পরীক্ষাতে ভালো রেজাল্ট করার জন্য শুধুমাত্র পড়াশোনাই যথেষ্ঠ নয়। এর জন্য দরকার প্ল্যানিং। পরীক্ষাতে ভালো রেজাল্ট করার জন্য কোন জাদুকরী রহস্য কাজ করে না। তুমি যা পড়বা পরীক্ষাতে তোমার ফলাফল হবে ঠিক ততটুকুই। আমাদের কলেজের মূসা স্যার একটা গল্প শুনিয়েছিলেনঃ পরীক্ষার দিন এক ছাত্র যাচ্ছে পরীক্ষা দিতে। যেতে যেতে রাস্তায় এক বড় ভাইয়ের সাথে দেখা। বড় ভাইকে দেখে ছাত্রটি সালাম দিলো। তারপর বললো ভাইয়া আমার জন্য দু আ করবেন। তখন বড় ভাইটি বললো 'তোমার প্রস্তুটি যতটুকু, তোমার জন্য দু আ ও ঠিক ততটুকু' সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে পরীক্ষাতে ভালো করার জন্য জানতে হবে। আর জানার জন্য পড়তে হবে। আজকে আমি তোমাদেরকে জানাবো কিভাবে পরীক্ষাতে ভালো রেজাল্ট করা যায়। আর সেই সাথে কিছু টিপস ও দিবী যেগুলো তোমাদের কাজে লাগবে। প্রথম অংশঃ পরীক্ষার আগের কাজগুলি ঠিকমতো রিভিশন দেয়াঃ ঠিকমতো রিভিশন দেয়ার অর্থ হলো পরীক্ষার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই ঠিক করে নেয়া কখন কোন সাবজেক্ট রিভিশন দিতে হবে। অর্থাৎ এক কথায় টাইম-টেবিল ঠিক করে নেয়া। এক্ষেত্রে রিভিশনের টাইম নির্ভর করবে পরীক্ষার গুরুত্বের উপর। পাবলিক পরীক্ষা হলে খুবই মনোযোগ সহকারে রিভিশন দিতে হবে। তবে কখনই রিভিশন দেয়ার সময় কোন পড়াকে প্রথমবারের মতো পড়া যাবে না। মনে রাখতে হবে যেটা ছিলো না পড়া সেটা না পড়াই থাক! অনুশীলনমূলক পরীক্ষা দাওঃ ভালোভাবে সিলেবাস রিভিশন দেয়া শেষ হলে অনুশীলনমূলক পরীক্ষা দাও। এজন্য তোমার সহায়ক বই এর সাহায্য নিতে পারো। সহায়ক বই এ দেখবা বিগত সালের প্রশ্নপত্র দেয়া আছে। সেগুলোর মধ্যে যেটা থেকে তুমি সবচাইতে বেশী পারো সেটাকে প্রশ্ন হিসেবে নাও। কারণ তুমি না খেয়াল করলেও আমি খেয়াল করেছি পরীক্ষাতে সবচাইতে সহজ প্রশ্নগুলোই আসে। পরীক্ষা দেয়ার সময় তোমাকে অঙ্গীকার করতে হবে যে পুরো তিন ঘন্টা সময়ে তুমি একবারের জন্যও বই/ নোট খুলবা না। ভুল খুজে বের করোঃ অনুশীলনমূলক পরিক্ষার খাতা নিজেই মূল্যায়ন করো। কোথায় কোথায় ভুল হয়েছে সেগুলো খুঁজে বের করো। এইবার পুনরায় রিভিশন দিতে বসো। তবে অবশ্যই ভুলগুলোর দিকে বেশী নজর দাও। আবার অনুশীলনমূলক পরীক্ষাঃ আবার পরীক্ষা দাও, তবে আলাদা প্রশ্নপত্রে। যতক্ষণ না নিজের কাছে ভালো মনে হয় ততক্ষণ এই প্রক্রিয়া চালাতে থাকো। যখন মনে হবে তুমি প্রস্তুত তখন পরীক্ষা দেয়া বন্ধ করো। কঠিন বিষয়গুলোকে লিখে ফেলঃ যেগুলো তোমার কাছে কঠিন বলে মনে হয় সেগুলো খাতায় লিখে ফেলো। দেখবা সব পানির মতো সহজ হয়ে যাচ্ছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখোঃ পরীক্ষার কমপক্ষে ১৫ দিন আগে থেকে তোমার ব্যবহৃত টুইটার, ফেসবুক, হোয়াটস এপ একাউন্ট ডিএক্টিভেট করে দাও। নয়তো তোমার পড়াশোনার ক্ষতি হবে। এটা আমার মতামত না, এইটা বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান উইকিহাউ এর মতামত! খাওয়া এবং ঘুমঃ হয়তো তুমি খুব পড়াশোনা করছ! সেইজন্য ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া হচ্ছে না। এটা ঠিক না। খাওয়া এবং ঘুম সব সময় ঠিক রাখতে হবে। কারণ পেট যদি ভর্তি না থাকে আর চোখে ঘুম থাকে তাহলে তোমার ব্রেইন ঠিকমতো কাজ করবে না। মাথা ঠান্ডা রাখোঃ কিছু কিছু ফর্মুলা আছে যা মনে রাখা সত্যিই কষ্টকর। অনেকে আবার ইংরেজিতে দুর্বল থাকে। তাদের জন্য এই টিপস টা কার্যকর। পরীক্ষার আগে যদি মনে হয় কোন লেসন তুমি পারো না, তাহলে সেটা ভুলেও পড়ে দেখতে যাবা না। কারণ ঐ টা পড়লে তুমি কিছু বুঝবাও না আবার তোমার সময় নষ্ট হবে। ২য় অংশঃ পরীক্ষার হলে যা মনে রাখবা পরীক্ষার হলে অবশ্যই তোমার মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। কোন কিছু নিয়েই চিন্তা করা যাবে না। তুমি নিশ্চিত থাকতে পারো এতদিন যে টিপস গুলো ফলো করেছ তাতে ৯০ শতাংশ প্রশ্ন তোমার কমন আসবে। উত্তরগুলো খাতায় লিখার আগে উত্তর সম্পর্কে একটু চিন্তা করো। নিশ্চিত হয়ে নাও যে তুমি যেটা লিখছো সেটা সঠিক উত্তর। পরীক্ষার সময় আশেপাশের বন্ধু বান্ধবীরা কি বলছে সেদিকে একদমই নজর দিবা না। তুমি তো জানোই যে তুমি যেটা লিখেছ সেটা সঠিক। তাহলে আবার অন্যজনের দিকে তাকানোর দরকার কি? অন্যজনের সাথে কথা বলার সময়টুকুতে তুমি তোমার লেখা উত্তরটি রিভিশন দাও। সমস্ত উত্তরগুলো লেখার পরে পুরো উত্তরপত্র একবার রিভিশন দাও। সিলি যে ভুলগুলো ধরা পড়েছে সেগুলো ঠিক করো। এর পরেও কিন্তু আরো ভুল থেকে যায়! তাই যতক্ষণ না সময় শেষ হচ্ছে ততক্ষণ কাজটি বার বার করে যাও। ঘন্টা দিলে খাতা জমা দিয়ে বের হয়ে চলে আসো। ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার জন্য তোমাকে এই সম্পুর্ণ প্রসেসটি কমপক্ষে ১২০ দিন আগে থেকে শুরু করতে হবে। অর্থাৎ ১২০ দিন আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করতে হবে। তুমি যদি সবগুলো কাজ ঠিকভাবে করে থাকো , আমার মনে হয় কোন পরীক্ষাতে তুমি খারাপ রেজাল্ট করবা না। আমার পক্ষ থেকে কিছু টিপস, যেগুলো তোমার পড়ার মনোযোগ বৃদ্ধি করবেঃ একটানা ৪-৫ ঘন্টা পড়বা না। এর মধ্যে কমপক্ষে একবার বিরতি দিবা। এতে তুমি যা পড়েছ সেটা ভালো ভাবে মনে রাখতে পারবা। ক্লাসে শিক্ষক যা বলবে সেগুলো বুঝতে চেষ্টা করবা, মনে রাখবা মুখস্থ করে সব জিনিস হয় না। পরীক্ষা শুরু হওয়ার বেশ কিছুদিন (৯০-১২০) আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করো। এতে তুমি প্রস্তুতি নেয়ার ভালো সময় পাবে এবং ফলাফলে নিজের উপরে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। পরীক্ষা শেষ হলে পুনরায় সিলেবাসটি একবার পড়ে ফেল। মনে করতে পারো এটি তোমার উপকারে আসবে না, কিন্তু আসলে তোমার ধারণা ভুল। পরীক্ষা শেষ করে সোজা বাসায় চলে যাও। কখনোই পরীক্ষার হলে তুমি কি উত্তর লিখেছ সেটা নিয়ে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করবে না। এতে শুধু শুধু তোমার টেনশন বাড়বে। পরীক্ষার হলে যদি কঠিন প্রশ্ন পাও তাহলে সেটাকে স্কিপ করে চলে যাও পরের প্রশ্নে। এর ফলে তোমার ব্রেইন কিছুটা সময় পাবে কঠিন প্রশ্নটার উত্তর প্রস্তুত করার জন্য। প্রশ্ন পাওয়ার পরে অবশ্যই তা ভালোভাবে পড়তে হবে এবং সে অনুযায়ী উত্তর করতে হবে। ব্রেইনকে একটিভ রাখার জন্য ইয়োগা এবং এক্সারসাইজ করতে পারো। যখন স্টাডি করবা তখন যেন তোমার সম্পুর্ণ মনোযোগ পড়াতেই থাকে, অন্য কোন বিষয়ে চিন্তা করবা না। সবসময় মনে রাখতে হবে, দেয়ার'স নো শর্টকার্ট রাস্তা টু ডু ভালো ইন দ্যা পরীক্ষা! ইউ হ্যাভ টু বুঝতে হবে! সংগৃহীত উত্তর...
এর জন্য আপনাকে দৈনিক ৭/৮ ঘন্টা পড়তে হবে (সকাল ২.৩০ ঘন্টা, বিকাল ১.৩০, রাত ৩/৪ ঘন্টা)। গুরুত্বপূর্ণ বা আপনি কম বুঝেন এরকম বিষয়গুলোকে প্রায়োরিটি দিয়ে একটা রুটিন বানান... রুটিন সাধারণ নিয়মে হবেনা, প্রত্যেকটা বিষয় প্রতিদিন থাকতে হবে। তবে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর স্বাভাবিক নিয়মে যেদিন যে পরীক্ষা তার আগের দিন শুধু ঐটা পড়বেন। পরীক্ষার আগের রাতে পড়ার সময় খেয়াল রাখবেন যেনো পুরো সিলেবাস রিভাইস করতে পারেন। সকালে উঠে রাতে পড়া বিষয়গুলোর মধ্যে যে যে টপিক অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ শুধু সেগুলোই আবার রিভাইস দিবেন। আর সবশেষ টিপস হলো দুশ্চিন্তা একদমই করবেননা আর আআত্মবিশ্বাস হারাবেননা।