বেলিজের ‘ব্লু হোল’ বা ‘নীল গর্ত’ স্কুবা ডাইভার এবং পর্যটকদের কাছে পৃথিবীর সেরা ১০টি আশ্চর্যের মাঝে একটি। আকর্ষণের পাশাপাশি এই গর্ত মায়া সভ্যতার ধ্বংসের কারণ সম্পর্কে ধারণাও দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বেলিজ হচ্ছে মধ্য আমেরিকার উত্তর প্রান্তীয় একটি দেশ। মধ্য আমেরিকার এটাই একমাত্র দেশ, যার রাষ্ট্রীয় ভাষা ইংরেজি। তবে এখানে বেলিজিয়ান ক্রিওল ও স্প্যানিশ ভাষাও প্রচলিত। বেলিজের দক্ষিণে মেক্সিকো, দক্ষিণে ও পশ্চিমে গুয়াতেমালা এবং পূর্বে ক্যারিবিয়ান সাগর।
ডিসকভারি চ্যানেলের দেওয়া তথ্যে বেলিজের ‘ব্লু হোল’ পর্যটক ও স্কুবা ডাইভারদের কাছে আকর্ষণীয় হলেও বিজ্ঞানীদের কাছে এর গুরুত্ব আরো অনেক বেশি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, মায়া সভ্যতা যেকারণে ধ্বংস হয়েছে তার তথ্য দিতে পারবে এই গর্ত। নতুন এক গবেষণায় এমন আশাবাদই পেয়েছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের রাইস ইউনিভার্সিটির ভূ-তত্ত্ব বিজ্ঞানী এন্ড্রু ড্রক্সলার লাইভসায়েন্সকে জানিয়েছেন।
গবেষক দল ব্লু হোল এবং কাছাকাছি একটি হ্রদে খনন করেছেন। সেখানে তারা দেখতে পেয়েছেন টাইটেনিয়াম তেজিষ্ক্রিয় বিকিরণ করে অ্যালুমিনিয়ামে পরিণত হয়েছে নবম ও দশম শতকে, যখন ইকাতান পেনিনসুলায় মায়া সভ্যতা বিরাজমান ছিল। বেশি টাইটেনিয়ামের অর্থ ওই অঞ্চলে তখন ভারী বৃষ্টি হতো এবং আগ্নেয়গীরির অগ্নুৎপাত ছিল বিদ্যমান। কিন্তু যখন টাইটেনিয়াম ও অ্যালুমিনিয়ামের মাঝে অনুপাত কম থাকে, তখন বুঝে নিতে হবে- বৃষ্টিপাত কমে গেছে। ৮০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১০০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কমে গিয়েছিল বলে ড্রক্সলার জানান।
প্রথম সহস্রাব্দের প্রথমদিকে ইউকাতানে মায়া সভ্যতার প্রভাব থাকলেও ৯০০ সালের দিকে বেশিরভাগ এলাকার পতন ঘটে। এই অঞ্চলটি বিভক্ত হয়ে বর্তমানে গুয়াতেমালা, এল সালভাদোর, হন্ডুরাস, দক্ষিণ মেক্সিকো নামে পরিচিত।
তবে মায়া সভ্যতা ধ্বংসের পেছনে কী কারণ থাকতে পারে তা এখনো অজানা থাকলেও অনিন্দ্য সুন্দর এই ব্লু হোলের কল্যাণে এবার হয়তো এই রহস্যের উন্মোচন হবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
সূত্র: সিএনএন