আঁখি তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি শত রূপে শত বার জনমে জনমে, যুগে যুগে অনিবার। চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয় গাঁথিয়াছে গীতহার, কত রূপ ধরে পরেছ গলায়, নিয়েছ সে উপহার জনমে জনমে, যুগে যুগে অনিবার। আঁখি যত শুনি সেই অতীত কাহিনী, প্রাচীন প্রেমের ব্যথা, অতি পুরাতন বিরহমিলনকথা, অসীম অতীতে চাহিতে চাহিতে দেখা দেয় অবশেষে কালের তিমিররজনী ভেদিয়া তোমারি মুরতি এসে, আঁখি চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে। আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি যুগল প্রেমের স্রোতে অনাদিকালের হৃদয়-উৎস হতে। আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা কোটি প্রেমিকের মাঝে বিরহবিধুর নয়নসলিলে, মিলনমধুর লাজে— আঁখি পুরাতন প্রেম নিত্যনূতন সাজে। আজি সেই চিরদিবসের প্রেম অবসান লভিয়াছে রাশি রাশি হয়ে তোমার পায়ের কাছে। নিখিলের সুখ, নিখিলের দুখ, নিখিল প্রাণের প্রীতি, একটি প্রেমের মাঝারে মিশেছে সকল প্রেমের স্মৃতি— সকল কালের সকল কবির গীতি।
অন্তরঙ্গে নিমীলিত
তোমার আঁখি!
তোমার নিমীলিত আঁখি
তিরতির কাঁপা পল্লব যেন আচঞ্চল পাখি!
কী কথা বলে নীরবে, কে
জানে?
আমি শুধু চেয়ে থাকি পূর্ণ চোখে…
অথচ তুমি থাকো নীরবে নতমুখে।
যতই টানি কাছে, খুব কাছে
কেন যাও সরে? দূরে, আরো দূরে।
তোমার নিমীলিত আঁখি
আমি অবাক চোখে চেয়ে দেখি।
কপট রাগে সরিয়ে মুখখানি
কেন রাখো ঝুলিয়ে হন্তারক হাসি!
আমি ব্যাকুল, কেবলই ভাসি
ভরা জোয়ারে তৃষ্ণার জল খুঁজি।
আর ছুঁতে চাই গভীর আশ্লেষে
দু’ঠোঁটে কামনার নীরব খুনসুটি!
তোমার নিমীলিত আঁখি…
আমি উদ্বেল উদাসীন,
নির্বিবাদে তোমাতে মিশি।
ভালোবাসি সখি, ভালোবাসি
কেবল তোমার আরাধনাই করি!