মানুষের মৃত্যুর পর স্বর্গে অথবা বা নরকে গমনের বিষয়টি প্রায় প্রতিটি ধর্মেই রয়েছে। এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ও বিস্তৃত বর্ণনা রয়েছে বৈদিক শাস্ত্রে।
স্বর্গ একটি ধর্মীয়, বিশ্বতাত্ত্বিক, বা আধিবিদ্যক স্থান যেখানে বিশ্বাসীদের মতে দেবতা, দেব-দূত, আত্মা জাতীয় সত্তা, সন্ত অথবা পূজিত পিতৃপুরুষগণ উদ্ভূত, রাজাসনে অধিষ্ঠিত বা বাসরত। কিছু ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী স্বর্গীয় সত্তারা পৃথিবীতে অবতরণ বা জন্মগ্রহণ করতে পারে, এবং পরকালে পার্থিব সত্তারা স্বর্গে আরোহণ করতে পারে, বিশেষ পরিস্থিতিতে তা জীবিত অবস্থায় হতে পারে।
স্বর্গ প্রায়ই উচ্চতর স্থান (ঊর্ধ্বলোক), পবিত্রতম স্থান, নন্দনকানন হিসেবে বর্ণিত হয়ে থাকে, নিম্নস্থান হিসেবে নরক। বিবিধ মানের দেবত্ব, সদাশয়তা, পুণ্য, বিশ্বাস, কিংবা অন্যান্য সদ্গুণ বা সনাতন পন্থা বা কেবল ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারে স্বর্গ সার্বজনীন কিংবা সর্তসাপেক্ষে পার্থিব সত্তাদের জন্যে অভিগম্য। কেউ কেউ একটি আগামী যুগে পৃথিবীতেই স্বর্গের সম্ভাবনায় বিশ্বাস রাখে।
ইসলাম ধর্মমতে জান্নাতের অবস্থান:
আল্লাহ বলেন: কখনো নয়, নিশ্চয় নেককার লোকদের আমলনামা থাকবে ইল্লিয়্যীনে । কিসে তোমাকে জানাবে ‘ইল্লিয়্যীন’ কী? (সূরা মুতাফফেফীন: ১৮ ও ১৯)
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’ বলেন, ‘ইল্লিয়্যীন’ অর্থ জান্নাত, অথবা সপ্তম আকাশে আরশের নিচে অবস্থিত একটি স্থান। (তাফসীরে বগবী, ৪৬০/৪, তাফসীরে ইবন কাসীর ৪৮৭/৪।)।
ইসলাম ধর্মমতে জাহান্নামের স্থান:
আল্লাহ বলেন, কখনো নয়, নিশ্চয় পাপাচারীদের ‘আমলনামা সিজ্জীনে। কিসে তোমাকে জানাবে ‘সিজ্জীন’ কী?
এ বিষয়ে ইমাম ইবনে কাসীর রহ., ইমাম বগবী রহ. ও ইমাম ইবনে রজব রহ. একাধিক হাদিস উল্লেখ করেন, তাতে তিনি বলেন, সিজ্জীন হল, সপ্ত জমিনের নিচে। অর্থাৎ, যেমনি-ভাবে জান্নাত সাত আসমানের উপরে অনুরূপভাবে জাহান্নাম সপ্ত যমীনের নীচে একটি স্থান।
(তাফসীরে বগবী, ৫৪৮/৪, তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪৮৬, ৪৮৭/৪।জাহান্নাম থেকে ভয় প্রদর্শন ইবনে রজবের পৃ: ১-৬২ অনুরূপভাবে ইমাম ইবনুল কাইয়ুমের হাদীয়ুল আরওয়াহ ইলা বিলাদিল আফরাহ, পৃ:৮২-৮৪)।