আমি মেডিকেলে পড়ার সময় ক্যাম্পাসের এক জুনিয়র মেয়ের সাথে পরিচয় হয়। তার পরিবারের ছোট ভাইটি মারা যাবার পর আমি কখনোই নিজেকে পরিবারের বাইরের কেউ মনে করিনি। উনার বাবা মার কাছে সন্তানের মতো থাকার চেষ্টা করেছি। এখনো চেষ্টা করি সুখে দুখে ভালো মন্দ সময়ে নিজের সর্বোচ্চ ভআলোবাসাটুকু দিয়ে আগলে রাখতে। পাচ ছয়টা বছর ধরে আগলে রেখেছি এই সম্পর্ককে।  বারবার মনে হতো এই সম্পর্ক রক্তের চেয়েও আপন। গত কিছুদিন আগে মেয়েটি মোটামুটি ইসলামিক মাইন্ডে আসার পর চেষ্টা করে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখতে। একটা সময় যোগাযোগ সম্পূর্ন বন্ধ  হয়ে যায়। হয়তো আল্লাহর জন্যই এই কুরবানী। আল্লাহ সব দেখতেসেন। কিন্তু আমার নিজেকে খুব অসহায় লাগছে এই ভেবে যে আমি এতো কিছু করার পর এতো স্যাক্রিফাইজ করার পর পাচটা বছর শেষে যদি বাইরের লোক হয়ে যাই তাহলে কি আদৌ সেই সময়ে আমার এই পাশে থাকার কাজটি কোনো নেক কাজ ছিলো না? আমি আসলে ব্যাপারটা নিতে পারছিনা। কোনো আলেমের বিজ্ঞ মতামত জানতে চাচ্ছি। আমার নিয়ত সম্পূর্ন পরিষ্কার ছিলো যে আমি এই মায়ের সেই হারিয়ে যাওয়া ছেলে হবো। আমি মানসিকভাবে এই আঘাতটায় একটু বিপর্যস্ত।  অবশ্যই আল্লাহ পাক উনার কুরবানীকে কবুল করুক। আমি জান জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি পাশে থাকতে ৷ ইসলামের জন্য উনাদের এই কুরবানী অবশ্যই প্রশংসনীয়। এই অবস্থা থেকে আমি কিভাবে বের হতে পারবো?


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

বিপদে-আপদে একে অন্যের পাশে থাকার কাজটি অবশ্যই নেক কাজ ছিলো। কেননা,পার্থিব দুনিয়ায় মানুষ মানুষের সহযোগী। বিপদে-আপদে একে অন্যের পাশে দাঁড়াবে এমনটাই দাবি মানবতার।

তার পরিবারের ছোট ভাইটি মারা যাবার পর সে যখন অসহায় হয়ে গিয়েছিল তখন সুখে দুখে ভালো মন্দ সময়ে নিজের সর্বোচ্চ আলোবাসাটুকু দিয়ে আগলে রেখেছিলেন এটা অবশ্যই ভাল কাজ।

কেননা হাদীসের বানীঃ পরোপকারের লাভ কেবল আখিরাতেই নয়, দুনিয়ায়ও পাওয়া যায়। তবে তা পাওয়া যায় কেবল তখনই, যখন লক্ষবস্তু হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি।

মানুষের সৎগুণাবলির অন্যতম হচ্ছে পরোপকার। পরোপকার হচ্ছে, অন্যের প্রয়োজনে নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া। বিপদে-আপদে পাশে থাকা ও যথাসম্ভব সহযোগিতা করা। আপনি যা করেছেন তা মহৎ কাজ।

কিন্তুঃ

কিছুদিন আগে মেয়েটি মোটামুটি ইসলামিক মাইন্ডে আসার পর চেষ্টা করে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখতে। একটা সময় যোগাযোগ সম্পূর্ন বন্ধ হয়ে যায়। আল্লাহর জন্যই এই কুরবানী এটাও খুব ভাল কাজ।

কেননা, ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়, নারী-পুরুষ উভয়ের চারিত্রিক পবিত্রতা অর্জনের নিমিত্তে উভয়ের মাঝে শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত যে আড়াল বা আবরণ রয়েছে তাকে পর্দা বলা হয়।

আবার কেউ কেউ বলেন, নারী তার বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ রূপলাবণ্য ও সৌর্ন্দয পরপুরুষের দৃষ্টি থেকে আড়ালে রাখার যে বিশেষ ব্যবস্থা ইসলাম প্রণয়ন করেছে তাকে পর্দা বলা হয়।

পর্দা ইসলামের সার্বক্ষণিক পালনীয় অপরিহার্য বিধান। কোরআন-সুন্নাহর অকাট্য দলীল প্রমাণাদির ভিত্তিতে সুস্পষ্ট এক ফরয বিধান। এই বিধান পালনের জন্যই হয়ত তিনি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন, হয়ত আল্লাহর জন্যই এই কুরবানী।

নারীর বাইরে চলাফেরা, কথাবার্তা, পর্দা, সব বিষয় এ ইসলামের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত হুকুম হচ্ছে, যে সকল পুরুষের সামনে নারীর দেখা দেওয়া,কথা বলা জায়েজ এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন সম্পূর্ণ হারাম তাদের কে শরীয়তের পরিভাষায় মাহরাম বলে।

কিন্তু আপনি গায়রে মাহরাম।

গায়রে মাহরাম হচ্ছে, যে সকল পুরুষের সামনে যাওয়া নারীর জন্য শরীয়তে জায়েজ নয় এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন বৈধ তাদেরকে গায়রে মাহরাম বলে।

সুতরাং গায়রে মাহরাম পুরুষের সাথে সান্নিধ্য ও তাদের সঙ্গে ওঠাবসা থেকে মহিলাদের দূরে থাকা কর্তব্য। কেননা পর পুরুষের সাথে উঠা-বসা, প্রয়োজনে ও অপ্রয়োজনে আপনার সাথে কথাবার্তা বলতে হয়। এতেও পর্দার খেলাফ হয়। এতে মেয়েটির গুনাহ হবে।

শরীয়তের মূলনীতির আলোকে নারীর জন্য পর-পুরুষের সাথে চলাফেরা নাজায়িয কাজ। ইসলামে পর্দার বিধান রয়েছে সর্বাবস্থায় তার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ হারাম।

এই অবস্থা থেকে বের হতে হলে আপনাকে তাকে নিজের পরিবারের লোক বানাতে হবে। যদি সম্ভব হয় বিবাহের মাধ্যমে তাকে এবং তার পরিবারকে অতি কাছে নিতে পারেন।


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

আপনার কি আসলে নেকীর হিসাব দরকার নাকি অন্য কোন ইচ্ছা অর্থাৎ আপনি ওই পরিবারে নিজেকে যেই স্থানে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তা পূরন হয় নি? আসলে আপনার কাছে কোন টা বেশি বেদনাদায়ক মনে হচ্ছে?


যদি আপনার কথা মত নেকীর হিসাব করেন - তাহলে বলবো যে,  যে কোন ভালো কাজ - অন্যকে সহায়তা করা ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে নেকীর কাজ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ