Call

বৈরাগ্য-সাধনে মুক্তি, সে আমার নয় অসংখ্য বন্ধন মাঝে মহানন্দময় লভিব মুক্তির স্বাদ।

 ,

সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না নিয়েই মানুষের জীবন। একজন মানুষের সাফল্য তখনই আনন্দদায়ক হয় যখন তাতে সকলের অংশগ্রহণ থাকে। পৃথিবীতে কেউই পরিপূর্ণভাবে সুখী হতে পারে না। জীবনে চলার পথে অনেক বাধা বিপত্তি আসতে পারে। তাই বলে ভেঙ্গে পড়া উচিত নয়। সমাজে এক শ্রেণির মানুষ আছে যার দুঃখ-কষ্টকে ভয় পায়। তারা মনে করে সংসার হল একটি বিষাদময় স্থান। সংসারের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার উত্তম উপায় হল সংসার ধর্ম ত্যাগ করা। কিন্তু বৈরাগ্য সাধন করলেই মুক্তি মেলে না। কোনো কিছুই সহজে পাওয়া যায় না। মানুষ তা জানলেও বুঝতে চায় না। সুখ-দুঃখ একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ মাত্র। কষ্টের পরই সুখ আসে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় দশ বছর সন্ন্যাসে ছিলেন। কিন্তু তিনি সুখী হতে পারেননি। যে সুখ বিনাকষ্টে অর্জিত হয় তা স্থায়ী হয় না। যারা সংসারের দুঃখ-কষ্ট সহ্য করার ভয়ে সংসার ত্যাগ করে তারা কাপুরুষ ছাড়া কিছু নয়। কথায় আছে “পরাজয়ে ডরে না বীর”। একজন মানুষের উচিত সকলকে সাথে নিয়ে বিপদ-আপদ মোকাবেলা করা এবং অনুরূপভাবে সকলের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করা। সংসারের সকলের সাথে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মাধ্যমেই মানুষ প্রকৃত মুক্তির স্বাদ উপলব্ধি করে। অন্যদিকে দুঃখ-কষ্ট থেকে বাঁচতে যারা সংসার ত্যাগ করে তারা কখনো মুক্তির সন্ধান পায় না।

শিক্ষা: সংসার ত্যাগ করে মানুষ কখনও সুখী হতে পারে না। মানুষ সামাজিক জীব। সমাজ ও সংসারের সকলকে নিয়েই মানুষকে সুখী হতে হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Jobedali

Call

বৈরাগ্য সাধনে মুক্তি, সে আমার নয়।

অসংখ্য বন্ধন-মাঝে মহানন্দময়

লভিব মুক্তির স্বাদ।

মূলভাব : এ পৃথিবীতে একদল মানুষ আছেন যারা মনে করেন সমাজ-সংসার ছেড়ে, ইন্দ্রিয় দমন করে নির্জনে সাধনা করলে বুঝি মোক্ষলাভ হয়। তাদের একমাত্র ধারণা- ‘ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা’। 

সম্প্রসারিত ভাব : জ্ঞানমার্গের সাধক, যোগীরা তাই বৈরাগ্য সাধনে মুক্তি খুঁজেন। কিন্তু রূপসাগরেই যে নিহিত আছেন অরূপরতন, 

‘ডুব ডুব রূপ সাগরে আমার মন। 

খোঁজ খোঁজ খুঁজলে পাবি হৃদয় মাঝে বৃন্দাবন।’ 

রূপসাগরে ডুব দিয়েই যে অরূপ রতন মেলে। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়,

‘পথের দুই ধারে যে ছায়া, যে সবুজের ঐশ্বর্য, যে ফুল পাতা, যে পাখির গান, সেই রসের জোগান দিতেই আমরা আছি। যে বিচিত্র বহু হয়ে খেলে বেড়ান দিকে দিকে, সুরে, গানে, নৃত্যে, চিত্তে, বর্ণে বর্ণে, রূপে, সুখ-দুঃখের আঘাতে-সংঘাতে, ভালো-মন্দের দ্বন্দ্বে-তাঁর বিচিত্র রসের বাহনের কাজ আমি গ্রহণ করেছি। তাঁর রঙ্গশালার বিচিত্র রূপকগুলোকে সাজিয়ে তোলার ভার পড়েছে আমার উপর, এ আমার একমাত্র পরিচয়।’

এ রূপনিকেতন থেকে মন ও দৃষ্টি সরিয়ে গাম্ভীর্যে নিজেকে গড়খাই করে তোলার মধ্যে কোন বাহাদুরি নেই। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, 

‘মুক্তি? ওরে মুক্তি কোথায় পাবি, 

মুক্তি কোথায় আছে। 

আপনি প্রভু সৃষ্টি বাঁধন প’রে 

বাঁধা সবার কাছে।’ 

সুতরাং, অসংখ্য বন্ধন মাঝেই মহানন্দময় মুক্তির স্বাদ লাভ করা সম্ভব। পঞ্চাইন্দ্রিয় যার সজীব ও পুলকিত তিনিই হতে পারেন জিতেন্দ্রিয়। তার মধ্যে অলীক কিছু নেই, অলৌকিকও নেই এক ফোঁটা। দর্শন যাকে দর্শন করেনি, উপাসনালয়ে দর্শনী দিয়ে যার দেখা পাওয়া যায় নি কোন কালে বিশ্বের মধ্যেই সেই বিশ্বেশ্বরের আসন। জগতের প্রত্যেকটি বস্তু সৃষ্টি-ক্রিয়াশীল ঈশ্বরের অস্তিত্ব-মহিমা প্রকাশ করছে। তাঁর প্রকাশ পৃথিবীর রূপ, রস, গন্ধ ও শব্দের মধ্যেই। 

কাজেই পৃথিবী যার চোখে সুন্দর হয়ে উঠে ঈশ্বর তার উপরই সন্তুষ্ট হন। সংসারে থেকেই, আপন কর্তব্য সাধনেই প্রেমসুন্দর ঈশ্বরকে লাভ করা যায়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ