বেতর সালাত ১,৩,৫,৭,৯ রাকাত পর্যন্ত পরা যায় (বুখারি ইঃফাঃ হাঃ ৯৩৭,৯৩৯,৯৪১, সহিহ ইবনু খুযাইমাহ-২য় খণ্ড ১৪৩ প্রিস্থা, মুসলিম ১ম খণ্ড ২৫৩-২৫৬ পৃষ্ঠা , নাসায়ী - ১ম খণ্ড ১৯২,ন্দ,২৪৬,২৪৭ পৃষ্ঠা )

তিন রাকাত বেতর পরার ২ টি পধতি ভিন্ন আর কোন পধতি নেই নিম্নে তা উল্লেখ করা হলঃ

এক সাথে তিন রাকাত পড়া, শেষ রাকাত ব্যতীত না বসা। 
আবু আইয়ূব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রয়েছে:
«ومن أحبَّ أن يوتر بثلاثٍ فليفعلْ»
“যে তিন রাকাত দ্বারা বেতের‎ পড়তে চায়, সে যেন তাই করে”।[আবু দাউদ: (১৪২২), নাসায়ি: (১৭১২), ইব্‌ন মাজাহ: (১১৯২), ইব্‌ন হিব্বান: (৬৭), হাকেম: (১/৩০২)] উবাই ইব্‌ন কাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেতের‎ সালাতে প্রথম রাকাতে সূরা আলা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফেরুন ও তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাস পড়তেন। শেষ রাকাত ব্যতীত কোথাও তিনি সালাম ফিরাইতেন না।[নাসায়ি: (১৭০১), আলবানী হাদিসটি সহিহ বলেছেন। দেখুন: সহিহ সুনানে নাসায়ি: (১/৩৭২), আরো দেখুন: নাইলুল আওতার: (২/২১১), ফাতহুল বারি: (২/৪৮১), ফাতহুল বারিতে এর অনেক শাহেদ রয়েছে। নাইলুল আওতার: (২/২১২)]
 
তিন রাকাত পড়া, দু’রাকাত পর সালাত ফিরানো, অতঃপর এক রাকাত দ্বারা বেতের‎ আদায় করা। 
আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের শুনিয়ে সালাম দ্বারা জোড় ও বেজোড় সালাতের মধ্যে বিচ্ছেদ সৃষ্টি করতেন”।[ইব্‌ন হিব্বান: (২৪৩৩), (২৪৩৪), (২৪৩৫), আহমদ: (২/৭৬) ইতাব ইব্‌ন যিয়াদ থেকে বর্ণনা করেছেন। হাফেজ ইব্‌ন হাজার বলেছেন: “এর সনদ শক্তিশালী”। ফাতহুল বারি: (২/৪৮২), আলবানী বলেছেন: আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে এর একটি ‘মরফূ’ ‘শাহেদ’ রয়েছে: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাকাত দ্বারা বেতের পড়তেন, তিনি দু’রাকাত ও এক রাকাতের মাঝে কথা বলতেন”। এ সনদটি সহিহ বুখারি ও মুসলিমের শর্ত মোতাবেক”। তিনি এর সূত্র হিসেবে ইব্‌ন শায়বাহ উল্লেখ করেছেন। দেখুন: ইরওয়াউল গালিল: (২/১৫০)] আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে একটি ‘মওকুফ’ বর্ণনা রয়েছে, নাফে বলেছেন: “আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ওমর বেতের‎ সালাতে এক রাকাত ও দু’রাকাতের মাঝে সালাম ফিরাইতেন, কখনো কোন প্রয়োজনের নির্দেশ করতেন”।[বুখারি: (৯৯১), মুয়াত্তা ইমাম মালেক: (১/১২৫)] ‘মওকুফ’ দ্বারা ‘মরফূ’ হাদিস শক্তিশালী হয়। আমি শায়খ আব্দুল আযিয ইব্‌ন বায রহ.-কে বলতে শুনেছি, তিনি তিন রাকাত বেতের‎ সম্পর্কে বলেছেন: “যে তিন রাকাত বেতের পড়তে চায় তার জন্য এটাই উত্তম। এটা পূর্ণতার নিকটবর্তী”।[ ‘রওদুল মুরিব’: (২/১৮৭) গ্রন্থের ব্যাখ্যার সময় আমি তা শুনেছি, তারিখ: ১৫/১১/১৪২২হি.]
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

জ্বী আপনার বিতর নামাজ ঠিক আছে। বিতর শব্দের অর্থ বিজোড়। তাই যেকোনো বিজোড় সংখ্যক রাকাতেই বিতর আদায় হবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

এক রাকাত বিতর কোন হাদিসে নেই। নবীজী বিতর তিন রাকাত পড়তেন। এটিই তাঁর অনুসৃত পন্থা। নিম্নের হাদীসসমূহ থেকে বিষয়টি সুপ্রমাণিত। আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমান থেকে বর্ণিত, তিনি হযরত আয়েশা রা. কে জিজ্ঞাসা করেন যে, রমযানে নবীজীর নামায কেমন হত? তিনি উত্তরে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে এবং রমযানের বাইরে এগার রাকাতের বেশি পড়তেন না। প্রথমে চার রাকাত পড়তেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না! এরপর আরও চার রাকাত পড়তেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা তো বলাই বাহুল্য! এরপর তিন রাকাত (বিতর) পড়তেন।-সহীহ বুখারী ১/১৫৪, হাদীস ১১৪৭; সহীহ মুসলিম ১/২৫৪, হাদীস ৭৩৮; সুনানে নাসায়ী ১/২৪৮, হাদীস ১৬৯৭; সুনানে আবু দাউদ ১/১৮৯, হাদীস ১৩৩৫; মুসনাদে আহমদ ৬/৩৬, হাদীস ২৪০৭৩ সা‘দ ইবনে হিশাম রাহ. বলেন, হযরত আয়েশা রা. তাকে বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না। -সুনানে নাসায়ী ১/২৪৮; হাদীস ১৬৯৮; মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ১৫১ (বাবুস সালাম ফিল বিতর) মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৪/৪৯৪, হাদীস ৬৯১২; সুনানে দারাকুতনী ২/৩২, হাদীস ১৫৬৫; সুনানে কুবরা বাইহাকী ৩/৩১ এই হাদীসটি ইমাম হাকেম আবু আব্দুল্লাহ রাহ.ও ‘মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন’ কিতাবে বর্ণনা করেছেন। তার আরবী পাঠ এই- ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻻ ﻳﺴﻠﻢ ﻓﻲ ﺍﻟﺮﻛﻌﺘﻴﻦ ﺍﻷﻭﻟﻴﻴﻦ ﻣﻦ ﺍﻟﻮﺗﺮ অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের প্রথম দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না। ইমাম হাকেম (রহ.) তা বর্ণনা করার পর বলেন- ﻫﺬﺍ ﺣﺪﻳﺚ ﺻﺤﻴﺢ ﻋﻠﻰ ﺷﺮﻁ ﺍﻟﺸﻴﺨﻴﻦ অর্থাৎ হাদীসটি বুখারী ও মুসলিমের শর্ত মোতাবেক সহীহ। ইমাম শামসুদ্দীন যাহাবী রাহ. ‘তালখীসুল মুস্তাদরাক’-এ হাকেম রাহ.-এর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। -মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন ১/৩০৪, হাদীস ১১৮০ এই হাদীস দ্বারা একদিকে যেমন প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাধারণ নিয়মে তিন রাকাত বিতর আদায় করতেন তেমনি একথাও প্রমাণিত হয় যে, তিন রাকাতের দ্বিতীয় রাকাতে তাশাহহুদের জন্য বসতেন, কিন্তু সালাম ফেরাতেন না। সালাম ফেরাতেন সবশেষে তৃতীয় রাকাতে। যদি দ্বিতীয় রাকাতে বৈঠক করার নিয়ম না থাকত তাহলে সালাম করার বা না করার প্রসঙ্গতই আসত না। কেননা সালাম তো ফেরানো হয়ে থাকে। ইমাম ইবনে হাযম যাহেরী রাহ. ‘মুহাল্লা’ কিতাবে বিতরের বিভিন্ন পদ্ধতির মাঝে আলোচিত পদ্ধতিটিও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, বিতর তিন রাকাত পড়া হবে। দ্বিতীয় রাকাতে বসবে এবং (তাশাহহুদ পড়ে) সালাম ফেরানো ছাড়াই দাঁড়িয়ে যাবে। তৃতীয় রাকাত পড়ে বসবে, তাশাহহুদ পড়বে এবং সালাম ফেরাবে, যেভাবে মাগরিবের নামায পড়া হয়। এটিই ইমান আবু হানীফা রাহ.-এর মত। এর দলিল হচ্ছে, সাদ ইবনে হিশাম রাহ.-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীস, যাতে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না। -মুহাল্লা ইবনে হাযম ২/৮৯ সাদ ইবনে হিশাম রাহ.-এর রেওয়ায়াতটি আরও একটি সনদে বর্ণিত হয়েছে, যার আরবী পাঠ নিম্নরূপ- ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻮﺗﺮ ﺑﺜﻼﺙ ﻻ ﻳﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﻓﻲ ﺁﺧﺮﻫﻦ অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন রাকাত বিতর পড়তেন এবং শুধু সর্বশেষ রাকাতে সালাম ফেরাতেন। হাকেম রাহ. এই রেওয়ায়াতের পর লেখেন, আমীরুল মুমিনীন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা.ও এভাবে বিতর পড়তেন এবং তাঁর সূত্রে মদীনাবাসীগণ তা গ্রহণ করেছেন। -মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন ১/৩০৪, হাদীস ১১৮১ (৩) আব্দুল্লাহ ইবনে আবী কাইস বলেন- ﻗﻠﺖ ﻟﻌﺎﺋﺸﺔ : ﺑﻜﻢ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻮﺗﺮ؟ ﻗﺎﻟﺖ : ﻛﺎﻥ ﻳﻮﺗﺮ ﺑﺄﺭﺑﻊ ﻭﺛﻼﺙ , ﻭﺳﺖ ﻭﺛﻼﺙ , ﻭﺛﻤﺎﻥ ﻭﺛﻼﺙ , ﻭﻋﺸﺮ ﻭﺛﻼﺙ , ﻭﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻳﻮﺗﺮ ﺑﺄﻧﻘﺺ ﻣﻦ ﺳﺒﻊ , ﻭﻻ ﺑﺄﻛﺜﺮ ﻣﻦ ﺛﻼﺙ ﻋﺸﺮﺓ . অর্থাৎ আমি হযরত আয়েশা রা.-এর কাছে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নবীজী বিতরে কত রাকাত পড়তেন? উত্তরে তিনি বলেন, চার এবং তিন, ছয় এবং তিন, আট এবং তিন, দশ এবং তিন। তিনি বিতরে সাত রাকাতের কম এবং তের রাকাতের অধিক পড়তেন না। -সুনানে আবু দাউদ ১/১৯৩, হাদীস ১৩৫৭ (১৩৬২); তহাবী শরীফ ১/১৩৯; মুসনাদে আহমদ ৬/১৪৯, হাদীস ২৫১৫৯ চিন্তা করে দেখুন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাজ্জুদ নামায কখনো চার রাকাত, কখনো ছয় রাকাত, কখনো আট রাকাত, কখনো দশ রাকাত পড়তেন; কিন্তু মূল বিতর সর্বদা তিন রাকাতই হত। ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রাহ. ফাতহুল বারী ৩/২৬ ﺑﺎﺏ ﻛﻴﻒ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻠﻴﻞ , ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺘﻬﺠﺪ )- এ লেখেন- ﻫﺬﺍ ﺃﺻﺢ ﻣﺎ ﻭﻗﻔﺖ ﻋﻠﻴﻪ ﻣﻦ ﺫﻟﻚ , ﻭﺑﻪ ﻳﺠﻤﻊ ﺑﻴﻦ ﻣﺎ ﺍﺧﺘﻠﻒ ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ . ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺃﻋﻠﻢ আমার জানামতে এটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সর্বাধিক সহীহ রেওয়ায়াত। এ বিষয়ে হযরত আয়েশা রা. বর্ণিত হাদীসের বর্ণনাকারীদের মাঝে যে বিভিন্নতা পরিলক্ষিত হয় এর দ্বারা সে সবের মাঝে সমন্বয় করা সম্ভব। (৪) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তাহাজ্জুদ ও বিতর প্রত্যক্ষ করার জন্য হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. এক রাতে তাঁর খালা উম্মুল মুমিনীন হযরত মাইমূনা রা.-এর ঘরে অবস্থান করেন। তিনি যা যা প্রত্যক্ষ করেছেন বর্ণনা করেছেন। তাঁর শাগরেদরা সে বিবরণ বিভিন্ন শব্দে বর্ণনা করেছেন। আমি এখানে সুনানে নাসায়ী ও অন্যান্য হাদীসের কিতাব থেকে একটি রেওয়ায়াত উদ্ধৃত করছি- ‘মুহাম্মাদ ইবনে আলী তার পিতা থেকে, তিনি তার পিতা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে শযা্য থেকে উঠলেন, এরপর মেসওয়াক করলেন, এরপর দুই রাকাত পড়লেন, এরপর শুয়ে গেলেন। তারপর পুনরায় শয্যা ত্যাগ করলেন, মেসওয়াক করলেন, অযু করলেন এবং দুই রাকাত পড়লেন; এভাবে ছয় রাকাত পূর্ণ করলেন। এরপর তিন রাকাত বিতর পড়লেন। এরপর দুই রাকাত পড়েন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ