‘’বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’’
আজকের অনুষ্ঠানের সম্মানিত সভাপতি, অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, আমার প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকা মন্ডলী এবং আমার ছোট ভাই ও বোনেরা আসসালামু আলাইকুম.
আজকের এই দিনে আমি শ্রদ্ধাভরে স্বরন করছি। শহীদ গাজী আলাউদ্দিন মাষ্টারকে। যিনি এই চর এলাকার মানুষকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য তার অসামান্য অবদান নূতন বাক্তার চর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
আমি আরও স্বরন করছি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিক উল্লাহ চৌধুরিকে। যিনি এই প্রতিষ্ঠানকে কলেজে পরিবহণ করে আমাদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার পথকে সহজ করে দিয়েছেন। ওনার জন্যই আমারা আজ উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছি।
আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমারা যেন এই স্কুল এন্ড কলেজের মুখ উজ্জল করতে পারি এবং এই প্রতিষ্ঠানের জন্য সম্মান বয়ে আনতে পারি।
কবি'র ভাষায় বলতে চাই,
কত স্মৃতি হাসি উল্লাস মাখা দিন
মিশে আছে এইখানে
প্রতিটি পাথর-বেঞ্চ-ঘণ্টা সবার মাঝে
আমাদের ভালবাসা
আজ ছাড়িতে হবে এসব,
দিতে হবে বলি, একি ব্যাথা।
রচিত হবে স্মৃতির মাঠ, হবে কি আর কখনো এভাবে আসা?
হে প্রিয় আলয়, তোমায় বলি, করি শেষ আরতি
আমাদের যেন ভুলিও না তুমি,
রেখো মনে চিরদিন।
সবশেষে,
এই স্কুল থেকে চলে যাচ্ছি কিন্তু রেখে যাচ্ছি স্মৃতি।
আমাদের সকল ভুল,বেয়াদবি মাফ করে দেবেন।
আর সকল ছোটভাই দের জন্য
রইলো শুভকামনা।
বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম, মঞ্চে উপস্থিত প্রধান অতিথি এবং আমার শ্রদ্ধেয় সকল শিক্ষক ও আমার সামনে উপবিষ্ট সকল শিক্ষার্থীদের কে আমার পক্ষ থেকে জানাচ্ছি আন্তরিক সালাম এবং শুভেচ্ছা । অত্যান্ত দুঃখ ও ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে হচ্ছে আজ আমাদের বিদায় অনুষ্ঠান। যদিও আমরা মনে করি এটা একটা বিদায়ের আনুষ্ঠানিক মাত্র। কারণ মন থেকে চিরতরে বিদায় নেওয়া কখনো সম্ভব হবে না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই প্রতিষ্ঠানে পড়েছি এবং এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ আমাদেরকে বিভিন্ন বিষয় অত্যান্ত দক্ষতার সাথে পড়িয়েছেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য করেছেন তা আমরা কখনোই ভুলবো না। এজন্য আমরা আপনাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। কিন্তু ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে আজ অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে। আজ শিক্ষাজীবনের একটি অধ্যায় সমাপ্ত করে পরের আরেকটি অধ্যায়ে পা রাখার উদ্দেশ্যে আমরা বিদায় নিচ্ছি। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন ভবিষ্যতে শিক্ষাজীবনে আরো উন্নতি করে দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে পারি। এছাড়া এখানে দীর্ঘ শিক্ষাজীবনে আপনাদের অনেক শাসন-বাড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে যা সাময়িক বিরক্তিকর মনে হলেও এখন এই শেষ মুহূর্তে বুঝতে পারছি এটা আমাদের জন্য কতটা দরকারি ছিলো। তাই আমাদের কোনো আচরণের যদি কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকা কষ্ট পেয়ে থাকেন বা ছোট কিংবা বড় কোনো ভুল করে থাকি তাহলে আমাদেরকে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।সমস্ত ছাত্র- ছাত্রীদের পক্ষ থেকে আমি বিনীতভাবে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এবং সেই সাথে ছোট ভাইদের বলবো তোমরা কখনো শিক্ষক/শিক্ষিকার সাথে খারাপ আচরন করবে না । পরিশেষে আমি এই প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক/শিক্ষিকাবৃন্দের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আমি আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি।
এখানে একটা নমুনা দেওয়া হলো এগুলোকে নিজের মত কথা বসিয়ে বলতে হবেঃ----------------------------
বিদায়ী বাণী দিয়ে কথা শুরু করাটা বক্তব্যকে প্রান্জল করে::::::::::
বক্তব্য শুরুঃঃঃ>>>>>
“সুন্দর বিদায় হলো ক্ষতি না করে বিদায় নেয়া, সুন্দর ক্ষমা হলো বকা না দিয়ে ক্ষমা করা, সুন্দর ধৈর্য হলো অভিযোগ না রেখে ধৈর্য্ধারণ করা।”
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
মন্চে উপবিষ্ট আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমন্ডলি ও আমার সামনে বসা সম্মানিত বড় ভাই এবং স্নেহের ছোট ভাইয়েরা,
সবাইকে আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে সালাম আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
"বিদায়" শব্দটা তিন অক্ষরের হলেও এটার বেদনা কত টুকু তা আমরা এখন বুঝতে পারছি।। স্কুলের ছুটির ঘন্টা টা আজ মনে হল একটু তাড়াতাড়ি ই বেজে গেল।। কিন্তুু অন্যদিন এই ছুটির ঘন্টা আর আজ ছুটির ঘন্টার মধ্যে পার্থক্য একটাই---"আজকের পর থেকে স্কুলে ক্লাস করার জন্য আর আমাদের যেতে হবে নাহ" হয়ত বাহ "স্কুুলে এসে ক্লাসে করতে অনেক ইচ্ছা হবে,, কিন্তুু এসে ইচ্ছা টা পূরণ করা হয়ত আর সম্ভবপর হবে নাহ" কথাটা ভাবতেই কেন জানি মনটা খারাপ হয়ে গেল।। আসলেই জীবনটা খুব ছোট.... ২য়-৩য় শ্রেণীতে থাকতে ভাবতাম কখন ৭ম-৮ম শ্রেণীতে উঠব।। আর ৭ম-৮ম শ্রেণীতে উঠে ভাবতাম কবে স্কুল জীবন টা শেষ করব।। হয়ত বাহ এখন সেই সময় টা এসেছে।। কিন্তুু আজকে কেন এত খারাপ লাগছে-- কেন জানি না নিজের অজান্তেই চোখের কোণে দুই পোঁটা চোখের জল এসে বলছে "যেতে তো চাইনা তবুও কেন তাঁড়িয়ে দিচ্ছো আজকে এইভাবে" হতে পারে নিজের অজান্তেই স্কুল এবং স্কুলের সবাই কে অনেক অনেক ভালবেসে ফেলেছি।। যা হয়ত ২য়-৩য় এবং ৭ম-৮ম শ্রেণীতে থাকতে বুঝতে পারি নি..... কিন্তুু এখন বিদায় কালে বুঝতে পারছি কতটা ভালবাসলে স্কুল ছেড়ে... স্কুলের ফ্রেন্ড ছেড়ে,, স্কুলের শিক্ষক ছেড়ে... স্কুলের ফেলা আসা ম্মৃতি গুলোর জন্য আমাদের চোখের কোণে জল আসতে পারে।। আর হবে নাহ... স্কুলে এসে মামুদের জড়িয়ে কুশল বিনিময় করা,,শেষ টেবিলে বসা,, পড়া না পারলে স্যার এর বকা,, এক জনে দোষ করে আরেক জনকে দোষারোপ করা,, ফাজলামি করে স্যার দের ডায়লগ নকল করা,, একেক জনকে এক এক নামে ডেকে ক্ষেপিয়ে দেওয়া,, রাবার দিয়ে মারা-মারি,, ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে সবাই মিলে গান গাওয়া,, এক জনের টিফিন আরেক জনে খেয়ে ফেলা,, কলম আনি নাই বলে স্যার এবং ফ্রেন্ডদের থেকে কলম নিয়ে আর ফেরত না দেওয়া,, ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে বান্ধবীদের সাথে কথা বলা,, স্যার দের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ব্রার্থরুমে লুকিয়ে থাকা,, স্যার-ম্যাডাম দের ভয়ে চুল ঠীক করা,, কর্মাস ক্লাসের নাম দিয়ে এই বিল্ডিং থেকে অন্য বিল্ডিং এ ঘুরা-ঘুরি করা,, সুযোগ পেলেই স্যারদের সাথে ফাজলামো (পাম্প) করা/দেওয়া,, হয়ত বাহ আর পড়া হবে নাহ স্কুলে দাড়িয়ে "আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি",, আর কোন স্যার বলবে নাহ স্কুল ইউনি-ফ্রম টা কাল থেকে ঠিক করে আসবা,, না হলে স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হবে নাহ... আর কত কি?? হয়ত বাহ স্কুল লাইফের পড় কখনো দেখা হলে, পথের পথিক ভেবে চিনে ও চিনবি নাহ।। নয়ত বাহ নিজের ক্যারিয়ার গড়ায় ব্যস্ত থাকবি,, দেখা করতে বললে না না অজুহাত দেখাবি।। অথবা ১২ বছরের বন্ধুত্ব টা স্কুলের শেষ ঘন্টা পরার সাথে সাথে বন্ধুতের শেষ ঘন্টা টা ও বাজিয়ে দিয়ে যাবি।। কেউ হয়ত বাহ কলেজের ২বছরের ফ্রেন্ডদের পেয়ে ভুলে যাবি সেই ১২বছর যাবৎ কাটানো ফ্রেন্ডদের।। শত চেস্টা করলেও আর ফিরে পাব নাহ,, স্কুল জীবনের সেই মুর্হুুত গুলো।। অাজ থেকে সব কেন জানি ম্মৃতি বিদ্যালয়ের ম্মৃতি হয়ে গেল।। স্কুল জীবনটা কে খুব মিস করব তার থেকে বেশি মিস করব "তোদের" এবং "শেষ কয়েকটা ক্লাস" যেগুলো তে এক মুহুুতের জন্য সবাই ভুলেই গেছিলাম স্কুল বিদায়ের কথা। কিন্তুু বিদায় কালে আমাদের দীপক স্যার একটা কথা শুনে ভাল লাগল তা হল:- "আমাদের এই ২০১৫ পরিক্ষার্থী নাকি স্যারের প্রিয় ১টা ব্যাচ" যা নাকি তিনি ২০১৪ পরিক্ষার্থী থেকে পাইনি এবং ভবিষৎ তে পাবে কিনা জানেন না"" তোদের অনেক সময় অনেক কিছু বলছি-- মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে সবাই ক্ষমা করে দিস।। সবার জন্য শুভ কামনা রইল.... জানিনা স্কুল কে ভাল কিছু উপহার দিত পারব কি না -- কিন্তুু দেওয়ার চেস্টা করব। বিদায় দশম শ্রেণী..... বিদায়।
শেষে কবি কাজী নজরুল ইসলামের বাণীটি খুব মনে পরছে........
“ফোটে যে ফুল আঁধার রাতে ঝরে ধুলায় ভোর বেলাতে আমায় তারা ডাকে সাথী আয়রে আয় সজল করুণ নয়ন তোলো দাও বিদায়।।”
ধন্যবাদ সবাইকে
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ