৯ দিনের পরিচয়ে পাপ কাজ থেকে বাঁচার জন্য, আজ থেকে প্রায় দুই বছর আগে আমরা কোর্ট মেরিজ করেছিলাম। আমার আর্থিক অবস্থা ততটা স্বচ্ছল নয়। যখন আমি তাকে বিবাহের প্রস্তাব দিই, তখন আমি বেকার। মাঝে মধ্যে ভাইয়ের দোকানে একটু সময় দিতাম।
তখন আমার কাছে কোন জমা টাকা ছিলো না। মেয়ে ডিগ্রী ফাইনাল ইয়ারে পড়তো। আমাদের পরিচয় ফেসবুকে। পাঁচ দিন ফেসবুকে চ্যাট করার পর, একদিন ফোনে কথা বলি।
ফোনে কথা ছিলো এমন, প্রথম সালাম দেওয়ার পর বলি, প্রেম কি এখন করবে নাকি বিবাহের পর?
মেয়ে উত্তর দিলো, অবশ্যই বিবাহের পর!
কখন বিবাহ কিরবে?
আপনি কখন করবেন?
যেদিন আমাদের প্রথম দেখা হবে সেইদিন বিবাহ করবো!
তার ২ দিন পর আমাদের দেখা হয়, আমি আমার সম্পর্কে সবকিছু খোলামেলা বলেছি। কোন কিছু গোপন করিনি। মেয়ে কিন্তু আমার চেয়েও, হালাল হারাম, শির্ক বেদয়াত, পর্দা, দেন মোহর এইসব বিষয়ে ভালো জানে।
আমি তাকে আবার বিবাহের প্রস্তাব দিই।
আমি বলেছিলাম, দেন মোহর বাবদ আমি একভরি স্বর্ণ, একটা কোরআন শরিফ, একটা জায়নামাজ, একটা বুখারি শরিফ দেবো।
মেয়ে রাজি ছিলো।
আমার বাবা নেই। আমার মা, দুই বোন, কিছু বন্ধুদের সাথে এই বিষয়ে শেয়ার করি। এক সময় আমরা উভয় ফাইনাল সিন্ধান্ত নিই। মেয়ে কিন্তু তার পরিবারের কাউকে জানায়নি। কারণ, তার বড় একটা বোন আছে। তার বিবাহ তখন হয়নি। মেয়ের শুধু একটা ক্লাসমেট জানতো।
৪ এপ্রিল ২০১৯ সালে আমরা কোর্ট মেরিজ করি। কিন্তু কাজি একটা নিদিষ্ট পরিমাণ দেন মোহর ছাড়া বিবাহ করাতে রাজি হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে এক লক্ষ টাকা দেনমোহর এক লক্ষ টাকা উছল লিখা হয়।
কাজি বলেছে, তোমরা যেইটা দেনমোহর হিসাবে নিয়ত করেছো, সেইটা আল্লাহর কাজে কবুল হয়েছে। এক লক্ষ টাকা এইটা শুধু ফরমালিটি।
আমি তাকে দেন মোহর বাবদ কোরআন শরিফ, জায়নামাজ, বুখারি শরিফ দিয়েছি। স্বর্ণটা দিতে পারিনি তখন।
বিবাহের দুইদিন পর তার ফ্যামিলি আমাকে ডাকে। তারা আমাকে আশ্বাস দেয় জেনো আমি হতাশ না হই। তারা আমাকে পছন্দ করেছে।
তাদের বড় মেয়ের বিবাহ হয়ে গেলে, তারপর আমাদের বিবাহ দিবে।
কিছুদিন পর তার মা বাবা, বড় ভাই জানতে পারে আমাদের বিবাহ হয়ে গেছে। কিছু তার বড় বোন জানেনা, কারণ তার তখন বিয়ে হয়নি।
গত বছর আমি নতুন ব্যবসা শুরু করেছি, কিন্তু আমার অনেক টাকা দেনা। তাছাড়া আমাদের ঘরে সমস্যা। অনেক পুরাতন ঘর। নতুন করে মেরামত করতে হবে। দেনার কারণে আমি সব সময় হতাশ ভুগি।
গত দুই মাস আগে তার বোনের বিবাহ হয়েছে।
২২—০১—২০২১ আমরা আবার সামাজিক ভাবে বিবাহ করি। আমাদের আবার নতুন করে কাবিন হয়। প্রথমে আমি বলেছিলো ১ লক্ষ টাকা কাবিন, এক লক্ষ টাকা উছল, এক ভরি স্বর্ণ, ৩০ হাজার টাকা সাজানি।
কিন্তু মেয়ের বাবা এইতে রাজি ছিলো না। তিনি বলেছেন ২ লক্ষ টাকা কাবিন, ১ লক্ষ টাকা উছল। ১ ভরি স্বর্ণ, ৩০ হাজার টাকা সাজানি। এ
এতে আমি রাজি হই।
কিন্তু আমার স্ত্রী রাজি নেই এতে। সে বললো এইটা অনেক বেশি, আদায় করা সম্ভব না। তাছাড়া আমাদের আগে যা দেনমোহর ছিল তা থাকবে। কোন টাকা থাকবে না।
অবশেষে এক লক্ষ টাকা দেনমোহর, এক লক্ষ টাকা উছল। এক ভরি স্বর্ণ, ৩০ হাজার টাকা সাজানি ধরা হয়।
আমি কিন্তু তাকে নগদ এক লক্ষ টাকা দিই নাই। স্বর্ণটা শুধু দেন মোহর বাবদ দিবো। আমার স্ত্রী বলেছে দেন মোহর বাবদ স্বর্ণটা আস্তে আস্তে দিতে। আমি একটা দুই আনা ওজনের আংটি উপহার পেয়েছিলাম। তাকে দেন মোহর বাবদ দিয়েছি। আরো ১৪ আনা দিবো, ইনশাআল্লাহ।
আমার প্রশ্ন হলো, আমি যদি বাকি স্বর্ণ গুলো তাকে আস্তে আস্তে দিয়ে দিই, তাহলে কি আমার দেনমোহর পরিশোধ হবে। আমি মাঝে মাঝে তার বিকাশ টাকা দিই, দেন মোহর বাবদ। টাকা জমা করে তাকে স্বর্ণ কিনে দেবো এই নিয়তে।