Dr. Md Rushad Rahman

Dr. Md Rushad Rahman

DrRushad

BMDC no: A-102864
  • MBBS(Rpmc),PGT(Medicine)
  • Indoor Medical Officer Rangpur Community Medical College Hospital,Rangpur
  • General Physician Paramount Medical Center,Dhaka Cantonment,Dhaka
300 ৳ consultation fee
771 Followers | 4245 Views

Chamber

About Dr. Md Rushad Rahman

চর্ম,যৌন,হাপানী,শ্বাসকষ্ট,বাতব্যথা,শরীর ঝিনঝিন,জয়েন্ট ব্যাথা,নিদ্রাহীনতা,মানসিক,প্রস্রাবজনিত সমস্যা,কোষ্ঠকাঠিন্য সহ যাবতীয় ইন্টার্নাল মেডিসিন জাতীয় সমস্যার সমাধান নিতে পারবেন।

Experience and Highlight

Lives in Rangpur 2013–present
Male
Married
Islam

Services

Work Experiences

Indoor Medical Officer at Rangpur Community Medical College and Hospital 2021–present

Skills

PGT(Medicine)

Language

Bengali/Bangla

Trainings

Rangpur Medical College and Hospital
  • PGT
  • 4/10/2020 - 4/10/2021

Education

Rangpur Medical College
  • Bachelor of Medicine and Bachelor of Surgery (MBBS)
  • medicine and surgery
  • 2013-2018

Social Profile

প্রশ্ন-উত্তর সমূহ 0 বার দেখা হয়েছে এই মাসে 0 বার
0 টি প্রশ্ন দেখা হয়েছে 0 বার
0 টি উত্তর দেখা হয়েছে 0 বার
0 টি ব্লগ
0 টি মন্তব্য
টাইমলাইন

এ এক অদ্ভুত বিষয়। শরীরের সব অংশ ঠিকঠাক, কেবল পা থেকেই ভীষণ দুর্গন্ধ। আর সেই দুর্গন্ধের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে আসেপাশের সবাই। যার পায়ে এই সমস্যা, সে নিজে ভুগতে থাকে অস্বস্তিতে। হয়তো এটি খুব সাধারণ সমস্যা বলে মনে করছেন। আসলে তা নাও হতে পারে। এটি হতে পারে ডায়াবেটিস বা কিডনির অসুখের লক্ষণও।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় পা ঘেমে এই সমস্যা দেখা দেয়। কারণ পায়ে ঘাম হলে সেখানে বৃদ্ধি পায় ব্যাকটেরিয়া। তখন জুতা-মোজা পরে থাকলে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তবে ঘামের সমস্যাই একমাত্র কারণ নয়। এছাড়া আরও অনেক কারণে দেখা দিতে পারে পায়ের দুর্গন্ধ। পায়ে দুর্গন্ধের সমস্যা সবার ক্ষেত্রে দেখা দেয় না। তুলনামূলক পুরুষদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।

পায়ের দুর্গন্ধের কারণ
এমন অনেকে আছেন যাদের পা তুলনামূলক বেশি ঘামে। সেখান থেকেই পচা এক ধরনের গন্ধ বের হয়। অতিরিক্ত ঘাম হলে সেই সমস্যাকে বলা হয় হাইপারহাইড্রোসিস। তবে কেবল পা-ই নয়, এই অসুখে রোগীর পুরো শরীরেই অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা দেখা দেয়। আপনার যদি এ ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দেয় তবে সতর্ক হোন।

প্রাইমারি ফোকাল হাইপারহাইড্রোসি
অনেক সময় অতিরিক্ত ঘাম হওয়া বা হাইপারহাইড্রোসিসেসের কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। এ ধরনের সমস্যাকে প্রাইমারি লোকাল হাইড্রোসিসস বলা হয়। এ ধরনের অসুখে আক্রান্ত হলে পা যেভাবেই পরিষ্কার করা হোক না কেন, ঘাম হবেই। সেইসঙ্গে দুর্গন্ধ তো থাকেই। তাই এ ধরনের অসুখ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সেকেন্ডারি ফোকাল হাইপারহাইড্রোসিস
মেডিক্যাল নিউজ টুডে অনুসারে, এ ধরনের হাইপারহাইড্রোসিসের থাকতে পারে অনেকগুলো কারণ। এ ধরনের সমস্যার নেপথ্যে জটিল কোনো অসুখ থাকাও অস্বাভাবিক নয়। এ কারণে চিকিৎসকরা পায়ে দুর্গন্ধ হলে পরামর্শ নেওয়ার কথা বলে থাকেন।

পায়ে দুর্গন্ধ হওয়ার পেছনে যেসব অসুখ থাকতে পারে-
* ডায়াবিটিস
* থাইরয়েড
* নার্ভাস সিস্টেমের সমস্যা
* লো ব্লাড প্রেশার
* ফাঙ্গাল ইনফেকশন
* মেনোপজ হট ফ্লাশেস
* কিডনির অসুখ।

যেভাবে মুক্তি পেতে পারেন
* নিয়মিত তাজা ফল, শাক-সবজি খেতে হবে। এর মানে হলো আপনার শরীর যেন পর্যাপ্ত ভিটামিনের জোগান পায় সেদিকে নজর রাখতে হবে।
* নিয়মিত পা পরিষ্কার করতে হবে। কেবল পানি দিয়ে নয়, সাবান দিয়েও পরিষ্কার করুন।
* বদ্ধ জুতা পরার আগে পাউডার দিয়ে নিলে দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

ভিডিও টি দেখুন এরপরেও ঘুমের সমস্যা হলে আমাকে কল দিন



0:00 পুরুষের যৌন সমস্যা
0:55 দ্রুত বীর্যপাত কি?
1:11 মিলনের স্বাভাবিক স্থায়ীত্ব কতক্ষণ?
2:25 দ্রুত বীর্যপাতের কারণ
4:38 দ্রুত বীর্যপাতের সমাধান
5:23 মিলনের স্থায়ীত্ব বৃদ্ধির উপায়
7:45 মিলনের স্থায়ীত্ব বৃদ্ধির খাবার
8:49 মিলনের স্থায়ীত্ব বৃদ্ধিতে কি ওষুধ খাবেন?
9:16 বীর্য পাতলা হলে কি সমস্যা হয়?

বদহজম কি?
বদহজম একটি বিরক্তিকর সমস্যা, যা মাঝেমধ্যে খুবই প্রকট হয়ে উঠতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় পরিপাকতন্ত্রে তেমন কোনো বড় সমস্যা না থাকা সত্যেও অনেকের খাদ্য হজমযহতে চায়না। সামান্য কিছু খেলেই পেট কামড়ায় তবে পায়খানা করলে অস্বস্তি বোধটা কমে যায়। এছাড়া অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য সহ পাতলা পায়খানা বেশি হতে পারে এ ধরনের সমস্যাকে ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রোম বা বদহজম বলা হয়। অতিরিক্ত বদহজম থেকে বুকের ব্যথাও হতে পারে। কতিপয় অভ্যাস ও সচেতনতার মাধ্যমে আমরা সহজেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি।


বদহজম এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
বদহজম এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে বুক জ্বালা, তলপেটে অস্বস্তি, শরীর ফোলা লাগা, গা গোলানো বা বমি ভাব, মুখের স্বাদ পরিবর্তন হয়ে যাওয়া, একনাগাড়ে ঢেকুর বা হেঁচকি ওঠা এবং ব্যথা, ঘন ঘন বমি, বমির সাথে রক্ত পড়া, ওজন বা খাবার ইচ্ছা কমে যাওয়া, কালো আলকাতরার মতন স্টুল, গিলতে সমস্যা বা কষ্ট হওয়া, ননএপিগ্যাসট্রিক অঞ্চলে ব্যথা, ঘাম, কম নিঃশ্বাস পড়া অথবা চোয়াল, গলা-ঘাড় বা হাত থেকে ব্যথার অনুভূতি। উপসর্গগুলি সাধারণত খাবার পর বেশি কষ্ট দেয়, বিশেষ করে যখন খুব মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা থাকে। অনেক ব্যক্তি বলে থাকেন যে কোনো সভা বা বৈঠক, পরীক্ষা বা কোনো উপস্থাপনার আগে এইসব উপসর্গগুলি খুব খারাপ অবস্থায় পৌঁছে যায়।

বদহজম এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
ক্রনিক গ্যাস্ট্রোইসোফেগাল রিফ্লাক্স রোগ বা পেটে আলসার বা ঘা থেকেই সাধারণত বদহজমের উপসর্গগুলি তৈরী হয়; যদিও, খুব সাধারণভাবে, অনুপযুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস, দীর্ঘ সময়ের পর খাবার খাওয়া, প্রচুর মাত্রায় ফ্লেভার যুক্ত খাবার খাওয়া এবং অ্যালকোহল বা মদ পান করার কারণে বদহজম হয়। এছাড়াও মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা, খাদ্যাভ্যাসে ভুল, ভরপেট খাওয়ার পর ব্যায়াম করা, অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ খাওয়া, ধূমপান করা, মদ্যপান, অতিরিক্ত কফি পান করা এবং অনিদ্রা বা ঠিক মতো ঘুম না হওয়ার কারণে বদহজমের সমস্যা বেড়ে যায়। অন্য কারণগুলি হল নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ সেবন করা যার ফলে গ্যাস্ট্রিক মিউকোসাল লাইনিং-এ অস্বস্তি বোধ হয়। গ্যাস্ট্রিক, পেপটিক আলসার, গলগণ্ড ও অগ্নাশয়ের সমস্যা, গলব্লাডারে পাথর, কিডনীতে পাথর, খাদ্য নালীর অপারেশন ইত্যাদি কারণেও বদহজম দেখা দিতে পারে।

বদহজমের সমস্যা কিভাবে নির্ণয় করা হয়?

  • বদহজম সমস্যা নির্ণয় করবার জন্য, ডাক্তার একজন মানুষের চলতি উপসর্গ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন।
  • পেপটিক আলসারের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া থেকে বদহজম হচ্ছে বলে সন্দেহ হলে ডাক্তার রক্ত, স্টুল অথবা শ্বাস-প্রশ্বাসের পরীক্ষা করাতে পারে।
  • বদহজমের তীব্র এবং দীর্ঘকালস্থায়ীত্বের ক্ষেত্রে, আলসার বা গ্যাস্ট্রিক রিফ্লাক্স চেক করার জন্য ডাক্তার আপনার এন্ডোস্কোপি করাতে পারে।
  • ডাক্তার বায়োপসি করাতে পারে- টিস্যুর একটা অল্প নমুনা নিয়ে মাইক্রোস্কোপের নীচে পরীক্ষা করা- জিআরইডি বা ইনফেকশন দ্বারা কোন ধরনের ক্ষতি হয়েছে কি না।
  • বদহজম যেহেতু অনেক গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে, সেক্ষেত্রে লোকজনের কোন সন্দেহ হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।


বদহজমের চিকিৎসা:
প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর এবং এইচ2- রিসেপ্টর ব্লকারগুলির মত ম্যাগনেসিয়াম সালফেট যুক্ত অ্যান্টাসিড বা খাবার ওষুধগুলি দিয়ে প্রধানত বদহজমের চিকিৎসা করা হয়। যেহেতু বদহজম হল মূলত একটি জীবনযাপন পদ্ধতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্যাধি তাই স্ব-যত্নের ব্যবস্থাগুলি এর চিকিৎসার একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে ধরা হয়। এই ব্যবস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে ধীরে সুস্থে খাওয়া, সঠিক সময় বা নিয়মিত খাবার খাওয়া, প্রচুর পরিমানে তরল পদার্থ পান করা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, চাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখা, অতিরিক্ত মসলাদার খাবার বা ফ্লেভার যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা, অনেক রাতে খাবার না খাওয়া, কফি এবং অ্যালকোহল ছেড়ে দেওয়া। জিরা বা কিউমিন পানির মিশ্রণ গ্যাস, পেট ফাঁপা এবং বুক জ্বালা কমাতে ভীষণ ভাবে সাহায্য করে। বদহজম যেহেতু একপ্রকার লক্ষণ অথচ কোন রোগ নয়, তাই বদহজম হবার অন্তর্নিহিত কারণ বুঝে তার চিকিৎসা নির্ভর করে। অনেক সময়ে, কোন ধরনের ওষুধ বা চিকিৎসা না করেও বদহজমের গল্প শেষ হয়ে যায়। যদিও বদহজম প্রাথমিক অবস্থায় তেমন মারাত্মক কোনো অসুখ না হলেও, দীর্ঘমেয়াদে এটি ক্যানসারসহ নানা মারাত্মক অসুখে মোড় নিতে পারে। তাই নিয়মিত বদহজমে ভুগতে থাকলে দেরি না করে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।

বদহজমের রোগীদের খাবার:
ময়দার রুটি বা পাউরুটি, সরু বা আতপ চালের ভাত, পোলাও, সাদা আটার রুটি ইত্যাদি খাবার নিয়মিত বদহজম হয় এমন রোগীর না খাওয়াই ভালো। চিপস, কুকিজ বা বেকারির বিস্কুট, কফি ও কার্বনযুক্ত পানীয়ও তাদের জন্য খারাপ। মাংসের তৈরি খাবারও তাদের সমস্যা বাড়াতে পারে। এমন রোগীদের জন্য পূর্ণ দানাদার শস্যের তৈরি খাবার উপকারী। যেমন : লাল চালের ভাত, লাল আটার তৈরি রুটি, ওটমিল, বরবটি, মটরশুঁটি, তাজা ফলমূল ও শাকসবজি তাদের জন্য ভালো। শুষ্ক ফল যেমন কিশমিশ খেতে পারেন। প্রচুর পানি পান করতে হবে। আঁশযুক্ত খাবারও খেতে হবে।
বদহজমের প্রতিরোধ:
বদহজম প্রতিরোধ করবার জন্য এখানে কিছু কার্যকারী পরামর্শ দেওয়া হল:

  • মুখ খুলে খাবার চিবোবেন না এবং চিবানোর সময়ে কথা বলবেন না অথবা খুব তাড়াতাড়ি খাবেন না, কারণ না হলে অনেকটা হাওয়া গিলে নেবার জন্য বদহজম বেড়ে যায়।
  • খাবার সময়ে পানি না খেয়ে খাবার খাওয়ার শেষে পানি খান।
  • বেশী রাত করে খাবেন না।
  • খাবার খাওয়ার পরে বিশ্রাম নিন।
  • ধূমপান বন্ধ করুন।
  • মদ্যপান করবেন না।


বদহজমের ঘরোয়া প্রতিকার:
বদহজমের কিছু সুপরিচিত ঘরোয়া প্রতিকার নীচে দেওয়া হল:

  • আদা পাকস্থলীর সমস্যা মেটাতে এবং বদহজমের সমস্যার উন্নতি ঘটাতে যথার্থই সুপরিচিত
  • পিপারমিন্ট তেল অন্ত্রের পেশীর খিঁচুনিকে উপশম দেয় এবং বমি বমি ভাবকে প্রতিরোধ করে।
  • বদহজম বন্ধ করবার একটা অসাধারণ পন্থা হল এক-চামচ মৌরি বা কেওড়ার বীজ চিবানো বা গিলে খাওয়া।
  • অপর একটা সুস্বাদু সমাধান হল মৌরি বা মৌরি-গাছ দিয়ে চা, যা দুই বা তিন চামচ গুঁড়ো বীজ দিয়ে বানানো।
  • অর্ধেক কাপ পানির সাথে এক-চামচ আপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে খেতে চেষ্টা করা যেতে পারে। আপনি যদি ডিনারে নিজের পছন্দমতো খাবার বেশী পরিমাণে খেয়ে থাকেন তাহলে এটা বিশেষভাবে কাজ দেবে।

শিরায় ব্যথা কি?
শিরায় ব্যথা এমন একটি অবস্থাকে বোঝায় যেখানে স্নায়ুকলায় আঘাত বা ক্ষতির ফলে ব্যথা সৃষ্টি হয়। এটি শরীরে ব্যথার অনুভূতিগ্রাহক অঙ্গে ভুল বা অস্বাভাবিক সংকেত পাঠিয়ে আঘাত না পাওয়া বা ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া অংশেও সংবেদনশীল ব্যথার অনুভূতি সৃষ্টি করে। এইভাবে শিরায় ব্যথার কারণে রোগীর জীবনের গুনগত মান কমে যায়। দেখা যায় যে ৭-৮% ব্যক্তি সারাবিশ্বে শিরায় ব্যথায় আক্রান্ত হয়।

শিরায় ব্যথার প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
ব্যথাটি শরীরের যে কোন অংশে হতে পারে, যেমন পেলভিক অঞ্চলে বা শ্রোণী অঞ্চলে ব্যথা, পেশীকঙ্কালে ব্যথা ও চোয়ালের আশেপাশের অংশে ব্যথা। প্রধান উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • তীব্র ব্যথা।
  • আক্রান্ত অঞ্চলের চারপাশে কাঁটা ফোটার মতো অনুভূতি।
  • যেখানে ব্যথার কারণ ঘটে নি সেখানেও ব্যথার অনুভূতি।
  • উচ্চ সংবেদনশীলতা।


শিরায় ব্যথার প্রধাণ কারণগুলি কি কি?
এর প্রধাণ কারণগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হল অস্ত্রোপচার বা আঘাতের কারণে স্নায়ুর মধ্যে চাপ সৃষ্টি। এর সাথে, নির্দিষ্ট কিছু সংক্রমণ, বিকৃত রক্তবাহী শিরা, এবং বিপাকীয় অবস্থা এই ব্যথার জন্য দায়ী। মেরুদণ্ড বা মস্তিষ্কের ক্ষত বা রোগগ্রস্ত অবস্থাও শিরায় ব্যথার কারণ হতে পারে।

কিভাবে শিরায় ব্যথা নির্ণয় করা হয় ও এর চিকিৎসা কি?
এর প্রাথমিক নির্ণয়গুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হল চিকিৎসাগত ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষার ফলাফল লিপিবদ্ধ করা। ব্যথার চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যগুলি নির্ণয় করা হতে পারে। চিকিৎসা নির্ভর করে ব্যথার ধরণের ওপর ভিত্তি করে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্ষত স্থানগুলির স্নায়বিক পরীক্ষা করা হতে পারে। ব্যথা নির্ধারক গণনা পদ্ধতিও ব্যবহার করা হতে পারে, অন্যান্য যন্ত্রপাতি, যেমন টুথপিক বা অন্য যন্ত্রপাতি, ব্যবহার করা হতে পারে স্নায়ুর সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করার জন্য, ইমেজিং বা প্রতিবিম্বকরণ পদ্ধতি যেমন, এমআরআই অথবা ত্বকের বায়োপসি করা হতে পারে স্নায়ুর কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য।

শিরায় ব্যথা কার্যকরীভাবে দূরীভূত করা যায় না তবে প্রাথমিক যত্ন নেওয়া যেতে পারে। প্রাথমিক চিকিৎসার অন্তর্ভূক্ত হল ব্যথা উপশম এবং পরবর্তীকালীন জটিলতা এড়ানো। প্রাথমিক চিকিৎসার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত হল অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস ব্যবহারের পর অ্যানাস্থেটিকস এবং আফিমজাতীয় ওষুধ সেবন, যদিও এগুলি সীমিত পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। অনেক সময় রিল্যাক্স পজিশনে থাকলে কিছু সময়ের মধ্যে ব্যথা চলে যায়। মাসল পুল হওয়ার পর পেশির ওই অংশ যদি টান টান করতে গিয়ে ব্যথা পান, তাহলে সেই চেষ্টা আর করা যাবে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। পেশির টানমুক্ত থাকতে বেশি বেশি পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

ওষুধ ছাড়া অন্যান্য যেসব চিকিৎসা পদ্ধতি আছে সেগুলি হল:

  • শারীরিক থেরাপি।
  • জ্ঞান সম্বন্ধনীয় আচরণগত থেরাপি।
  • চিত্তবিনোদন ও ধ্যান।
  • শিরায় ব্যথা অন্যান্য অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলির জন্য ঘটিত অবস্থার কারনেও হয়।


পরামর্শ:

  • দীর্ঘক্ষণ না বসে, এক ঘণ্টা পর পর কয়েক মিনিট পায়চারি করুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • যদি সম্ভব হয় সপ্তাহে অন্তত তিন দিন সাঁতার কাটুন।।
  • ব্যায়াম, খেলা বা অন্যান্য কাজ ধীরগতিতে শুরু করুন।
  • নেশাজাতীয় বদঅভ্যাস দূর করুন।
  • আঘাতের স্থানে কোন ধরণের বাম বা মলম মালিশ করা থেকে বিরত থাকুন।

এসব উপায় কাজে লাগিয়েও যদি সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

রাতকানা রোগ কি?
রাতকানা হল একটা রোগ যাতে রাতে বা স্বল্প আলোতে দৃষ্টিশক্তির অবনতি হয়। এই রোগে অপেক্ষাকৃত স্বল্প আলোয় দেখা কঠিন বা প্রায় অসম্ভব। এটা আসলে কতিপয় চোখের রোগের উপসর্গ। কারো ক্ষেত্রে জন্ম থেকে এই সমস্যা থাকে, এছাড়া চোখে আঘাত বা অপুষ্টির কারণে (যেমন ভিটামিন এ এর অভাব) এই সমস্যা হতে পারে। রাতকানা রোগে স্বল্প আলো বা অন্ধকারে চোখের অভিযোজন ক্ষমতা হ্রাস পায় বা নষ্ট হয়ে যায়।

রেটিনায় রড কোষ ও কোন কোষ নামে দুই ধরনের কোষ আছে যা যথাক্রমে স্বল্প ও উজ্জ্বল আলোতে কাজ করে। রড কোষে রোডপসিন নামক এক ধরনের রিসেপ্টর প্রোটিন থাকে। রোডপসিনের ওপর আলো পড়লে কয়েক ধাপে এর কিছু গাঠনিক পরিবর্তন হওয়ার মাধ্যমে বৈদ্যুতিক সঙ্কেত সৃষ্টি হয় যা অপটিক স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছায়। আলোর অনুপস্থিতিতে রোডপসিন পুনরুৎপত্তি লাভ করে। রোডপসিন সংশ্লেষণে ভিটামিন এ প্রয়োজন, এজন্য এই ভিটামিনের অভাবে রাতকানা রোগ হয়।

রাতকানা রোগ এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
রাতকানার প্রধান কারণ রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা নামক একটি রোগ, যার ফলে রেটিনার রড কোষ ধীরে ধীরে আলোর প্রতি সাড়া দেওয়ার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এটা একধরনের জেনেটিক রোগ যেখানে রাত্রিকালীন দৃষ্টির পাশাপাশি দিনের বেলা দেখার ক্ষমতাও নষ্ট হতে থাকে। রাত্রিকালীন অন্ধত্বের ফলে জন্ম থেকে রড কোষ জন্মের পর থেকেই কাজ করে না, বা অল্প পরিমাণ কাহ করে, কিন্তু এই অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে।

রাতকানা রোগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো রেটিনল বা ভিটামিন এ-এর অভাব। ভিটামিন এ মাছের তেল, কলিজা ও বিভিন্ন দুগ্ধজাত খাবারে পাওয়া যায়। ডায়রিয়া, হাম, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগের কারণে শরীরে ভিটামিনের অভাব দেখা দেয়। এই ভিটামিনের অভাবে রাতকানা রোগ হয়। বাচ্চা জন্মকালীন ওজন কম হলে, বাড়ন্ত বয়সে শরীরে অতিরিক্ত খাদের চাহিদা পূরণ না হলে এবং অপুষ্টিতে ভোগার ফলে এই রোগ হয়ে থাকে।

বিশেষ ঔষধ, যেমন ফেনোথায়াজিন গ্রহণের ফলেও রাতকানা রোগ হতে পারে। চোখের বিভিন্ন চিকিৎসা, যেমন ল্যাসিক, ফটোরেফ্রেক্টিভ কেরাটেক্টমি, র‍্যাডিয়াল কেরাটোটমির কারণেও রাত্রিকালীন দৃষ্টি হ্রাস পেতে পারে।

বাংলাদেশ-ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে, ভিটামিন এর অভাব খুব সহজেই দেখা যায় যার কারণ হল অপুষ্টি, এবং তারসাথে সঠিকভাবে পোষকপদার্থ শরীরে শোষিত না হওয়া। এরকমই আরেকটি সমস্যা, যা ভিটামিন এর অভাবের কারণে হয় না, সেটি হল রেটিনিটিস পিগমেন্টোসা, এটি একটি বংশগত রাতকানা রোগ যা জিনগত ত্রুটির কারণে হয়।

রাতকানা রোগ এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
চিকিৎসাগত লক্ষণ ও উপসর্গগুলি হল হালকা আলোতে দুর্বল দৃষ্টিশক্তি, রাতে ড্রাইভিং করার সময় অসুবিধা এবং লঘু পরিমাণে চোখের অস্বস্তি দেখা দেওয়া। প্রাথমিক লক্ষণগুলি হল অন্ধকারে চোখে খুব বেশী সমস্যা হওয়া কম মাত্রায় রেটিনাল সিরাম সঞ্চারের কারণে (1.0 মাইক্রোমোল/লিটার এর নীচে) এবং বিটটের দাগ। এই দাগ বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয় ভিটামিন এর অভাবে এবং চোখের পাশে (বাইরে) কোণাকৃতি, শুষ্ক, সাদাটে ফেনাবিশিষ্ট ক্ষত সৃষ্টি দ্বারা এর বৈশিষ্ট্যগুলি প্রকাশ পায়। প্রথমে ভোরে ও সন্ধ্যায় অল্প আলোতে দেখতে অসুবিধে হয়, একে রাতকানা বলে৷ পরে তার চোখ শুকিয়ে যায় (জেরোসিস), চোখের সাদা অংশের চকচকে ভাবটা চলে গিয়ে সেটা কুঁচকিয়ে যায়৷ চোখে ছোট ছোট ছাই রঙের বুদবুদ ভর্তি দাগ (বিটট্স স্পট) দেখা দেয়৷ এরপর চোখের কর্নিয়া নরম হয়ে যায়৷ কর্নিয়াতে ঘা হয়৷ কর্নিয়া ঘোলাটে হয়ে যায়৷ নরম কর্নিয়া ঠেলে ফোঁড়ার মতো বেরিয়ে আসতে পারে বা ফুটো হয়ে যেতে পারে৷ অবশেষে সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে যায়৷

কিভাবে রাতকানা রোগ নির্ণয় করা হয়?
রাতকানা রোগ নির্ণয় করা হয় চিকিৎসাগত পদ্ধতি ও চিকিৎসাগত পূর্ব ইতিহাস জানা এবং তার থেকে ভিটামিন এ সিরামের কম মাত্রায় উপস্থিতি প্রমাণের মাধ্যমে, বিটটের দাগ ও ইলেক্ট্রোরেটিনোগ্রাফীর অস্বাভাবিক ফলাফল রডের কার্যকারিতা কমে যাওয়াকে প্রমান করে।

রাতকানা রোগ এর চিকিৎসা কি?
২,০০,০০০ আইইউ ভিটামিন এ তিনদিন সেবনের মাধ্যমে, ও তারপর ৫০,০০০ আইইউ ভিটামিন এ পরবর্তী ১৪ দিন অথবা ১-৪ সপ্তাহ পর পর্যায়ক্রমে একটি বাড়তি ডোজ নেওয়ার মাধ্যমে এই রাতকানা রোগের চিকিৎসা করা ও রোগটির সম্পূর্ণ নিরাময় করা হয়। তবে এক বছরের কম বয়সী শিশুরা একই নিয়মে অর্ধেক ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাবে অর্থাৎ প্রতিবারে চার ফোঁটা৷ কারণ একটি ক্যাপসুলে মোট আট ফোঁটা ওষুধ থাকে৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাদ্যের বেশিরভাগ উৎস উদ্ভিতজাত, যেমন লালশাক, গাজর, বেল পেপারস, ক্যাপসিকাম, লেবুজাতীয় ফল, পাকা পেঁপে, আম, এবং অন্যান্য লাল-হলদে রঙের ফল ও শাকসবজি। প্রাণীজ উৎসগুলি হল, ডিম ও মাখন, যেগুলি হল ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। যারা ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ওষুধ সেবন সহ্য করতে পারেন না, তাদের জন্য পেশীতে ভিটামিন এ প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। যেহেতু ভিটামিন এর অভাব হল একটি পদ্ধতিগত রোগ, তাই চোখের ড্রপ ব্যবহারে কোন সুফল পাওয়া যায় না।

রাতকানা প্রতিরোধে কি ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা যায়?
একটু সতর্ক ও সচেতন থাকলেই রাতকানা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
প্রতিরোধ:

  • বাচ্চাকে প্রথম ৫ মাস শুধু বুকের দুধ খাওয়াতে হবে৷ বুকের দুধ শিশুকে রাতকানা হওয়া থেকে রক্ষা করে৷ বুকের দুধ সম্ভব হলে শিশুর দুই বছর বয়স পর্যন্ত খাওয়াতে হবে৷
  • বাচ্চা হবার দুই সপ্তাহ পর মাকে ২ লক্ষ আই.ইউ. ভিটামিন-এ এর ১ ডোজ খাওয়াতে হবে৷
  • শিশুকে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাবার (হলুদ ফলমূল ও শাক-সবজি, ডিম/দুধ/কলিজা, মাছ, মাংস,) খাওয়াতে হবে৷
  • ৬ মাস বয়স থেকে শুরু করে ৬ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি ৬ মাস অন্তর উচ্চ মাত্রার ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে৷
  • অপুষ্টি রোধ করতে হবে৷
  • বাচ্চা অপুষ্টিতে ভুগলে, হাম, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসার পাশাপাশি ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে৷
  • চোখের কালো অংশে কোনও পরিবর্তন (যেমন- ধোঁয়াটে, ঘোলা, ছিদ্র, সাদা হওয়া) দেখা দিলে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে৷


পরামর্শ:
প্রতিদিন ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে যেমন-

  • গার সবুজ শাক যেমন- কচু-শাক, পুঁইশাক, পালংশাক, মূলা-শাক ইত্যাদি৷
  • হলুদ সবজি যেমন- মিষ্টি কুমড়া, গাজর ইত্যাদি৷
  • হলুদ ফল যেমন- পাকা কাঁঠাল, পাকা আম, পাকা পেঁপে ইত্যাদি৷
  • প্রাণী জাতীয় খাদ্য বা প্রোটিন জাতীয় খাদ্য যেমন- দুধ, ডিমের কুসুম, কলিজা, ছোট মাছ ইত্যাদি৷


শাক-সবজি অবশ্যই তেল দিয়ে রান্না করতে হবে৷ তেল দিয়ে রান্না করে খেলে ভিটামিন-এ বেশি পাওয়া যায়৷ এ ছাড়া ৬ মাস বয়স থেকে শুরু করে ৬ বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিশুকে ৬ মাস পর পর একটি করে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে৷ ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর মাত্রা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিকভাবে অবশ্যই মেনে চলতে হবে। মাত্রাতিরিক্ত ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খেতে দেয়া বিপদজনক৷ এতে করে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে৷

বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজির চাষ:
যেহেতু বাংলাদেশের অধিকাংশ লোকই দরিদ্র৷ তাই স্বাভাবিক কারণেই ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ বেশি দামের খাদ্য যেমন- মাছ, কলিজা, দুধ ডিম, পনির, মাখন প্রভৃতি কিনতে পারে না৷ ভিটামিন-এ যুক্ত শাক-সবজি বাড়ির আঙিনায় জমিতে চাষ করলে সহজে ভিটামিন-এ এর চাহিদা মেটানো যায়৷

বুকের দুধ খাওয়ানোর অভ্যাস:
শিশুর জন্মের পর মায়ের শাল দুধ খাওয়াতে হবে৷ কারণ শাল দুধে অধিক মাত্রায় ভিটামিন- এ থাকে৷

রিকেট রোগ কি?
রিকেট হলো একটি রোগ যা ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের অভাবের কারণে হয়। এটি হাড়ের স্বাস্থ্যের উপর ভীষণ প্রভাব ফেলে, পাশাপাশি শিশুদের এবং বয়ঃসন্ধিদের মধ্যে বৃদ্ধি এবং বিকাশে, এমন কি বয়সকালেও মারাত্মক প্রমাণিত হয়েছে। কারণ এটি হাড়কে নরম, দুর্বল করে দেয় এবং হাড়ের বৃদ্ধি খুব বেদনাদায়ক হয় এবং এর ফলে অঙ্গবিকৃতিও হয়। এই অবস্থাকে শিশুদের মধ্যে হলে রিকেট এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে হলে অষ্টিওমেলাসিয়া বলা হয়।

রিকেট রোগের লক্ষণ:
রিকেট রোগের লক্ষণগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল:

  • এই রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ সাধারণত রোগ সৃষ্টির প্রথম বা দ্বিতীয় বছরে দেখা দিয়ে থাকে।
  • এই রোগের শিশুর দেহ শীর্ণ হয় এবং কঙ্কালসার চেহারা ও দেখা দিয়ে থাকে।
  • এই রোগে বুক পায়রার বুকের মত সংকীর্ণ হয় । একে বলা হয় Pigeon Breast অবস্থা।
  • শিশুর দাঁত উঠতে দেরি হয় মাথার তালু সহজে শক্ত হতে চায়না।
  • পেটের মাংসপেশিগুলো দুর্বল হয়ে ফুলে ওঠে।
  • রিকেট রোগে চুল উস্কোখুস্কো হয় শিশু দেরিতে হাটে, মাংসপেশিতে টান থাকে না।
  • মাথার নরম হাড় গুলি চেপে ছেড়ে দিলে পিংপং বলের মতো মনে হয়।
  • শারীরিক বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার দরুন শিশু বয়সের তুলনায় ছোট মনে হয়।


রিকেট রোগের জটিল উপসর্গ:

  • মাঝে মাঝে শিশু অতিরিক্ত শীর্ণতা ও পেটের গোলমালে মৃত্যুর মুখে পতিত হয়।
  • দেহের বৃদ্ধি ঠিকমতো হয় না এবং ক্ষীণজীবী ও দুর্বল হয়।
  • দেহের হাড় বাঁকা বাঁকা হবার জন্য হাত পা বাঁকা বাঁকা মতো হয়।
  • বৃদ্ধি ঠিকমত না হওয়ার জন্য বেঁটে গড়ন হয়।


রিকেট রোগের প্রধান কারণগুলি কি কি?
রিকেট রোগের খুব সাধারণ কারণ হলো ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের অভাব। নিচে উল্লেখ করা এই ঘাটতিগুলি সবচেয়ে সাধারণ কারণ:

  • পুষ্টির অভাব।
  • ভিটামিন ডি এর শোষণে অক্ষমতা।
  • সূর্যরশ্মিতে ত্বকের অপর্যাপ্ত প্রকাশ।
  • গর্ভাবস্থা।
  • অকালজাত বা সময়ের আগে জন্ম হওয়া।
  • স্থূলতা।
  • কিডনি এবং লিভারে রোগ।
  • নির্দিষ্ট কিছু অ্যান্টিকনভালস্যান্টস (খিঁচুনির জন্য) বা অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল (এইচআইভির জন্য) ওষুধ
  • ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট ঘাটতির কারণে খনিজকরণের ত্রুটিগুলিকে যথাক্রমে ক্যালসিপেনিক এবং ফসফোপেনিক রিকেট হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। খনিজকরণের ত্রুটি, ভিটামিন ডি থেকে বিচ্ছিন্ন অথবা দ্বিতীয় পর্যায়ভুক্ত ঘাটতি, বৃদ্ধির প্লেটের নীচে হাড়ের কোষে অস্টিওড (অখনিজ উপাদান) সঞ্চয় করে। এই কারণে নির্দিষ্ট সময়ের পর হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং বেঁকে যায়।


রিকেট রোগ কিভাবে নির্ণয় করা হয়?
ভিটামিন ডি এর ঘাটতি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এর মাত্রা, ক্ষারীয় ফসফাটেজ, ফসফরাস এবং প্যারাথাইরয়েড হরমোনের মাত্রা জানার জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়। যেখানে হাড়ের মধ্যের পরিবর্তন দেখা যায়, তার জন্য এক্স-রে পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়। হাড়ের বায়োপসি প্রয়োজন হতে পারে এবং রিকেট বা অস্টিওম্যালাসিয়া নির্ণয়ের জন্য এটি হল সবচেয়ে সঠিক পদ্ধতি।

রিকেট রোগ এর চিকিৎসা:

  • শিশুর দেহে সূর্যের আলো পড়তে দিলে সুফল পাওয়া যায়।
  • শিশুর দেহে রোজ কডলিভার অয়েল মালিশ করতে হবে , অথবা খাঁটি সরষের তেল মাখিয়ে রোদে রাখতে হবে কিছুক্ষণ (শীতকালে) ।
  • হাড় দুর্বল হলে Splint লাগাতে হবে।
  • অভাবের প্রকৃতি এবং তীব্রতা নির্ধারণ করে ভিটামিন ডি-এর যথাযথ ডোজ এবং যতক্ষণ না এক্স-রের ফলাফল স্বাভাবিক হয় ততক্ষণ ক্যালসিয়াম সম্পূরক দেওয়া হয়।


পার্থক্যমূলক রোগনির্ণয়:
রিকেট রোগগ্রস্ত শিশুদের প্রায়ই হাড় ভেঙে যায়। যেটা অনেক সময় শিশু অপব্যবহারে অভিযুক্ত হয়। এই অবস্থাটা দুর্বল পুষ্টি এবং ভিটামন ডি সম্পূরক না-থাকা, শীতে নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় একমাত্র কালো চামড়াযুক্ত মায়েদের শিশুপালনে সাধারণভাবে দেখা যায়। একই পরিমাণ সূর্যালোকে হালকা চামড়ার মানুষদের থেকে অপেক্ষাকৃত কালো চামড়ার মানুষদের শরীরে কম পরিমাণ ভিটামিন ডি তৈরি হয়।

রিকেট রোগে ভিটামিনের ভূমিকা:
ভিটামিন মানব শরীরে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শরীরে ভিটামিনের অভাব হলে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়। এক ভিটামিন অন্য ভিটামিনের অভাব পূরণ করতে পারে না। ভিটামিন-ডি মানব শরীরে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আমাদের প্রায় সকলেরই অজানা যে সূর্যালোক হচ্ছে ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস। মায়েরা ঠিকমতো শিশুদের গায়ে সূর্যালোক পড়তে দেন না। কিন্তু এই বিষয়টি মোটেও ঠিক নয়। প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময় শিশুদের গায়ে সূর্যালোকের তাপ লাগানো উচিত। যেমন শীতপ্রধান দেশে সারা বছরই সূর্যালোক তেমনভাবে পৌঁছায় না, সেই কারণে শীতপ্রধান দেশে শিশুদের সূর্যালোকের পরিবর্তে ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খাওয়ানো হয়। মাছের তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। শিশুদেরকে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করার জন্য কড লিভার অয়েল খাওয়ানো হয়। ভিটামিন ডি পাওয়া যায় দুধ, মাখন, ডিম ও যকৃতে।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা:
কয়েকটি সহজ ব্যবস্থা রিকেট রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পরে। আপনি অবশ্যই:

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করুন যাতে দুগ্ধজাত খাবার এবং ডিম অন্তর্ভুক্ত থাকে।
  • বাইরে সময় কাটান, বিশেষ করে সকালের রোদে।
  • ডাক্তারের সাথে পরামর্শের পর ভিটামিন ডি-এর সম্পূরক গ্রহণ করুন।