একটা মেযে যদি তার স্বামি কে তালাকএর কাগজ পাঠিয়ে দেয় তাহলে কি হবে, মানে আমি বাংলা দেশের অইন অনুযায়ি তালাকের সকল নিয়ম টা জানতে চাই....
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

১. কোনো ব্যক্তি স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইলে তাকে যে কোনো পদ্ধতির তালাক ঘোষণার পর যথাশীঘ্রই সম্ভব স্থানীয় ইউপি/পৌর/সিটি চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে তালাকের নোটিশ দিতে হবে এবং স্ত্রীকে উক্ত নোটিশের নকল প্রদান করতে হবে। ২. নিম্নের (৫) উপ-ধারার ব্যবস্থাবলীর মাধ্যম ব্যতিত প্রকাশ্য অথবা অন্যভাবে প্রদত্ত কোনো তালাক, পূর্বাহ্নে বাতিল না হলে (১) উপ-ধারা অনুযায়ী চেয়ারম্যান নোটিশ প্রাপ্তির তারিখ থেকে নব্বই দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ হবে না। ৩. উপরোক্ত (১) উপ-ধারা অনুযায়ী নোটিশ প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট পক্ষদ্বয়ের মধ্যে আপোষ বা সমঝোতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সালিশী পরিষদ গঠন করবে এবং উক্ত সালিশী পরিষদ এ জাতীয় সমঝোতার (পুনর্মিলনের) জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থাই অবলম্বন করবে। ৪. তালাক ঘোষণাকালে স্ত্রী গর্ভবতী থাকলে বা অন্তঃসত্ত্বা থাকলে উপরের (৩) উপ-ধারায় উল্লেখিত সময় অথবা গর্ভাবস্থা-এ দুইটির মধ্যে দীর্ঘতরটি অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তালাক বলবৎ হবে না। ৫. অত্র ধারা অনুযায়ী কার্যকরী তালাক দ্বারা যার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে, সে স্ত্রী এ জাতীয় তালাক তিন বার কার্যকরী না হলে কোন তৃতীয় ব্যক্তিকে বিবাহ না করে পুনরায় একই স্বামীকে বিবাহ করতে পারবে। ৬. যে কোনো ধরনের তালাক রেজিষ্টেশনের ক্ষেত্রে নিকাহ রেজিষ্ট্রার বা কাজী সাহেবকে ২০০ (দুই শত) টাকা ফি প্রদান করে তালাক রেজিষ্ট্রি করতে হবে (১৯৬১ সালের ২৯শে আগষ্ট তারিখের গেজেট নোটিফিকেশন)। ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিষ্ট্রেশন) আইন এর ধারা ৬ মোতাবেক তালাক রেজিষ্ট্রেশন করা প্রয়োজন। যিনি বিবাহ রেজিষ্ট্রি করবে তারাই তালাক রেজিষ্ট্রি করতে পারবে। কোনো বিয়ে বা তালাক রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হবার পর নিকাহ রেজিস্ট্রার সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে নিকাহনামা বা তালাকনামার সত্যায়িত প্রতিলিপি প্রদান করবেন এবং ঐরূপ সত্যায়িত প্রতিলিপির জন্য কোনো ফি আদায় করা যাবে না (ধারা-৯)৷ নোটিশ ছাড়া তালাক দিলে শাস্তি ধারা-৭ (২) অনুযায়ী নোটিশ ছাড়া তালাক দিলে এক বৎসর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা দশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় প্রকার শাস্তি হবে। স্ত্রীর পক্ষে বিচ্ছেদ স্ত্রী তিনভাবে স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছেদ চাইতে পারে। ১. তালাক-ই-তৌফিজ ২. খুলা। ৩. আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ। ১. তালাক-ই-তৌফিজ নিকাহনামার ১৮ নং ঘরে স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা অর্পন করে থাকে, সে ক্ষমতার বলে স্ত্রী যদি স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছেদ চায় তাহলে সে বিচ্ছেদকে তালাক-ই- তৌফিজ বলে। তালাক-ই-তৌফিজের ক্ষেত্রে ১৯৬১ সালের মুসলিম পারবারিক অর্ডিন্যান্সের ৭ ধারায় বর্ণিত নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। ২. খুলা স্বামী এবং স্ত্রীর আলোচনা সাপেক্ষে যে বিচ্ছেদ হয় তাকে ‘খুলা’ বিচ্ছেদ বলে, তবে স্বামীকে ‘খুলা’ বিচ্ছেদে রাজী করানোর দায়িত্ব হচ্ছে স্ত্রীর (প্রয়োজনে কোনো কিছুর বিনিময়ে)। এ ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীকে ইদ্দতকালীন ও গর্ভস্থ সন্তানের ভরণপোষণ দিতে বাধ্য। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী এক্ষেত্রে প্রস্তাবক যেহেতু স্ত্রী, তাই চেয়ারম্যানের কছে স্ত্রী নোটিশ পাঠাবে। ৩. আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ তালাক-ই-তৌফিজ ও খুলার মাধ্যমে স্ত্রী যদি বিচ্ছেদ না নিতে পারে এবং স্ত্রী যদি বিচ্ছেদ নেওয়া একান্ত প্রয়োজন মনে করে তাহলে ১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইনে অত্যন্ত সুষ্পষ্টভাবে বলা হয়েছে কি কি কারণে একজন স্ত্রী আদালতে বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Unknown

Call

তালাক কার্যকর করার ক্ষেত্রে মুখে উচ্চারণের পাশাপাশি চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত নোটিশ পাঠাতে হয়। চেয়ারম্যান বলতে এখানে বোঝানো হচ্ছে— ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার চেয়ারম্যান, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বা প্রশাসক, সেনানিবাস এলাকায় এই অধ্যাদেশের অধীনে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের জন্য সরকারের নিয়োগ করা ব্যক্তি, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা অথবা সিটি কর্পোরেশনের স্থগিত (suspended) থাকলে অধ্যাদেশের অধীনে চেয়ারম্যানের কাজ সম্পাদনকারী সরকারের নিয়োগ করা ব্যক্তি। চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো তালাক নোটিশের একটি অনুলিপি তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে পাঠাতে হবে। তারপর এই নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে দুই পক্ষের পুনঃমিলনের উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান সালিশি কাউন্সিল তৈরি করে দুই পক্ষের পুনঃমিলনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। যদি দুই পক্ষের মধ্যে কোনোভাবেই পুনঃমিলন সম্ভব না হয় তবে তালাক নোটিশ প্রদানের তারিখ হতে ৯০ দিনের মধ্যে তালাক কার্যকর হয়ে যাবে। এই ৯০ দিন পর্যন্ত স্ত্রীর ভরণপোষণ ও অন্যান্য খরচাপাতি বহন করবেন স্বামী। তালাকের ক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, যদি তালাক দেওয়ার সময় স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে থাকে তবে তার গর্ভাবস্থার পরিসমাপ্তি না হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ সন্তান ভূমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, মুসলিম আইনে স্ত্রীর তালাক দেওয়ার কোনও ক্ষমতা নেই, যদি না কাবিননামার ১৮তম কলামে স্ত্রীর তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া থাকে। তবে মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন ১৯৩৯ অনুযায়ী মুসলিম আইনে বিবাহিত কোনও মহিলা নিচের এক বা একাধিক কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারবেন। ১. চার বছর পর্যন্ত স্বামীর কোনও খোঁজখবর পাওয়া না গেলে। ২. দুই বছর যাবত স্বামী কর্তৃক অবহেলিত এবং স্বামী ভরণপোষণ দিতে ব্যর্থ হলে। ৩. মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১'র বিধান লঙ্ঘন করে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করলে। ৪. স্বামী ৭ বছর বা তার বেশি মেয়াদের জন্য কারাদণ্ড প্রাপ্ত হলে। ৫. স্বামী কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া তিন বছর ধরে বিবাহিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে। ৬. বিয়ে করার সময় স্বামী পুরুষত্বহীন হলে এবং এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে। ৭. দুই বছর ধরে স্বামী অপ্রকৃতিস্থ থাকলে বা, কুষ্ঠ রোগ বা, সংক্রামক যৌন ব্যাধিতে ভুগলে। ৮. ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই যদি অভিভাবকের মাধ্যমে বিয়ে দেওয়া হয় এবং স্বামী-স্ত্রী সহবাস বা, বসবাস না করে তাহলে ১৯ বছর বয়স হওয়ার আগেই এই বিয়ে প্রত্যাখ্যান করলে। ৯. স্ত্রীর প্রতি স্বামী নিষ্ঠুর আচারণ করলে। এক্ষেত্রে নিষ্ঠুর আচরণগুলো হল: ক) স্বভাবগতভাবে তাকে মারপিট বা, শারীরিক নির্যাতন ছাড়াও নিষ্ঠুর আচরণ করে স্ত্রীর জীবন দুর্বিষহ করে তুললে। খ) খারাপ চরিত্রের মহিলাদের সঙ্গে মেলামেশা করলে বা অনৈতিক জীবনযাপন করলে। গ) স্ত্রীকে অনৈতিক জীবনযাপানে বাধ্য করার চেষ্টা করলে। ঘ) স্ত্রীর সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপ করলে বা, তার স্ত্রীর সম্পত্তির অধিকারে বাধা প্রদান করলে। ঙ) স্ত্রীর ধর্মকর্ম পালনে বাধা দিলে। চ) একাধীক স্ত্রী থাকলে পবিত্র কোরআনেরর বিধান মোতাবেক সমভাবে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হলে। এসব নিষ্ঠুর আচরণের জন্য কাবিননামায় তালাকের ক্ষমতা না থাকা সত্বেও স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক প্রদান করতে পারবেন। অন্য যে কোনও সংগত কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন যে, উল্লেখিত যে কোনও একটি কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ চাইতে হলে স্ত্রীকে আদালতের মাধ্যমে যেতে হবে। তালাক স্বামী বা, স্ত্রী যেই দিক না কেন, স্ত্রী তার প্রাপ্য মোহরানা যে কোনও সময় দাবী করতে পারবেন। মনে রাখতে হবে যে, তালাক নিবন্ধন বাধ্যতামূলক আর তাই যে এলাকায় তালাক কার্যকর করা হয়েছে সেই এলাকার নিকাহ রেজিস্ট্রার দিয়ে তালাক নিবন্ধন করাতে হবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

নতুন নিয়মে কিভাবে তালাক দিতে হয় এই বিষয় নিয়ে দারুন একটি ভিডিও  দেখুন এখানে
 https://www.youtube.com/watch?v=-fH6lGEoxTo

 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ