Call

২) কবুতরের পাতলা চুনা পায়খানা।কবুতরের জীবাণুঘটিত সাদা উদরাময় বা পুলরাম পুলরাম বা সালমোনেলা পুলরামকে অনেকে সাদা উদরাময় নামে চিনে থাকেন। এটি একটি জীবাণু ঘটিত রোগ। কবুতরের খুব সাধারণ একটা রোগ। শিগেলা (Shigella) নামক এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া এই রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী। ক্রান্তীয়, উপ ক্রান্তীয়, এবং পূর্ব এশিয়ার মধ্যে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। আক্রান্ত কবুতর থেকে খাবার অথবা পানীয়ের মাধ্যমে এই রোগ সুস্থ কবুতরের দেহে এটি সংক্রমিত হয়। অর্থাৎ আক্রান্ত পাখি ও সুস্থ পাখি যদি একই পাত্রে খাবার গ্রহণ করে তবে, অসুস্থ পাখি থেকে এই রোগের ব্যাকটেরিয়া সুস্থ পাখির দেহে ছড়াবে। এবং সুস্থ পাখিটি এই রোগে আক্রান্ত হবে। অনেক ক্ষেত্রে মাছির মাধ্যমেও এই রোগ ছড়িয়ে থাকে। আবাসস্থলের তাপমাত্রা বেশি হলে, এক সাথে ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত পাখি থাকলে কিংবা আবাসস্থলে আলোবাতাস চলাচলের ব্যাবস্থা না থাকলে এই রোগ ছড়াতে পারে। সুষম খাবারের অভাবে পাখি দুর্বল হয়েও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। ব্যাকটেরিয়াতে সংক্রমণের হার ১০-৮০%। আর আক্রান্ত পাখির মৃত্যুর হার প্রায় ১০০%। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার এক থেকে তিন দিনের মধ্যে পাখির মৃত্যু অনিবার্য। একটি কিংবা দুইটি আক্রান্ত কবুতর থেকে পালের সমস্ত কবুতর এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। কখনো কখনো এই রোগ থেকে পাখির cannibalism বা ঠুকরানোর স্বভাব সৃষ্টি হয়। ফলে আক্রান্ত পাখিকে বাচ্চা বা অন্য কবুতরকে ঠোকরানো বা অন্য কবুতর বা পাখির রক্ত সহ মাংস খেতে দেখা যায়। সাধারণত ব্রিডিং কবুতরের ডিম পাড়া শুরুর সপ্তাহ খানেক আগে এই রোগ দেখা যায়। আর আক্রান্ত পাখি ডিম পাড়লে সেই বাচ্চাও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে জন্ম লাভ করবে। তাই এই রোগে আক্রান্ত হওয়া মাত্রই চিকিৎসা নিতে হবে। অনেকে এই রোগের প্রতিশেধক হিসেবে Cosmic Plus এর ঔষধ প্রয়োগ করেন বা করার জন্য উপদেশ দেন। কিন্তু এই ঔষধে পুলরাম নিরাময়ে কোন সম্ভাবনা করা খুবই কঠিন। আক্রান্ত হওয়ার কারণঃ ধারন ক্ষমতার অধিক কবুতর গাদাগাদি করে রাখা। বাসস্থানের তাপমাত্রা অত্যাধিক হওয়া। সুষম ও পুষ্টিকর খাবার না দেয়া। পচা-বাসি খাবার দেয়া। বাসস্থান অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন থাকা। আক্রান্ত পাখি থাকা। আক্রান্ত পাখিকে সুস্থ পাখি থেকে দূরে সরিয়ে না রাখা। পাখির পায়ের জুতায় জীবাণু লেগে থাকলে সেই জীবাণু থেকেও রোগ ছড়ায়। মাছি বা অন্য কোন বাইরের পাখির মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে। লক্ষণঃ খাবারে অনিহা বা খুদামন্দা। ঝিমানো। এলোমেলো পালক। সারাক্ষণ চোখ বন্ধ রাখে। জোরে জোরে কোন শব্দ করা বা ডাকা। সাদা পাতলা বা চাল ধুয়া পানির মত পায়খানা হওয়া। নির্গমনপথ এ পেস্ট এর মত লেগে থাকা মুমুর্ষু অবস্থা। খোঁড়া মত লাগা। অন্ত্র সংক্রমণ বা প্রদাহ। বমি বমি ভাব বা বমি। জ্বর ও শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া । গর্ভ স্ফীত হত্তয়া । ঘন ঘন আলগা পায়খানা। মলদ্বার বা পাতলা পায়খানার মধ্যে রক্তের ভাব থাকতে পারে বা নাও পারে। কাশি হতে পারে। পানিশূন্যতা। প্রতিরোধঃ আক্রান্ত কবুতর কে আলাদা করে ফেলতে হবে প্রথমে যাতে অন্যরা আক্রান্ত না হয়। নিয়মিত জীবাণু বিরোধী ঔষধ ছিটাতে হবে। সংক্রমণ থেকে উদ্ধার পাখি সংক্রমণের প্রভাব প্রতিরোধী হতে হয় কিন্তু বাহক হিসাবেও থাকতে পারে। তাই সুস্থ হবার কিছুদিন পর পর্যন্ত পাখিকে আলাদা রাখা। নিয়মিত খামার পরিষ্কার করতে হবে। মাত্রার অতিরিক্ত পাখিকে মাত্রার মধ্যে রাখা। পাখিকে সংক্রমণের প্রভাব প্রতিরোধী, বাহক বা বাহকদের serological টেস্টিং করা। চিকিৎসাঃ dehydration এড়ানো এবং শরীরের পানি ও লবণ ক্ষতি পুরনের জন্য , পূর্ণ তরল বা ইলেক্ট্রোলাইট খাবার বেশী পরিমান দেওয়া। পরিস্কার খাবার ও পানি সরবরাহ। খাবার ও পানির পাত্র পনিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। প্রয়োজনে চালের স্যালাইন দেওয়া। ESB30+Cosmic Plus ১ গ্রাম করে ৩০ সিসি পানির সাথে মিক্স করে দিনে ৩ বার ৩ দিন দিতে হবে। অথবা Orasin K (Solution) মিক্স ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ