শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

বুকে ব্যথা (Chest pain) বা অ্যানজাইনা (Angina)


নানা কারণে বুকে ব্যথা হলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হৃৎপিন্ডজনিত বুক ব্যথা। হৃৎপেশি যখন অক্সিজেন সমৃদ্ধ পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ পায় না তখন বুক নিষ্পেষিত হচ্ছে বা দম বন্ধ হয়ে আসছে এমন মারাত্মক অস্বস্তি অনুভূত হলে সে ধরনের

বুক ব্যথাকে অ্যানজাইনা বা অ্যানজাইনা পেকটোরিস (angina / angina pectoris) বলে। অ্যানজাইনাকে সাধারণত

হার্ট অ্যাটাকের পূর্বাবস্থা মনে করা হয়।


বুকে ব্যাথা বা অ্যানজাইনার লক্ষণ (Symptoms of Angina)


১. উরঃফলক বা স্টার্ণামের (sternum) পেছনে বুকে ব্যথা হওয়া।


২. ব্যয়াম বা অন্য শারীরিক কাজে, মানসিক চাপ, অতিরিক্ত ভােজন, শীতকাল বা আতংকে বুকে ব্যথা হতে

পারে। ব্যথা ৫-৩০ মিনিট স্থায়ী হয়।


৩. অ্যানজাইনা গলা, কাঁধ, চোয়াল, বাহু, পিঠ এমনকি দাঁতেও ছড়াতে পারে।


৪. অনেক সময় ব্যথা কোথেকে আসছে তাও বােঝা যায় না।


৫. বুকে জ্বালাপােড়া, চাপ, নিষ্পেষণ বা আড়ষ্ট ভাব সৃষ্টি হয়ে অস্বস্তির প্রকাশ ঘটায়।


৬. বুকে ব্যথা ছাড়াও হজমে গন্ডগােল ও বমি বমি ভাব হতে পারে।

৭. ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া কিংবা দম ফুরিয়ে হাঁপানাে দেখা দিতে পারে। অনেক রােগী অ্যানজাইনা টের পায় না, তবে কাঁধ ও বাহু ভারী হয়ে আসে। বুকে ব্যথার সাথে সাথে ঘাম হয়, মাথা ঝিমঝিম করে বা শরীর ফ্যাকাশে হয়ে যায়। রােগী চিন্তান্বিত থাকে, মাথা ঝুলে থাকে। সারাদিন দুর্বল ও পরিশ্রান্ত থাকে, সহজ কাজও কঠিন মনে হয়।

করণীয় |


বুকে ব্যাথা বা অ্যানজাইনার প্রতিকার (Control)


সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া এবং তা ধরে রাখাই হচ্ছে অ্যানজাইনা প্রতিরােধের প্রধান উপায় । এজন্যে কিছু বিষয়

বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা উচিত। কিছু বিষয় আছে যার নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নেই, যেমন-বয়স, লিঙ্গভেদ,

হৃৎরােগ ও অ্যানজাইনার পারিবারিক ইতিহাস। যে সব বিষয় আমাদের নাগালে তার মধ্যে রয়েছে ও হাঁটা-চলা বা ব্যায়াম

করা, স্থূলতা প্রতিরােধ করা, সুষম ও হৃৎ-বান্ধব খাবার খাওয়া, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা, ডায়াবেটিস

প্রতিরােধ বা নিয়ন্ত্রণে রাখা, ধূমপান ত্যাগ করা; মদপানের ধারে কাছে না যাওয়া, বছরে একবার (সম্ভব হলে দুবার)

সম্পূর্ণ শরীরের চেকআপ করিয়ে নেওয়া।


বুকে ব্যাথা বা অ্যানজাইনার চিকিৎসা:


বুকে ব্যথা হলে, আপনার ডাক্তার উপসর্গগুলির ব্যাপারে আপনার কাছে জানতে চাইতে পারেন, যেমন, যখন ব্যথা শুরু হয় আপনি তখন কি করছিলেন, আপনার পরিবারের কারোর এই সমস্যা আছে বা ছিল কিনা, আপনার খাদ্যাভাস, ধুমপানের অভ্যাস, লাইফস্টাইল, শরীরচর্চার অভ্যাস, শরীরের ওজন, উচ্চতা, কোমরের মাপ, বডি মাস ইনডেক্স, প্রভৃতি।

বুকে ব্যথার ক্ষেত্রে চিকিৎসায় সফলতা পেতে আপনাকে ডাক্তারের উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে হবে এবং আপনি কি কি সমস্যা অনুভব করছেন তা ডাক্তারের কাছে খুলে বলতে হবে।

ওষুধের দ্বারা যদি অবস্থার প্রতিরোধ না হয় তবে সার্জারীর প্রয়োজন হতে পারে।

পরিবর্তনশীল বুকে ব্যথার ক্ষেত্রে, রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করতে ও হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমাতে ওষুধ দেওয়া হয়।

তাৎক্ষনিকভাবে রোগীকে অল্প মাত্রায় অ্যাসপিরিন, ক্লপিডোগ্রেল, এবং রক্ত-তরলীকরণ করার ওষুধের ইনজেকশন দেওয়া হয়। যদি অবস্থা আরো জটিল হবার সম্ভাবনা থাকে অথবা অন্য কোন আনুসঙ্গিক সমস্যা সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে তবে সার্জারীর প্রয়োজন পড়ে।


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ