হিসাবটা একটু জটিল ! খুব সরল' করে বলতে গেলে, বিজ্ঞানীদের মতে, তেজস্ক্রিয় বস্তুর সবটুকু বিক্রিয়া করার জন্য প্রয়ােজনীয় সময়ের ধারণা অর্থহীন। কারণ, এ বিক্রিয়া খুবই ধীরগতিতে চলে। যখন বস্তুর খুবই অল্প পরিমাণ বাকি থাকবে, তখন বিক্রিয়া এত বেশি ধীর হয়ে যায় যে এটি শেষ হতে অনির্দিষ্টকালের প্রয়ােজন হতে পারে। তবে কার্বন-১৪র কথা যদি বলি, এর অর্ধায়ু হলাে ৫৭৩০ বছর। অর্থাৎ যদি শুরুতে ১০০ 

গ্রাম কার্বন-১৪ থাকে, এটি তেজস্ক্রিয়ভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ৫০ গ্রামে পরিণত হতে সময় লাগবে ৫৭৩০ বছর। এই ৫০ গ্রাম থেকে ২৫ গ্রামে পরিণত হতে সময় লাগবে আরও ৫৭৩ বছর।এভাবে পুরাে ১০০ গ্রাম কার্বন-১৪ পুরােপুরি ক্ষয়প্রাপ্ত হতে সময় লাগবে ৫১৫৭০ বছর।

ইউরেনিয়ামের বেলায় ব্যাপারটা এমন: প্রথম সাড়ে চারশ কোটি বছরে অর্ধেক, পরবর্তী,সাড়ে চার শ কোটি বছরে চার ভাগের তিন ভাগ এবং পরবর্তী সাড়ে চার শ কোটি বছর পেরিয়ে গেলেও এর মােট ক্ষয় হবে। ৮৭.৫% । অমন করে ৩১,৭০০ কোটি বছরে এর সবটুকু ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সিসায় পরিণত হওয়ার কথা। ‘হওয়ার কথা' মানে, সম্ভাবনা আছে যে এই সময়ের মধ্যে পুরােটা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যেতে পারে। কিন্তু

বাস্তবে, ইউরেনিয়ামের পরিমাণ যত কমতে থাকে এবং সিসার পরিমাণ যত বাড়তে থাকে, বিক্রিয়া ততই ধীর হয়ে যেতে থাকে। এই ধীর হতে থাকার সুনির্দিষ্ট কোনাে হার নেই। কারণটা বুঝতে হলে প্রতিটা পরমাণুর কথা আলাদাভাবে চিন্তা করতে হবে। এদের যেহেতু কোনাে স্মৃতি নেই, কাজেই এদের বয়সের নির্দিষ্ট কোনাে হিসাব ওই পরমাণুটা কিন্তু জানে না। কাজেই

কোন পরমাণুটা ঠিক কোন মুহূর্তে ক্ষয়প্রাপ্ত হতে শুরু করবে, এটির কোনাে নিশ্চয়তা নেই। এ জন্য শুধু একটা পরমাণুর কথা বললে, এটি এই মুহূর্তে যেমন ক্ষয় হওয়া শুরু হয়ে যেতে পারে, আবার ৩১,৭০০ কোটি বছর পেরিয়ে এসেও এটি ক্ষয় না হয়ে নতুনের মতােই থেকে যেতে পারে। কিন্তু সামষ্টিকভাবে বললে, এদের অর্ধেক যে সাড়ে চার শ কোটি বছরে ক্ষয়প্রাপ্ত হবে, সেটি নিশ্চিত করে বলা যায়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ