Call

নদীর এপার কহে ছাড়িয়ে নিঃশ্বাস ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস

 ,

সুখ-দুঃখ, বেদনা নিয়েই মানুষের জীবন। কেউই চিরন্তন সুখী বা দুঃখী নয়। সে সব সময় নিজের চেয়ে অন্যকে সুখী ভাবে। কারণ মানুষ তার অসীম চাহিদার সমন্বয় করতে পারে না। ক্ষুদ্র জীবন পরিসরে মানুষ যখন যেটি চায় সেটিই তার একমাত্র আরাধ্য বস্তু নয়। একটি জিনিসের অভাব মেটানোর পর অন্য জিনিসের প্রতি তার আকাক্সক্ষা জন্মে। এই অাকাঙ্ক্ষা অনেক সময় পূর্ণ হয় না। অনুরূপ নদীর এক তীর ভাবে অপর তীরে সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ। অপর তীরের ধারণা একই। তাই উভয়কেই অতৃপ্ত এবং অসন্তুষ্ট দেখা যায়। নদীর এক কূল ভাবে যাবতীয় শোভা- সৌন্দর্যের প্রাণকেন্দ্র ওপারে। অন্য কূল তার নিজের সুখের কথা ভুলে একই রকম অতৃপ্তির যন্ত্রণায় কাতর হয়। ফলে এমন চিন্তা সুখ শান্তির ব্যাঘাত ঘটায়। মানুষের ক্ষেত্রেও বিষয়টি ঠিক তেমনি। সে নিজের চেয়ে অন্যকে বেশি সুখী মনে করে। মানুষ আসলে নিজে কী চায়, কী তার কাম্যবস্তু তা নিজেই সে জানে না। সে যা চায়-তা পাওয়ার পর তার প্রতি তার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং আরও নতুন কিছু চায়। অপরের প্রাপ্তি দেখে হিংসাবোধ করে। পরকে সুখী মনে করে পরশ্রীকাতর হয়ে পড়ে। আর তখনই মানুষ অন্যের অকল্যাণ প্রত্যাশা করে। তার কাছে অন্যের সুখই বড় হয়ে উঠে। নিজের সুখে তৃপ্তি হয় না। এ ধরণের লোকেরা সর্বদাই না পাওয়ার অতৃপ্তিতে ভোগে। নিজের প্রাপ্তির মধ্যে সুখ না খুজে অপরের প্রাপ্তি দেখে হা-হুতাশ করে। ফলে কোনো কিছুই তাদের কাছে তৃপ্তিদায়ক হয় না।

শিক্ষা: মানুষের ক্ষুদ্র জীবনের আশা আকাক্সক্ষার শেষ নেই। জীবনে সকল চাহিদা মিটিয়ে সুখের সন্ধান করা বোকামি। তাই অন্যের প্রতি ঈর্ষান্বিত না হয়ে নিজের যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার মধ্যেই সর্বোচ্চ সুখ লাভ করা সম্ভব। মূলত মনের সুখই প্রকৃত সুখ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Jobedali

Call

নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস

ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস

অতৃপ্তি মানবচরিত্রের একটি স্বভাবধর্ম। অধিকাংশ মানুষই স্বীয় অবস্থায় সুখী ও সন্তুষ্ট নয়। সুখী মানুষও নিজের চেয়ে অন্যকে মনে করে বেশি সুখী। শুধুমাত্র সুযোগের অভাবে, কিংবা নিয়তির প্ররোচনায় আরাধ্য অর্জিত হচ্ছে না- এই ধারণা লালন করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে অনেকেই। অন্যের সৌভাগ্যকে চক্ষুশূল করে ঈর্ষাকাতর হয় মানুষ

সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, লাভ-ক্ষতি সবার জীবনেরই অঙ্গ, সবার জীবনেই আসে অপ্রত্যাশিত সুযোগ, আবার অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত হয় মানুষ- এই সরল সত্য উপলব্ধি না করে মানুষ অন্যের অবস্থার প্রতি ঈর্ষাকাতর দৃষ্টিপাত করে। সে ঈর্ষা নতুন দুঃখের, অহেতুক অতৃপ্তি আর হীনম্মন্যতারই জন্ম দেয়। এই বিচিত্র স্বভাবের দৃষ্টান্ত একেবারে সহজ দৃশ্য। পর্ণকুটিরের অধিবাসী যেমন প্রাসাদোপন অট্টালিকার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে, নিজের বিরূপ ভাগ্যের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে, বিসম্ময়কর হলেও সত্যি যে, বিপুল অর্থ-বিত্তের অধিকারী সেই প্রসাদোপম অট্টালিকাবাসীও গরিবের ছিমছাম, শ্রীহীন বাড়ির দিকে তাকিয়ে নিরুপদ্রপ শান্ত জীবনের পরম সুখের অলীক কল্পনা করে তৃপ্তি বোধ করে। পরকে সুখী মনে করে নিজের দুঃখের মাত্রা বাড়িয়ে তোলার এই মানসিকতা মানুষকে কেবল অতৃপ্ত ও অসন্তুষ্ট করে না, করে তোলে পরশ্রীকাতর। এতে কেবল মর্মবেদনাই বাড়ে। এই হীন মানসিকতার রন্ধ্রপথেই জন্ম নিতে পারে কু-প্রকৃত্তি বা আত্মপীড়নের ইচ্ছা। জন্ম নিতে পারে পরবিদ্বেষী মনোভাব। মানুষ হয়ে ওঠতে পারে অন্যের অকল্যাণ প্রত্যাশী। এ ধরনের নৈরাশ্যের ভয়ংকর শিকার হয়ে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলছে, এমন মানুষও সমাজে চোখে পড়ে। কিন্তু প্রকৃত বিবেচক জানেন, মানুষের অনিঃশেষ আশা-আকাঙ্ক্ষার পূর্ণ চরিতার্থতা কখনোই সম্ভব নয়। তাই অন্যের সৌভাগ্য দেখে দুঃখ না পেয়ে নিজের যা-কিছু আছে তা নিয়ে তৃপ্ত থাকতে পারলেই অনেক মর্মযাতনা থেকে বাঁচা যায়। পাওয়া যায় তৃপ্তি ও আনন্দ।

মানুষ যতই উদারভাবে একে অন্যের সৌভাগ্যকে স্বাগত জানাবে, পরস্পরের সুখ-দুঃখের অংশীদার হবে, মানুষের জীবনে ততই শান্তি, আনন্দ ও সম্প্রীতির সুবাতাস বইবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Sumya Akter

Call

মানুষের জীবন সংক্ষিপ্ত, আকাঙ্ক্ষা অনন্ত। অধিকাংশ মানুষেই নিজ অবস্থায় সুখী ও সন্তুষ্ট নয়। সুখী মানুষও নিজের চেয়ে অন্যকে বেশি সুখী মনে করে। মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার যেন অন্ত নেই, চাওয়া পাওয়ার পেছনে মানুষ চিরজীবন ছুটে চলে। এক অতৃপ্তির বেদনা নিয়েই মানুষের জীবন।

মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা সীমাহীন। তার চাওয়া-পাওয়ার কোনো শেষ নেই। মানুষ যখন যা চায়, সেটিই যে তার একমাত্র কাম্যবস্তু তা কিন্তু নয়। সে যে সত্যিকারের কী চায়, কী তার কাম্য সে সম্পর্কে সে সবসময় সঠিক তথ্য দিতে পারে না। তাই মানুষ তার কাম্য বস্তুর প্রাপ্তির দ্বারা কোনো সময়ই পূর্ণ পরিতৃপ্ত নয়। একটা অতৃপ্তির বেদনা সারাক্ষণ তার মনের মধ্যে বিরাজ করে। কারণ, একবার মানুষ যা চায় তা পাওয়া হয়ে গেলে নতুন করে আরো কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জাগে। অজানাকে জানার এবং অচেনাকে চেনার প্রতি মানুষের যেমন আগ্রহের শেষ নেই, তেমনি না পাওয়াকে পাওয়ার জন্যে তার উগ্র কামনারও কোনো পূর্ণ পরিতৃপ্তি নেই। কামনার মোহে আকৃষ্ট ও বশবর্তী হয়েই মানুষ তার না পাওয়াকে পাওয়ার আশায় অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। কিন্তু যখন মানুষ তার কাম্যবস্তুকে লাভ করে, তখনই তার মোহ কেটে যায়। প্রাপ্ত বস্তুকে আর প্রার্থিত বলে মনে হয় না। পরমুহূর্তেই আবার তার সহজাত প্রবৃত্তির বশে নতুন করে কোনো প্রাপ্তির আশায় সে হন্যে হয়ে ওঠে। কামনা পূরণের কৃচ্ছ্রসাধনায় ভুলের সাগরে নিমজ্জিত হয়। প্রকৃতপক্ষে, চাওয়া-পাওয়ার এ জীবনে মানুষ যা চায় তা পাওয়ার পর তার কাছে মনে হয়, সে যেন ভুল করেই চেয়েছিল এবং যা চাওয়া হয় তা পাওয়ার পরে, তার একইরকম অনুভূতি জাগে। মূলত মানুষের অসীম চাহিদার কারণেই তার সমস্ত চাওয়া-পাওয়াকে ভুল মনে হয়। কিন্তু তা ভুল নয়- এটা মানুসেরই সহজাত প্রবৃত্তি। চাওয়ার যেমন তার শেষ নেই, তেমনি পাওয়ারও শেষ নেই। তাই ক্যালভিন ওরেনের উক্তিটি স্মরণযোগ্য, “মানবজীবন চিরদিনই সুখ-শান্তিতে কাটে না। আকাশের দিকে হাত বাড়ালে শূন্যতা ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না। চাওয়া পাওয়ার গণ্ডি তাই মাটির কাছাকাছি হওয়া ভাল।” মানবমনের এ পাওয়া না পাওয়ার দ্বন্দ্ব চিরন্তন। অবিরাম ও অব্যাহত এর গতি। তাই কবি গোলাম মোস্তফা বলেছেন,

“কিন্তু হায়, এমনি পাওয়া

ভরিতে চাহে না প্রাণ

যত পায় ততই সে চায়”।

চাওয়া-পাওয়ার এই অন্তর্দ্বন্দ্বই মানুষকে ভুল পথে, লোভের পথে, কদাচিৎ সঠিক পথে পরিচালিত করে। তাই মানবজীবনে চাওয়া-পাওয়া সীমিত হওয়াই সঙ্গত।

সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, লাভ-ক্ষতি জীবনেরই অঙ্গ, সবার জীবনেই আসে অপ্রত্যাশিত সুযোগ, আবার অনেক কিছুই থেকেই বঞ্চিত হয় মানুষ -এই সরল সত্য উপলব্ধি না করে মানুষ অন্যের অবস্থার প্রতি ঈর্ষাকাতর দৃষ্টিপাত করে। সে ঈর্ষা নতুন দুঃখের, অহেতুক অতৃপ্তি আর হীনমন্যতার জন্ম দেয়। তাই নিজের যা কিছু আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে পারলেই পূর্ণ তৃপ্তি ও আনন্দ লাভ করা যায়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ