..................
আমাকে বুঝিয়ে বলেন,
কিভাবে গণনা করলে ৬৬৬৬ টি আয়াত,
আবার কিভাবে গণনা করলে ৬২৩৬ টি আয়াত হয়।
......
....
...
..
.
গবেষণামূলক উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মারকাযুদ দাওয়াত আলইসলামিয়া ঢাকার মুখপত্র “মাসিক আলকাউসার” পত্রিকায় ২০১৬ ঈসাব্দ সনে “কুরআনুল কারীম সংখ্যা” নামে একটি বিশেষ সংখ্যা বের হয়েছিল।
২৭০ পৃষ্ঠা ব্যাপৃত বিশাল সংখ্যাটিতে কেবল পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাজানো।
সেটিতে প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ গবেষক আলেম আল্লামা আব্দুল মালেক সাহেব হাফিজাহুল্লাহ “কুরআনে মাজীদের আয়াত-সংখ্যাঃ একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা” নামে একটি নাতিদীর্ঘ প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন।
যাতে তিনি পবিত্র কুরআনের পুরানো নুসখাসহ বিশ্বের বিভিন্ন মিউজিয়াম ও লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত কুরআন এবং ঐতিহাসিক দলীলের ভিত্তিতে প্রমাণ করেছেন যে, পবিত্র কুরআনের আয়াত সংখ্যা সর্ব নিম্ন ৬২০৪ আর সর্বোচ্চ ৬২৩৬।
বিস্তারিত দেখতে হলে পড়ুনঃ আলকাউসার, কুরআনুল কারীম সংখ্যা-৮৭-১৬১ পৃষ্ঠা, প্রকাশকাল ২০১৬ ঈসাব্দ।
সেখান থেকে একটু অংশ তুলে দিচ্ছিঃ
মুতাওয়ারাছ ও মুতলাক্কা বিল কবুল তথা যুগ পরম্পরায় পতূর্বসূরিদের থেকে প্রাপ্ত এবং সর্বজনস্বীকৃত গণনা পদ্ধতিগুলোতে ৬২০৪ এর কম এবং ৬২৩৬ এর বেশি কোন সংখ্যা নেই। প্রথমটি বসরী গণনার আয়াত সংখ্যা আর দ্বিতীয়টি কুফী গণনার আয়াত সংখ্যা।
এ বিষয়টিকে ইবনুল জাওযী রহঃ পরিস্কার ভাষায় লিখেছেনঃ
فقد وقع إجماع العادين على أن القرآن ستة ألاف ومئتا أية، ثم اختلفوا فى الكسر الزائد على ذلك….
অর্থাৎ আয়াত গণনাকারীদের এ ব্যাপারে ইজমা হয়েছে যে, মোট আয়াত সংখ্যা ৬২০০ এর কিছু বেশি। কত বেশি তা নিয়ে তাদের মাঝে ইখতিলাফ হয়েছে।
এরপর ইবনুল জাওযী রহঃ দুইশো এর কত বেশি সে সম্পর্কে আয়াত সংখ্যা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত উল্লেখ করেছেন। কিন্তু সেখানে ৬২০৪ এর কম এবং ৬২৩৬ এর বেশি কোন সংখ্যার কথা উল্লেখ করেননি।
আয়াত সংখ্যা সম্পর্কে লিখিত কিতাবসূমহ (যা প্রায় একশোর কাছাকাছি) যে কিতাবই অধ্যয়ন করা হোক ইবনুল জাওযী রহঃ এর উল্লেখকৃত ইজমার কথা স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে সামনে আসবে। [দ্রষ্টব্য-১০৭ পৃষ্ঠা]
উপরোক্ত আলোচনার আলোকে আশা করি পরিস্কার ধারণা হয়ে গেছে যে, কুরআনে কারীমের আয়াত সংখ্যা ৬২৩৬টি। এটাই বিশুদ্ধ। ৬৬৬৬ যে সংখ্যার কথা বলা হয়ে থাকে তা নিরেট গলদ মাশহুর বা ভুল প্রচলন।
জ্বী ভাই এখানে বিশ্বাস অবিশ্বাসের কথা নয় আর এ নিয়ে কোন দ্বন্দ্বে জড়ানো কোন ভাবেই ঠিক নয়,ইসলাম সমর্থনন করে না।এখন, কুরআনের ১১৪ টি সূরার মোট আয়ত ৬২৩৬ টি তবে কিছু কিছু সূরার কিছু আয়াত আছে যেগুলো অনেক বড় বড় (যেমন সূরা বাকারা শেষের দিকের আয়াত ২৮২) তাই অনেক ওলামাগণ হেফজ করার সুবিধার্থে বড় আয়াতগুলো ভেঙ্গে ছোট কয়েকটি আয়াত করেছে।এ ভাবে ৬৬৬৬ টি আয়াত হয়েছে।এটা যদি কেউ বিশ্বাস তাহলেও কোন সমস্যা নাই বা তার ঈমান চলে যাবে এটা কেউ বলতে পারবে না।কারণ,৬৬৬৬ এর মধ্যে ৬২৩৬ আছে ।আবার যদি কেউ ৬২৩৬ টি বিশ্বাস করে তাহলেও সমস্যা নাই বা তার ঈমান নাই কেউ বলতে পারবে না।তাই,ভাই এগুলো নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হবেন না,ইসলাম বিদ্বেষীরা মুসলমানেরা নিজেদের মধ্যে মতভেদে লিপ্ত হোক এটাই চায়।
আল কোরআন একাডেমী লন্ডন থেকে প্রকাশিত পবিত্র কোরআনের পূর্ণাঙ্গ সহজ সরল বাংলা অনুবাদ জনাব হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ (১৭ নং পৃষ্ঠা): জান্নাতের ওয়াদা ১০০০, জাহান্নামের ভয় ১০০০, নিষেধ ১০০০, আদেশ-১০০০, উদাহরন-১০০০, কাহিনী-১০০০, হারাম-২৫০, হালাল-২৫০, পবিত্রতা-১০০ এবং বিবিধ-৬৬ সর্বমোট ৬৬৬৬ আয়াত। হযরত আয়েশা রা. এর মতে ৬৬৬৬, হযরত ওসমা রা. মতে ৬২৫০, হযরত আলী রা. মতে ৬২৩৬, হযরত ইবনে মাসউদ রা. মতে ৬২১৮, মক্কার গননা মতে ৬২১২, বসরার গণনা মতে ৬২২৬, ইরাকের গণনা মতে ৬২১৪টি আয়াত পবিত্র কোরআনে বিদ্যমান। ঐতিহাসিকদের মতে আয়েশা রা. গণনাই বেশী প্রসিদ্ধ লাভ করেছে। এই পার্থক্য মূলত গণনার ধরনের পার্থক্যের কারণে। মূল আয়াত কতগুলো সেটি আল্লাহ সুবহানাহু তাআলাই ভাল জানেন। আর একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা পবিত্র কোরানের সূরা হিজর এর ৯নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন 'আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতরন করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।' সুতরাং আমাদের গণনার ধরন কিংবা যে কোন প্রকার মতভেদের পার্থক্যের কারনে কোরআনের কোন হেরফের হবে না বা কারো পক্ষেই সম্ভব নয় এবং তাতে কিছু যায় আসে না। ধন্যবাদ
আয়াতের শুরু শেষ-নিরুপণের তারতম্যের কারণে আয়াতের সংখ্যা নিয়ে মত পার্থক্য রয়েছে৷ এ ব্যাপারে সাতটি মত পাওয়া যায়৷ ১৷ প্রথম মাদানী গণনা মতে ৬২১৭ টি ২৷ দ্বিতীয় মাদানী গণনা মতে ৬২১৪ টি ৩৷ মাক্কী গণনা মতে ৬২১৯ টি ৪৷ বসরী গণনা মতে ৬২০৪ টি ৫৷ হিমসী গণনা মতে ৬২৩২ টি ৬৷ কুফী গণনা মতে ৬২৩৬ টি ৭৷ শামী গণনা মতে ৬২২৬ টি বর্তমানে ছাপানো অধিকাংশ মুছহাফ গুলোতে (কুরআনে) কুফী গণনা অনুসারে (৬২৩৬ টি) আয়াত নং লাগানো আছে৷ দ্র: আয়াতের গণনা কোন ইজতেহাদি বিষয় নয়৷ বরং তাওকীফী৷ অর্থাৎ রাসূল সাঃ থেকে বর্ণিত৷ বর্ণনাকারী সাহাবাদের বর্ণনার ভিন্নতায় আয়াতের সংখ্যায় মতভিন্নতা এসেছে৷