তারপর বিয়ের আগেই আমার প্রেমিকার গর্ভে সন্তান আসে ,সন্তান জন্ম নেওয়ার কিছু দিন আগেই আমরা বিয়ে করে ফেলি ! এখন এই সন্তান কি যিনার সন্তান হবে ?  এই সন্তানের হুকুম কি ? প্লিজ ইসলামের আলোকে দলিল দিয়ে বলবেন 
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call
বিয়ের আগে প্রেম করে তারপর তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করায় আপনি হারাম কাজে লিপ্ত হয়েছেন।

যিনা করা কবিরা গুনাহ যে গুনাহ তওবা ছাড়া মাফ হয় না। যিনা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমরা যিনার কাছেও যেও না। কেননা তা অত্যন্ত অশ্লীল এবং খারাপ কাজ। (সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াতঃ ৩২)

বিয়ের আগেই প্রেমিকার গর্ভে সন্তান আসলে সন্তান জন্ম নেওয়ার কিছু দিন আগেই বিয়ে করে ফেললে এই সন্তান যিনার সন্তান অর্থাৎ যারজ সন্তান হিসাবে গন্য হবে।

কেন যারজ সন্তান হবে?

জনাব! উক্ত সন্তানের জন্মগ্রহণ অর্থাৎ জন্ম নেয়ার কিছুদিন আগেই ব্যভিচারী ব্যভিচারিনীকে বিয়ে করে নিয়েছে। যদিও আপনি তাই করেছেন কিন্তু একটু দেরিতে।

বিয়ের কমপক্ষে ছয় মাস পর বাচ্চা জন্ম নিলেই উক্ত সন্তান স্বামী স্ত্রীর বৈধ সন্তান হিসেবে গণ্য হবে। তখন স্বামী একে নিজের সন্তান না বলে অস্বীকার করতে পারবে না। (মাবসুত সারাখসিঃ ১৭/১৫৫)

এই গর্ভ থেকে যে সন্তান হবে তার হুকুম বা কার সন্তান বলে গন্য হবে?

আবারো বলা হচ্ছে এটা নির্ভর করবে সন্তানটা বিয়ের কত দিন পরে ভুমিষ্ট হবে সেটার উপর। যদি সন্তান বিয়ে হওয়ার ছয় মাস পরে ভুমিষ্ট হয় তাহলে সে সন্তান তাদের বৈধ সন্তান হিসাবে গন্য করা হবে। তার লালন পালন পিতার জিম্মায় হবে। এবং তার থেকে মিরাছও পাবে। আর যদি তাদের বিবাহ হওয়ার ছয় মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই ভুমিষ্ট হয়ে যায় তাহলে সে সন্তানকে যারজ বলে গন্য করা হবে। সে সন্তানের নিসবত তার মায়ের দিকে হবে। পিতার দিকে নয়। এবং সে সন্তানের লালন পালন সে যিনা কারীর উপর বর্তাবে না। এবং সে যিনাকারী মারা গেলে তার থেকে মিরাছ পাবে না।

হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ আলেম আল্লামা হাসকফী (রহঃ) বলেন, যদি সে যিনাকারীনী মহিলাকে সে যিনাকার পুরুষ বিবাহ করে এবং যিনার কারনে যে সন্তান হবে সেটা সে যিনাকার পুরুষের সন্তান হিসাবে গন্য করা হবে। এবং তার উপর লালন পালনের খরচ বহন জরুরী হয়ে যাবে। (আদ-দুররুল মুখতারঃ ৩/৫৪)

আল্লামা হাছকফী (রহঃ) এর কথা “এবং যিনার কারনে যে সন্তান হবে সেটা সে যিনাকার পুরুষের সন্তান হিসাবে গন্য করা হবে” এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী (রহঃ) বলেন,

অর্থাৎ সে সন্তান যিনাকার পুরুষের সন্তান হিসাবে সাব্যস্ত হবে যদি বিয়ের ছয় মাস পরে বাচ্চা জন্ম হয়। আর যদি বিয়ের ছয় মাস হওয়ার পূর্বেই বাচ্চা ভুমিষ্ট হয় তাহলে তার থেকে নছব তথা বংশ প্রমাণীত হবে না। এবং তার থেকে মিরাছ পাবে না। তবে যদি সে যিনাকার পুরুষ বলে যে, এই সন্তান আমার সন্তান তাহলে তার থেকে বংশ প্রমাণীত হবে। এবং তার থেকে মিরাছও পাবে। (ফাতওয়ায়ে শামীঃ ৩/৫৪)

বিবাহপূর্ব মিলন অবশ্যই যিনা হয়েছে। এ জন্য সারাজীবন কঠিন তওবা ও কান্নাকাটি করে যেতে হবে। যেহেতু পরে বিয়ে করেছেন, তাই বর্তমানে স্বাভাবিক জীবন যাপন করুন। তওবা ইস্তেগফার ও দোয়া বন্ধ করবেন না। মৃত্যু পর্যন্তই ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকুন।

সন্তান জন্ম নেওয়ার কিছু দিন আগেই বিয়ে করেছেন! এখানে কিছুদিন কথাটা সুপষ্টভাবে বলা হয়নি যে কয়দিন। তাই উত্তর এর সাথে মিলিয়ে নিবেন।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ