, কী পড়লেন বুঝলেন না, সচেতন না। তারপর সিজদাহর পর সিজদাহ দিচ্ছেন। সালাতে আরকান-আহকাম যেগুলো আছে, সেগুলো যথার্থভাবে আদায় করছেন না। তাহলে সেখানে সত্যিকার অর্থে সালাতের প্রতি যে আবেগ রয়েছে, সেটি কিন্তু সালাতে আসবে না এবং খুশু খুজু, সালাতের যে মূল প্রাণ, বান্দা সালাতের মধ্যে মিতবিহ্বল হবে, কাতর হবে, বিনয়ী হবে, সেই সুযোগটুকু সেখানে আসবে না। যেহেতু কী বলছেন, সেটিই আপনি জানেন না। তৃতীয় বিষয় হচ্ছে, সালাতটা আল্লাহর নবী (সা.)-এর দেখানো সুন্নাহ তরিকানুযায়ী আদায় করতে হবে। সালাত খায়েশ অনুযায়ী আদায় করলে চলবে না। মন চাইল যেভাবে-সেভাবে আদায় করলেন, রুকুর কোনো খবর নেই, সিজদাহর কোনো খবর নেই। আবু হুরায়রা (রা.) এবং উমর উল খাত্তাব (রা.) বর্ণনা করেন, ‘কোনো ব্যক্তি ৬০ বছর পর্যন্ত সালাত আদায় করে থাকে, তাঁর কাছ থেকে আল্লাহতায়ালা একটা সিজদাহও কবুল করেননি।’ জানতে চাওয়া হলো, ‘হে আবু হুরায়রা, এটা কীভাবে সম্ভব?’ তিনি বলেন, ‘সালাতের রুকু, সিজদাহ এগুলো কোনোটাই পরিপূর্ণভাবে আদায় করে নাই।’ ইবাদতকে আদাতে রূপান্তরিত করলে চলবে না। ইবাদতকে তাঁর পর্যায়ে রাখতে হবে। সে পর্যায়ে রাখতে হলে নবী (সা.)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী যদি আদায় করেন, দেখবেন যে এমনিতেই এর মধ্যে মনঃসংযোগ চলে এসেছে এবং আপনি এর মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারছেন। আরেকটি জিনিস অর্জন করবেন, যেটি নবী (সা.) বলেছেন, ‘সালাতের মধ্যে আমার চক্ষু শীতলকারী বিষয় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। সেগুলো সালাতের মধ্যে রয়েছে।’ এখন আপনার সে চক্ষু শীতল হবে সালাতের মাধ্যমে সেই বিনোদন, সেই প্রাণবন্ততা সবকিছুই সেখানে উপলব্ধি করতে পারবেন। বুঝতে পারবেন সালাত আপনার সত্যিকার অর্থেই কত সুন্দর হচ্ছে এবং সালাতে আপনি আনন্দ পাবেন।
ভাই নামায পড়া হল আল্লার হুকুম মানা আল্লাহ কে খুশি করার জন্য। নামায মানুষ কে জান্নাতে নিয়ে যাবে। আর শয়তান বাদা দিবে নামায না পড়ার জন্য। এটা যদি মনে করেন যে আমি আল্লাহ কে খুশি করার জন্য নামায পড়ব আল্লাহর ইবাদত করব জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁছবো জান্নাতে যাব এটাই যতেস্ট। রকটি কথা নামাযের সময় হলে তাড়া তাড়ি মসজিদে যাবেন। বন্দুদের সাথে আড্ডা দিবেন্না।