বাচ্চারা কান্নাকাটি করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তা যদি হয় কোনো মাত্রাতিরিক্ত বা অসুস্থতার লক্ষণ তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। বাচ্চারা যেসব কারণে কাঁদে : - খিদে পেলে - ন্যাপি ময়লা করলে বা ভিজিয়ে ফেললে - ক্লান্ত হলে - কোলে উঠতে চাইলে - ঠাণ্ডা বা গরমে - কোনকিছুতে উত্সাহ হারিয়ে ফেললে - উত্তেজিত হলে খেয়াল করে দেখুন আপনার সন্তানটি এসব সাধারণ কোনো কারণে কান্নাকাটি করছে কি না। যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে যেজন্য কান্নাকাটি করছে সেই সমস্যার সমাধান করে ফেললেই তার কান্না বন্ধ হয়ে যাবে। বাচ্চার কান্না থামাতে যা যা করতে পারেন : - আপনি যদি বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ান, তাহলে তাকে দুধ খাইয়ে দেখতে পারেন। - যদি সে বোতলে দুধ খায়, তবে তাকে বোতল জাতীয় কিছু একটা দিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে বোতলগুলো স্টেরিলাইজড হতে হবে। দাঁতের ক্ষতি রুখতে মিষ্টি জাতীয় কিছু দিবেন না। অনেক শিশু আছে যারা তাদের বুড়ো আঙুল চুষে। কেউ কেউ আবার কাপড়ের টুকরাও মুখে দেয়। - বাচ্চাকে এমনভাবে রাখুন, যাতে সে আপনার কাছেই থাকে। তার চারপাশে আস্তে করে হাঁটুন, গুন গুন করে গান করুন, নাচুন, কথা বলুন তার সাথে। - বাচ্চাটিকে সামনে-পিছনে দোলান। অথবা সম্ভব হলে তাকে নিয়ে হাঁটতে বের হোন, গাড়িতে নিয়ে কোথাও থেকে ঘুরে আসুন। অনেক বাচ্চা আছে, যারা গাড়িতে ঘুমাতে পছন্দ করে। গাড়ি বন্ধ করে দিলেই ওরা বুঝে ফেলে এবং ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠে। যাই হোক, একটু সময় আপনি পাবেন। এর মধ্য দিয়ে কিছুটা বিশ্রাম আপনারও হয়ে যাবে। - কোনকিছু খুঁজে বের করুন, যেটার দিকে আপনার বাচ্চা তাকিয়ে থাকতে বা শুনতে পছন্দ করবে। এটা হতে পারে রেডিও মিউজিক, অথবা তার বিছানার ওপরে ঝুলিয়ে রাখা কোন খেলনা বা মোবাইল। - বাচ্চার পিঠে আলতো করে, আস্তে আস্তে হাত বুলিয়ে দিন, তাকে বুকে চেপে ধরুন, অথবা কোলে নিয়ে আপনার মুখের সামনে তাকে ধরুন। এমনও হতে পারে, আপনি তার পোশাক খুলে আলতো করে, সময় নিয়ে তার শরীরে বেবি অয়েল মাসাজ করে দিতে পারেন। এসময় বাচ্চার সাথে খুব সুন্দর করে কথা বলুন, রুমটাকে যথাসম্ভব ঈষদুষ্ণ গরম রাখুন। - ঈষদুষ্ণ গরম পানিতে বাচ্চাকে স্নান করান। এই প্রক্রিয়া অনেক সময় অনেক বাচ্চাকে শান্ত করার ক্ষেত্রে ভাল কাজ দেয়। তবে এর উল্টোটাও হয়। অনেক বাচ্চা আছে, যারা এসময় জোরে চিত্কার করে কাঁদতে শুরু করে। - অনেক সময় বাচ্চার সাথে নাচানাচি করলে বা গান গাইলে বাচ্চারা জেগে থাকে। সেক্ষেত্রে তাকে খাওয়ানোর পর শুইয়ে দিয়ে দেখতে পারেন। কাজে আসতেও পারে। এসব কিছুর পরও যদি আপনার বাচ্চার কান্না আপনার কাছে অস্বাভাবিক লাগে তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ এমনও হতে পারে বাচ্চার শরীরের আভ্যন্তরীন কোনো গোলযোগের কারণে কান্নার সমস্যা হতে পারে। সে হয়ত শারীরিক কোনো অসুস্থতায় অস্থিরতা বোধ করছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের কাছে আপনার সন্তানকে নিয়ে যান। মনে রাখবেন, কখনও কোন কারণে, বিরক্ত লাগলেও, ক্লান্তিবোধ করলেও বাচ্চাকে মারবেন না, রাগও করবেন না। কারণ এতে করে হিতে-বিপরীত হতে পারে, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, এমনকি মারাত্মক ক্ষতিও হয়ে যেতে পারে।