সূরা মুহাম্মদ (محمّد), আয়াত: ১৫
مَّثَلُ ٱلْجَنَّةِ ٱلَّتِى وُعِدَ ٱلْمُتَّقُونَ فِيهَآ أَنْهَٰرٌ مِّن مَّآءٍ غَيْرِ ءَاسِنٍ وَأَنْهَٰرٌ مِّن لَّبَنٍ لَّمْ يَتَغَيَّرْ طَعْمُهُۥ وَأَنْهَٰرٌ مِّنْ خَمْرٍ لَّذَّةٍ لِّلشَّٰرِبِينَ وَأَنْهَٰرٌ مِّنْ عَسَلٍ مُّصَفًّى وَلَهُمْ فِيهَا مِن كُلِّ ٱلثَّمَرَٰتِ وَمَغْفِرَةٌ مِّن رَّبِّهِمْ كَمَنْ هُوَ خَٰلِدٌ فِى ٱلنَّارِ وَسُقُوا۟ مَآءً حَمِيمًا فَقَطَّعَ أَمْعَآءَهُمْ
অর্থঃ পরহেযগারদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তার অবস্থা নিম্নরূপঃ তাতে আছে পানির নহর, নির্মল দুধের নহর যারা স্বাদ অপরিবর্তনীয়, পানকারীদের জন্যে সুস্বাদু শরাবের নহর এবং পরিশোধিত মধুর নহর। তথায় তাদের জন্যে আছে রকমারি ফল-মূল ও তাদের পালনকর্তার ক্ষমা। পরহেযগাররা কি তাদের সমান, যারা জাহান্নামে অনন্তকাল থাকবে এবং যাদেরকে পান করতে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি অতঃপর তা তাদের নাড়িভূঁড়ি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেবে?
সূরা আদ-দাহর (الدَّهْرِ), আয়াত: ২১
عَٰلِيَهُمْ ثِيَابُ سُندُسٍ خُضْرٌ وَإِسْتَبْرَقٌ وَحُلُّوٓا۟ أَسَاوِرَ مِن فِضَّةٍ وَسَقَىٰهُمْ رَبُّهُمْ شَرَابًا طَهُورًا
অর্থঃ তাদের আবরণ হবে চিকন সবুজ রেশম ও মোটা সবুজ রেশম এবং তাদেরকে পরিধান করোনো হবে রৌপ্য নির্মিত কংকণ এবং তাদের পালনকর্তা তাদেরকে পান করাবেন ‘শরাবান-তহুরা’।
জান্নাতের সুরা বা মদের ব্যাপারে নিমোক্ত অায়াতসমূহ দেখুন-
সূরা মুহাম্মদ আয়াত ১৫
مَثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ ۖ فِيهَا أَنْهَارٌ مِنْ مَاءٍ غَيْرِ آسِنٍ وَأَنْهَارٌ مِنْ لَبَنٍ لَمْ يَتَغَيَّرْ طَعْمُهُ وَأَنْهَارٌ مِنْ خَمْرٍ لَذَّةٍ لِلشَّارِبِينَ وَأَنْهَارٌ مِنْ عَسَلٍ مُصَفًّى ۖ وَلَهُمْ فِيهَا مِنْ كُلِّ الثَّمَرَاتِ وَمَغْفِرَةٌ مِنْ رَبِّهِمْ ۖ كَمَنْ هُوَ خَالِدٌ فِي النَّارِ وَسُقُوا مَاءً حَمِيمًا فَقَطَّعَ أَمْعَاءَهُمْ
পরহেযগারদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তার অবস্থা নিম্নরূপঃ তাতে আছে পানির নহর, নির্মল দুধের নহর যারা স্বাদ অপরিবর্তনীয়, পানকারীদের জন্যে সুস্বাদু শরাবের নহর এবং পরিশোধিত মধুর নহর। তথায় তাদের জন্যে আছে রকমারি ফল-মূল ও তাদের পালনকর্তার ক্ষমা। পরহেযগাররা কি তাদের সমান, যারা জাহান্নামে অনন্তকাল থাকবে এবং যাদেরকে পান করতে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি অতঃপর তা তাদের নাড়িভূঁড়ি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেবে?
অাল্লাহ রব্বুল অালামিন অারও বলেন,
يُطَافُ عَلَيْهِمْ بِكَأْسٍ مِنْ مَعِينٍ
তাদেরকে ঘুরে ঘুরে পরিবেশন করা হবে বিশুদ্ধ সুরাপূর্ণ পাত্ৰ
بَيْضَاءَ لَذَّةٍ لِلشَّارِبِينَ
শুভ্র উজ্জ্বল, যা পানকারীদের জন্যে হবে সুস্বাদু।
لَا فِيهَا غَوْلٌ وَلَا هُمْ عَنْهَا يُنْزَفُونَ
তাতে ক্ষতিকর কিছু থাকবে না এবং তাতে তারা মাতালও হবে না। (সাফফাত ৪৫-৪৭)
অারো দেখুন- সূরা ওয়াক্বিয়াহ, অায়াত নং ১৯।
অালোচ্য অায়াতসমূহকে সামনে রাখলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, দুনিয়ার মদ অার জান্নাতের মদের স্বাদ, গন্ধ, বৈশিষ্ট্য ও প্রভাব সম্পূর্ণ এক তো নয়ই, বরং ভিন্ন। দুনিয়ার মদ সাধারণত ঝাঁঝালো, দুর্গন্ধযুক্ত । এটি পান করলে পানকারীর মাদকতা সৃষ্টি হয়, স্বাভাবিক হুঁশ-জ্ঞান থাকে না এবং বোধশক্তি, জ্ঞানশক্তি লোপ পায়। এছাড়া স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর বটে। পক্ষান্তরে, জান্নাতে মুত্তাক্বীদের জন্য অাল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যে শরাব বা সুরার (মদ) ব্যবস্থা রেখেছেন তা হবে সুগন্ধযুক্ত, সুবাসিত ও দুর্গন্ধমুক্ত। এটি খেলে কেউ মাতালও হবে না, এটি কোনো ক্ষতিকর প্রভাবও সৃষ্টি হবে না। সুতরাং, দুনিয়ার মদ অার জান্নাতের মদ এক নয়।
যাইহোক, অাপনার প্রশ্নটি ছিল জান্নাতে মদ থাকা না থাকা নিয়ে। এ বিষয়ে একটি হাদিস-
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জান্নাতে রয়েছে পানির সাগর, মধুর সাগর, দুধের সাগর এবং মদের সাগর। তারপর সেগুলো থেকে আরো নালাসমূহ প্রবাহিত করা হবে। [হাদিসটি তিরমিযী(রহ.) তার সুনান গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন , দেখুন হাদিস নং- ২৫৭১]
উপরোক্ত অায়াত ও হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, জান্নাতে বিশেষ ধরনের মদের নহর থাকবে ও সেই শরাব বা মদ জান্নাতীদের পরিবেশন করা হবে।