শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Sumya Akter

Call

অফ-শাের ব্যাংকের ব্যবসায় সাধারণ বাণিজ্যিক ব্যাংক ব্যবসায়ের পাশাপাশি পরিচালনা করা যায়। আমানত গ্রহণ ও ঋণ প্রদানের দিক থেকে অফশাের ব্যাংকিং এর কার্যক্রম সাধারণ ব্যাংকগুলাের মত হলেও এ জাতীয় ব্যাংকের আমানত গ্রহণ এবং ঋণ প্রদান এ দুটি কার্যক্রমই বৈদেশিক সূত্র হতে আগমন ও বিদেশি গ্রাহকের অনুকূলে প্রদান করা হয়। অর্থাৎ এই ব্যাংকের কার্যক্রম শুধু অনিবাসীদের মধ্যেই সীমিত থাকে।

Definition of Offshore Banking (অফশোর ব্যাংকিং এর সংজ্ঞা)যে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বিদেশি সূত্র হতে বৈদেশিক মুদ্রায় তহবিল সৃষ্টি হয় এবং দেশীয় আইন-কানুনের বাইরে আলাদা আইন কানুনের মাধ্যমে এই তহবিল পরিচালিত হয় ও হিসাব সংরক্ষণ করা হয় তাকে অফ-শাের ব্যাংকিং বলে।

A Dictionary of Banking and Finance এ বলা হয়েছে-Off-shore Banking refers to the international banking business involving non-resident foreign currency denominated assets and liabilities. It refers to the banking operations that cover only non-residents, l.e., mostly multinational producers of goods and services and financiers, and it does not mix with domestic banking.অর্থাৎ অফ-শোর ব্যাংকিং অনিবাসী বৈদেশিক মুদ্রার সম্পদ এবং দায়গুলির সাথে জড়িত আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবসায়কে বোঝায়। এটি এমন ব্যাংকিং অপারেশনগুলিকে নির্দেশ করে যা শুধুমাত্র অনিবাসিদের, যেমন- মাল্টিন্যাশনাল পণ্য এবং সেবা এবং ফাইন্যান্সারদের সম্পৃক্ত করে এবং এটি দেশীয় ব্যাংকিংয়ের সাথে মিশ্রিত হয় না।

মোটকথা- অফশোর ব্যাংকিং হলো ব্যাংকের অভ্যন্তরে পৃথক এক ব্যাংকিং ব্যবস্থা। বিদেশি কোম্পানিকে ঋণ প্রদান এবং বিদেশি উৎস থেকে আমানত সংগ্রহের সুযোগ রয়েছে অফশোর ব্যাংকিংয়ে। এতে স্থানীয় মুদ্রার পরিবর্তে বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব হয়। ব্যাংকের কোনো নিয়ম-নীতিমালা অফশোর ব্যাংকিংয়ে প্রয়োগ হয় না। কেবল মুনাফা ও লোকসানের হিসাব যোগ হয় ব্যাংকের মূল হিসাবে। বর্তমানে দেশি-বিদেশি ৩৫টি ব্যাংক অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

অফশাের ব্যাংকিং এমন ধরনের ব্যাংকিং যাতে অস্থানীয় বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের কাজ করে থাকে। শাব্দিক অর্থে এটি প্রথম বুঝানাে হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাহামা, স্যাম্যান দ্বীপপুঞ্জের মত সমুদ্র সৈকতের কেন্দ্রগুলােকে যেখানে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দিক দিয়ে অনেক শুষ্ক মওকুফ করা হয়েছিল।

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অফশাের ব্যাংকিং সমুদ্র সৈকতের নিকটে হওয়ার প্রয়ােজন নাই। হংকং, শ্রীলংকা, ফিলিপাইন এবং সিঙ্গাপুর-এর মত স্থানে এশিয়ায় ৪টি এই ধরনের ব্যাংকিং ইউনিট রয়েছে। এটি বৈদেশিক মুদ্রা ঋণ ও ধার দেয়া-নেয়ার কাজে নিয়ােজিত থাকে।

অফশাের ব্যাংকিং-এর দুই ধরনের কেন্দ্র রয়েছে। একটি কাগজপত্রের অপরটি পরিচালনামুলক। ঐ কাগজে কেন্দ্র কেবল বিভিন্ন নিয়মনীতি, ট্যাক্স, লেভী, সুদ ইত্যাদি মওকুফের কাজ করে থাকে। আর পরিচালনা বিভাগ সংশ্লিষ্ট স্থানে আমানত ও ঋণদানের কাজ পরিচালনা করে থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯৮৫ সালে ব্যাংকগুলোর অফশোর ব্যাংকিং পরিচালনার জন্য শুধু একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। সম্প্রতি ৩০ বছর পর বাংলাদেশ ব্যাংক অফশোর ব্যাংকিংয়ের জন্য পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা জারি করেছে ২৫/০২/২০১৯ তারিখে। শুরুতে বিদেশি ব্যাংকগুলো এ সেবায় থাকলেও প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ব্যাংক যুক্ত হচ্ছে অফশোর ব্যাংকিং সেবায়। গত পাঁচ বছরে এ ব্যাংকিং ব্যবস্থা বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সে কারণে বিদেশি ব্যাংকের পাশাপাশি দেশীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোও আলাদা শাখা বা ইউনিট খুলেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, অফশোর ব্যাংকিংয়ের আওতায় বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৩১১ কোটি টাকা। যার বড় অংশই বিতরণ করেছে বিদেশি মালিকানাধীন হংকং সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (স্ট্যানচার্ট)।

প্রচলিত আইনের বাইরে ব্যাংকিংয়ের সুযোগ থাকায় সবাই এখন অফশোর ব্যাংকিংয়ের দিকে ঝুঁকছে। তবে এ সুবিধা মূলত রপ্তানিকারকদের জন্য। কম সুদ হওয়ায় ব্যবসায়ীরাও এ ধরনের ঋণের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এছাড়া সুদের হার কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এখন অফশোর ইউনিট থেকেই ঋণ পেতে আগ্রহী। বাজারে সুদের হার ১০ শতাংশের বেশি হলেও এ ইউনিট থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ সুদে ঋণ পাওয়া যাচ্ছে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ