প্রসঙ্গ: জন্মনিয়ন্ত্রণ ... আমরা এমন একটি আয়াত শরীফ উল্লেখ করবো, যে আয়াত শরীফ-এর তাফসীরে সকল ইমাম, মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সকলেই একমত হয়েছেন। কারণ এর তাফসীর স্বয়ং আল্লাহ পাক উনার রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই করেছেন। আয়াত শরীফ হলো- আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “আমি কি তোমাদের রব নই? তারা (রূহ সম্প্রদায়) বললেন, হ্যাঁ (আপনি আমাদের রব)।” (সূরা আ’রাফ : আয়াত শরীফ ১৭২) এ আয়াত শরীফ-এ কাদেরকে কখন সম্বোধন করা হয়েছে? তার তাফসীরে সমস্ত তাফসীরের কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, “আল্লাহ পাক তিনি রোজ আযলে (সৃষ্টির শুরুতে) সকল রূহ সম্প্রদায়কে একসাথে সৃষ্টি করে সম্বোধন করে বলেছিলেন, “আমি কি তোমাদের রব নই?” তারা জাওয়াব দিয়েছিলেন, “হ্যাঁ, আপনি আমাদের রব।” অর্থাৎ সমস্ত রূহ্ একসাথে সৃষ্টি করে আলমে আরওয়াহতে (রূহ জগতে) অবস্থানের স্থান নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ রূহ সব একসাথে সৃষ্টি হয়েছে। রূহ আগে বা পরে সৃষ্টি হয়নি বা হয় না। কাজেই যাদের রূহ সৃষ্টি হয়েছে, তারা তো আসবেই। আর যাদের রূহ সৃষ্টি হয়নি, তাদের তো আসার প্রশ্নই উঠে না। আর মানুষ পৃথিবীতে আগে পরে এসে থাকে অর্থাৎ মানুষ আগে-পরে জন্মগ্রহণ করে থাকে. বা নতুন নতুন সৃষ্টি হয়ে থাকে। অতএব, রূহ যদি সব একসাথে সৃষ্টিই হয়ে থাকে, আর নতুন করে সৃষ্টি না হয়, তবে জন্ম নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি অবলম্বন করে কি হবে? , অতএব কেউ যদি থাকা, খাওয়া, পরার অভাব মনে করে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করে, তাহলে তা কুফরী হবে। থাকা, খাওয়া, পরা ইত্যাদি সবকিছুর মালিক হলেন আল্লাহ পাক। যা পবিত্র কুরআন শরীফ-এ উল্লেখ করা হয়েছে, “যমীনে যেসব প্রাণী রয়েছে, তাদের রিযিকের একমাত্র জিম্মাদার হলেন আল্লাহ পাক তিনি।” আর যদি কেউ সাধারণভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করে, তাহলে তা হবে মাকরূহ তাহরীমী। কারণ এতে অপচয় করা হয়ে থাকে। আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা হচ্ছে- শয়তানের ভাই।” , মূলকথা হলো- সকল রূহ একসাথেই সৃষ্টি হয়ে গেছে, যারা সৃষ্টি হয়েছে তারা আসবেই তাদেরকে কেউ বাধা দিয়ে রাখতে পারবে না। তাহলে জন্ম নিয়ন্ত্রণ বা ‘ফ্যামিলি প্ল্যানিং’-এর কি প্রয়োজন থাকতে পারে। প্রকৃতপক্ষে ‘ফ্যামিলি প্ল্যানিং’ বা ‘জন্ম নিয়ন্ত্রণ’ পদ্ধতির মাধ্যম দিয়ে তারা মুসলমানদের সংখ্যা কমানোর পাশাপাশি চরিত্র হননেরও অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। যা ইহুদী-নাছারাদের একটি গভীর ষড়যন্ত্র। তাই ‘দুটি সন্তানের বেশি জন্ম দিলে পদোন্নতিসহ সকল সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করা হবে’ প্রতিমন্ত্রীর এ বক্তব্য অতিসত্বর প্রত্যাহার করে খালিছ তওবা করতে হবে। আর সরকারের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে জন্ম নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত সকল প্রকার প্রচারণা বন্ধ করে দিয়ে জনগণকে তাদের ঈমান ও আমল হিফাযতে সহযোগিতা করা।