স্বামী যদি মারা যায়, তারপর যদি স্ত্রী দ্বিতীয় বিবাহ করে, অর্থাৎ বিধবা অবস্থায় বিয়ে করে এবং দুজন স্বামীই যদি নেককার হয় এবং মহিলাটিও যদি নেককার মহিলা হোন তাহলে জান্নাতে তাকে কোন স্বামী দেয়া হবে এব্যাপারে দুইটি বক্তব্য পাওয়া যায়। যথাঃ-
১। দুনিয়ার সর্বশেষ স্বামী হবে আখেরাতের স্বামী।
২। মহিলাকে ইচ্ছেধীকার দেয়া হবে। দুই বা একাধিক স্বামীর মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছে গ্রহণ করতে পারে।
জান্নাতীদের নেয়ামত বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ বলেনঃ সেখানে তোমাদের জন্য আছে যা তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্য আছে, যা তোমরা দাবী কর। (সূরা হা-মীম সিজদাহঃ ৩১-৩২)।
আল্লাহ আরো বলেনঃ এবং তথায় রয়েছে মন যা চায় এবং নয়ন যাতে তৃপ্ত হয়। তোমরা সেখানে চিরকাল থাকবে। (সূরা যুখরুফঃ ৭১)।
(এক) নাম্বার মতের রেফারেন্সঃ হাদীস শরীফে এ সম্পর্কে উভয় মতের স্বপক্ষেই বর্ণনা পাওয়া যায়। যারা সর্বশেষ স্বামীর সঙ্গে থাকার মত দিয়েছেন, তারা হযরত মুআবিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মুআবিয়া (রাঃ) যখন উম্মে দারদা (রাঃ) কে বিবাহের প্রস্তাব দিলেন, উম্মে দারদা (রাঃ) তখন সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে বললেন,
আমি শুনেছি যে, আবু দারদা (রাঃ) বলছেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আখেরাতে স্ত্রী তার সর্বশেষ স্বামীর সঙ্গে থাকবে। এরপর আবু দারদা (রাঃ) বলেন, যদি তুমি আখেরাতে আমার স্ত্রী থাকতে চাও, তাহলে আমার পরে আর বিয়ে করো না। [বুস্তানু ফকীহি আবিল লাইছ, পৃষ্ঠাঃ ২৪৮]
(দুই) নাম্বার মতের রেফারেন্সঃ আর যারা বলেন স্ত্রীকে বেছে নেওয়ার ইচ্ছাধিকার দেওয়া হবে, তাদের স্বপক্ষে দলীল হলো যা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর স্ত্রী উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি একদিন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের কোনো কোনো নারীর দুটি স্বামী হয়। আখেরাতে সে কোন স্বামীর স্ত্রী হবে?
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, তাকে ইচ্ছাধিকার দেওয়া হবে। অতঃপর সে তার সঙ্গে অধিক উত্তম আচরণকারীকে বেছে নিবে। এরপর তিনি আরও বললেন, উত্তম আচরণ দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জাহানেই কল্যাণের কারণ। [বুস্তানু ফকীহি আবিল লাইছ, পৃষ্ঠাঃ ২৪৮]