দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ : ভাবসম্প্রসারণ

অথবা

যে একা সে-ই সামান্য,

যাহার ঐক্য নাই, সেই তুচ্ছ : ভাবসম্প্রসারণ

অথবা

ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকণা, বিন্দু বিন্দু জল

গড়ে তোলে মহাদেশ, সাগর অতল : ভাবসম্প্রসারণ

অথবা

একতাই বলঅথবাদশের লাঠি একের বোঝা : ভাবসম্প্রসারণ


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ

 ,

পৃথিবীর ছোট বড় যেকোনো কাজে সম্মিলিত অংশগ্রহণের মধ্যেই সর্বোত্তম সফলতা নিহিত। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাঝে আছে বিপুল উৎসাহ, বিজয়ের দুর্দমনীয় নেশা আর অফুরন্ত উদ্দীপনা। ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে সফলতার সম্ভাবনাই থাকে বেশি। অন্তত পরাজিত হওয়ার আগে পরাজয়ের নেতিবাচক মানসিকতা স্থান পায় না মিলিত শক্তিতে। সবাই মিলেমিশে কাজ করতে গিয়ে পরস্পরের মাঝে তৈরি হয় একতা, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ। সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এক সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে সৃষ্ট সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্ববোধের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে তৈরি করেছে সমাজ ও রাষ্ট্রের মতো ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী সংগঠন। ঐক্যবদ্ধ মানুষের কাছে তুচ্ছ হয়ে যায় অস্ত্রের ক্ষমতা। একক ব্যক্তিসত্তা একতাবদ্ধ হয়ে পৃথিবীর যেকোনো পরাক্রমশালী শক্তিকে হারিয়ে দিতে পারে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত বিশাল পাক হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে দিয়েছিলেন ঐক্যমন্ত্রে দীক্ষিত আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা। আর সমবেতভাবে কাজ করার মাঝে হার-জিত মুখ্য বিষয় নয়। সমবেত কাজ জয় পরাজয়কে ছাপিয়ে মহত্তম হয়ে ওঠে সম্মিলনের সৌন্দর্যে। তাছাড়া সমবেত কাজে বিজয়ের আনন্দ যেমন সকলের, তেমনি ব্যর্থতার দায়ভার ও গ্লানিও সকলের। একক কাজের ক্ষেত্রে পরাজয়ের গ্লানিও একাকী নিজেকে বহন করতে হয়। সম্মিলিত কাজ ব্যর্থতার গ্লানিও সমভাবে সবার ওপরে বর্তায় বলে গ্লানিবোধ তীব্র হয় না।

শিক্ষা: সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণে কাজের সফলতা ব্যর্থতা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। মিলেমিশে কাজ করে ব্যর্থ হলেও লজ্জা কিংবা অগৌরব নেই।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Jobedali

Call

দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ।

অথবা

যে একা সে-ই সামান্য,

যাহার ঐক্য নাই, সেই তুচ্ছ

অথবা

ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকণা, বিন্দু বিন্দু জল

গড়ে তোলে মহাদেশ, সাগর অতল

অথবা

একতাই বলঅথবাদশের লাঠি একের বোঝা

মানুষ কখনো একা চলতে পারে না, পৃথিবীতে যে ব্যক্তি নিঃসঙ্গ এবং একা, নিঃসন্দেহে সে অসহায়।

পৃথিবীর আদিকালে মানুষ ছিল চরম অসহায়। কারণ তখন সে ছিল একা, ঐক্যবদ্ধহীন। একজন একাকী মানুষ তার সীমিত সামর্থ্যের দ্বারা বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না; এক্ষেত্রে প্রয়োজন ঐক্যের। ঐক্যবদ্ধ মানুষের কাছে কোনো বাধাই বাধা নয়। অতি ছোট ছোট বালুকণা মিলে যেমন মহাদেশ গড়ে ওঠে, তেমনি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শক্তির সমন্বয়ে গড়ে ওঠে বৃহত্তর ঐক্যবদ্ধ শক্তি। বিশাল এ পৃথিবীতে একজন একাকী মানুষ অতি সামান্য ব্যক্তি মাত্র। এ সামান্য অসহায় ব্যক্তিই ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে এক অপরাজেয় শক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারে। তাই কথায় বলে, ‘একতাই বল’। সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে বৃহত্তর কল্যাণের জন্য তাই বৃহত্তর ঐক্য একান্ত প্রয়োজন। বলা আবশ্যক যে, সৃষ্টির আদি থেকে বর্তমান পর্যন্ত যা কিছু উন্নতি ও মহৎ কাজ সম্পন্ন হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে এক প্রচ্ছন্ন ঐক্যের বন্ধন। অনৈক্যের মাঝে জীবন দুর্বিষহ। যেখানে অনৈক্য সেখানেই পতন। কাজেই সকল সংকীর্ণতা ও বিভেদ ভুলে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। এরই ফলে সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্বের কল্যাণ ত্বরান্বিত হবে। ঐক্যহীন মানুষ কখনো জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে পারে না।

যারা ঐক্যবদ্ধ তাদের শক্তি অসীম। ঐক্যই প্রকৃত শক্তি। আমাদের জাতীয়, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে একতার প্রয়োজন সর্বাধিক। মাটির পৃথিবীতে ছোট ছোট পিঁপড়ার মধ্যেও আমরা ঐক্য লক্ষ করি। তারা নিয়মশৃঙ্খলা অনুযায়ী ঐক্যব্ধ হয়ে চলাফেরা করে এবং ঐক্যবদ্ধ শক্তির মাধ্যমেই তাদের আকৃতির তুলনায় অনেক বড় জিনিস বহন করতে পারে। মানুষ এককভাবে সামান্য আর তুচ্ছ বলেই সভ্যতার উন্নতির বিকাশে চাই মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। তাই আমরা সুনিশ্চিত হতে পারি এ ব্যাপারে যে, মানুষ একা যা করতে পারে না দশজনে তা খুব সহজেই করতে পারে। তাই বলা যায় দশে মিলে করি কাজ কাজ করলে হার জিতের লজ্জা থাকে না। একতাবদ্ধ হয়ে সমাজের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো যায়। তাই এটা চরম সত্য যে, যে একা সে সামান্য; তার দ্বারা আমরা কঠিন বা বড় কোনো কাজ আশা করতে পারি না।

কোনো বড় ধরনের কাজে সফলতা লাভ করতে হলে অবশ্যই একতা বা ঐক্য একান্তভাবে প্রয়োজন। একজনের নিকট যা বোঝা, দশজনের নিকট তা সামান্য। সুতরাং সমাজে বড় হয়ে বা সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করতে হলে অবশ্যই ঐক্যের প্রয়োজন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Sumya Akter

Call

মূলভাব : দশজনে মিলেমিশে কাজ করার আনন্দ ও শক্তি দুই-ই আলাদা। তাতে হার ও জিতের কোন ভয় নেই। লাজ-লজ্জা পাওয়ারও কিছুই নেই।

সম্প্রসারিত-ভাব : কথায় বলে ‘একতাই বল’। শুধু কথায় নয়, কাজেও তাই প্রমাণ পাওয়া যায়। আমরা যে কাজটি একা করতে লজ্জা বা ভয় পাই, সেটি যদি কয়েকজন মিলে মিশে করি, তবে আর সেখানে কোন লাজ লজ্জা, ভয় ডর থাকে না। কারণ সেখানে হারলে সবাই হারবে জিতলে সবাই জিতবে। এককভাবে যেমন কেউ লজ্জার ভাগী হবে না, তেমনি এককভাবে কেউ আনন্দও ভোগ করবে না। যে পরিণতি হবে তা সবার ওপরেই বর্তাবে। সুতরাং সেখানে হার, জিত নিয়ে কোন চিন্তা থাকে না। তা ছাড়া একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করলে যেমন আনন্দ পাওয়া যায় তেমনি শক্তিও বেশি পাওয়া যায়। ফলে অল্প আয়েশে কাজটি সুসম্পন্ন করা সম্ভব হয়। একা একা কাজ করা যায় বটে। কিন্তু তাতে নানা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকে, হার-জিতের প্রশ্ন আসে। দশজনে মিলে কোন কাজ করলে আর সে প্রশ্নটি আসে না। আর তাছাড়া সব কাজ একার পক্ষে সব সময় সম্ভবও হয় না। যেমন সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় বৃহত্তর কার্যসমূহ সম্পাদনের জন্য ঐক্যবদ্ধ শক্তি অপরিহার্য। ঐক্যবদ্ধ শক্তি ছাড়া বৃহৎ কোন কাজ সম্পন্ন করা যায় না। কাজেই সেসব কাজ সূসম্পন্ন করার জন্য দশজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টার কোন বিকল্প নেই। কিন্তু তাতে যদি পরাজয় আসে তাও অগৌরবের কিছু নেই। যেমন শুধু কোন রাষ্ট্রনায়কের একক প্রচেষ্টার দ্বারা জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষা করা যায় না। সে জন্য প্রয়োজন বৃহত্তর শক্তি। এক কথায় নাগরিকদের সম্মিলিত শক্তি ও প্রাণপণ প্রচেষ্টা। কিন্তু যদি শত্রুপক্ষ মহাপরাক্রমশালী হয় এবং তাদের কাছে নেটিভরা হেরেই যায়। তাতেও তাদের অগৌরবের কিছু নেই বা পরাজিত হওয়ার গ্লানি নেই। কারণ, তারা সম্মিলিতভাবে বীরের মত লড়াই করে হেরেছে। বরং এতে তাদের গৌরবই দীপ্ত হয়ে উঠবে।

সম্মিলিত প্রচেষ্টা সাধারণত সর্বত্রই বিজয়ী হয়। কদাচিৎ পরাজিত হলেও বিজয়ী হয়। কদাচিৎ পরাজিত হলেও তাতে লাজ লজ্জার প্রশ্ন আসে না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Unknown

Call
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ