Bakul3014

Call

এক চোখা বস্তুবাদীরা বলে থাকে, ‍‍‍‍‍‍মানুষ যখন ঘুমায়, তখন তার মস্তিস্ক তার স্মৃতিগুলো নাড়াচাড়া করে। যাচাই-বাছাই করে, কিছু পুনর্বিন্যাস করে। তারপর স্মৃতির ফাইলে যত্ন করে রেখে দেয়। এই কাজটা সে করে মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন। মস্তিস্কের এই কাজ-কর্মই আমাদের কাছে ধরা দেয় স্বপ্ন হিসেবে।” কথাটা শুনতে মন্দ নয়। তবে এটি স্বপ্নের একটি প্রকার মাত্র। বাকী দু প্রকার কি আপনাদের মস্তিস্কে ধরা পড়ে? ইসলাম তো বলে স্বপ্ন তিন প্রকার। হাদীসে দেখা যায়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের নামাজের পর মুসল্লীদের দিকে মুখ করে বসতেন। প্রায়ই জিজ্ঞেস করতেন, গত রাতে তোমাদের কেউ কি কোনো স্বপ্ন দেখেছ? আল-কোরআনে নবী ইবরাহীম আলাইহিস সালামের স্বপ্ন, ইউসুফ আলাইহিস সালামের স্বপ্নের কথা উল্লেখ আছে। ইউসূফ আলাইহিস সালামের সময়ে মিশরের বাদশার স্বপ্ন, তাঁর জেলখানার সঙ্গীদের স্বপ্ন ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্বপ্ন নিয়ে তো আল কোরআনে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। মিশরের বাদশা তার সভাসদের স্বপ্ন বিশেষজ্ঞদেরকে নিজ স্বপ্ন সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিল। জানতে চেয়েছিল, সেই স্বপ্নের ব্যাখ্যা। তারা বলেছিল, এটা এলোমেলো অলীক স্বপ্ন। তারা এর ব্যাখ্যা দিতে পারল না। নবী ইউসুফ আলাইহিস সালাম এর সুন্দর ব্যাখ্যা দিলেন। নিজের পক্ষ থেকে নয়। আল্লাহ তাআলার শিখানো ইলম থেকে। (সূরা ইউসূফের ৩৬ থেকে ৪৯ আয়াত দ্রষ্টব্য) আমি বক্ষমান বইতে কোরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যার কিছু মৌলিক ধারনা দেয়ার চেষ্টা করব। তবে কি স্বপ্ন দেখলে কি হয়, তা এখানে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে না । এটা নির্দিষ্ট করে আলোচনা করা সম্ভবও নয়। মানে এটা বাজারে প্রচলিত কোনো খাবনামা নয়। স্বপ্ন সম্পর্কে মৌলিক কিছু আলোচনা ও একটি ধারনা দেয়ার প্রয়াস মাত্র। স্বপ্ন দ্রষ্টার অবস্থা ভেদে একই স্বপ্নের ব্যাখ্যা বিভিন্ন রকম হতে পারে। স্বপ্ন তিন প্রকার: এক. মনে মনে যা সারাদিন কল্পনা করে তার প্রভাবে ঘুমের মধ্যে ভাল-মন্দ কিছু দেখা। এগুলো আরবীতে আদগাছু আহলাম বা অলীক স্বপ্ন বলে। দুই. শয়তানের কুমন্ত্রণা ও প্রভাবে স্বপ্ন দেখা। সাধারণত এ সকল স্বপ্ন ভীতিকর হয়ে থাকে। তিন. আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে ইশারা, ইঙ্গিত হিসাবে স্বপ্ন দেখা। বিষয়টি উপরে বর্ণিত হাদীসেও উল্লেখ হয়েছে। আল্লাহ তাআলা আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাটুকু কবুল করুন। বইটিকে পাঠকদের কল্যাণে গ্রহণ করুন। আর আমরা আমাদের সকল পাওনা ও প্রাপ্তি তার কাছেই আশা করি। তিনি মুহসিনদের সৎকর্ম ব্যর্থ হতে দেন না। -আব্দুল্লাহ শহীদ আ: রহমান স্বপ্ন সম্পর্কে কিছু কথা হাদীসে এসেছে : আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, নবুওয়তে আর কিছু অবশিষ্ট নেই, বাকী আছে কেবল মুবাশশিরাত (সুসংবাদ)। সাহাবীগণ প্রশ্ন করলেন, মুবাশশিরাত কী? তিনি বললেন: ভাল স্বপ্ন। (বর্ণনায় : সহীহ বুখারী) এ হাদীস থেকে আমরা যা জানতে পারলাম: এক. স্বপ্ন নবুওয়তের একটি অংশ। নবী ও রাসূলদের কাছে জিবরীল যেমন সরাসরি ওহী নিয়ে আসতেন, তেমনি স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নবী ও রাসূলদের কাছে প্রত্যাদেশ পাঠাতেন। দুই. মুসলিম জীবনে স্বপ্ন শুধু একটি স্বপ্ন নয়। এটা হতে পারে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে স্বপ্নদ্রষ্টার প্রতি একটি বার্তা। তিন. আল মুবাশশিরাত অর্থ সুসংবাদ। সঠিক স্বপ্ন যা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে, তা স্বপ্ন দ্রষ্টার জন্য একটি সুসংবাদ। হাদীসে এসেছে,আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দিন যত যেতে থাকবে, কিয়ামত নিকটে হবে, মুমিনদের স্বপ্নগুলো তত মিথ্যা হতে দূরে থাকবে। ঈমানদারের স্বপ্ন হল নবুওয়তের ছিচল্লিশ ভাগের একভাগ। (বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম) অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, তোমাদের মধ্যে যে লোক যত বেশী সত্যবাদি হবে তার স্বপ্ন তত বেশী সত্যে পরিণত হবে। এ হাদীস থেকে আমরা জানতে পারলাম : এক. মুমিনের জীবনে স্বপ্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেয়ামত যত নিকটে আসবে ঈমানদারের স্বপ্ন তত বেশী সত্য হতে থাকবে। দুই. ঈমানদারের জীবনে স্বপ্ন এত গুরুত্ব রাখে যে, তাকে নবুওয়তের ছিচল্লিশ ভাগের এক ভাগ বলা হয়েছে। তিন. মানুষ যত বেশী সততা ও সত্যবাদিতার চর্চা করবে সে ততবেশী সত্য স্বপ্ন দেখতে পাবে। চার. যদি কেউ চায় সে সত্য স্বপ্ন দেখেব, সে যেন সৎ, সততা ও সত্যবাদিতার সাথে জীবন যাপন করে। হাদীসে এসেছে,আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যে নিদ্রার মধ্যে আমাকে দেখে সে যেন বাস্তবেই আমাকে দেখেছে। কারণ, শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। (বুখারী ও মুসলিম) এ হাদীস থেকে আমরা জানতে পারলাম : এক. যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- কে স্বপ্নে দেখবে সে সত্যিকারভাবেই তাকে দেখেছে। দুই. শয়তানের কুমন্ত্রণা ও প্রভাবে মানুষ স্বপ্ন দেখে থাকে। শয়তান মানুষকে বিভিন্ন স্বপ্ন দেখাতে পারে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আকৃতি ধরে ধোকা দিতে পারে না। তিন. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বপ্নে দেখা একটি সৌভাগ্য। খুব কম ঈমানদারই আছেন, যারা এ সৌভাগ্যটি অর্জন করেছেন। স্বপ্ন দেখলে করণীয় হাদীসে এসেছে, আবু সায়ীদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন: তোমাদের কেউ যদি এমন স্বপ্ন দেখে যা সে পছন্দ করে, তাহলে জানবে যে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে দেখানো হয়েছে। তখন সে যেন আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করে ও অন্যদের কাছে বর্ণনা করে। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, এ স্বপ্নের কথা শুধু তাকে বলবে, যে তাকে ভালোবাসে। আর যদি স্বপ্ন অপছন্দের হয়, তাহলে বুঝে নেবে এটা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়েছে। তখন সে শয়তানের ক্ষতি থেকে আল্লাহ তাআলার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবে আর এ স্বপ্নের কথা কারো কাছে বলবে না। কারণ খারাপ স্বপ্ন তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। (বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম) এ হাদীস থেকে আমরা জানতে পারলাম : এক. যা কিছু ভাল স্বপ্ন, সেটা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের কুমন্ত্রণা ও প্রভাবের কারণে দেখে থাকে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Shafaat

Call

স্বপ্নটা আসলে কিছুই না। আপনি সারাদিন যা ভাবেন, যা চিন্তা করেন, যা দ্যাখেন তারই প্রতিধ্বন্নি প্রতিউত্তর মাত্র।কিন্তু যদি মন না মানে তাহলে ভালো কোনো আলেমের সাথে এবিষয়ে আলাপ করেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

স্বপ্ন হচ্ছে নিজের মনের গভীরের কল্পনা, ইচ্ছা অার অাকাঙ্খার প্রতিফলন মাত্র অার এটাই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা, তাই এটা নিয়ে দুঃচিন্তা করার দরকার নেই। সব মানুষই জীবনে কিছু উদ্ভট স্বপ্ন দেখে যেগুলোর বাস্তব জীবনের সাথে কোন সম্পর্ক নেই।

স্বপ্নের ব্যাপারে যেসকল ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই কুশিক্ষা, কুসংস্কার অার অজ্ঞতা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ