স্বদেশী আন্দোলন হলো ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি অংশ। স্বদেশী আদর্শে উদ্বুদ্ধ এই আন্দোলনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল অর্থনৈতিকভাবে ব্রিটিশ শক্তিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদসাধন এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উন্নতিসাধন। আন্দোলনের রণকৌশলের অন্তর্গত ছিল ব্রিটিশ পণ্য বয়কট এবং দেশীয় শিল্প ও উৎপাদন প্রক্রিয়ার উন্নতিসাধন।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে যে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়, তাকেই স্বদেশি আন্দোলন বলা হয়।এই আন্দোলন এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ পণ্য বয়কট এবং দেশীয় শিল্প ও উৎপাদন প্রক্রিয়ার উন্নতি সাধন।এ আন্দোলন প্রাক-গান্ধী যুগের সফলতম আন্দোলনগুলোর অন্যতম ছিল। এ আন্দোলন প্রসারিত হয়ে এক সর্বভারতীয় গণ-আন্দোলনে রূপ নেয় এবং পরবর্তীকালে মহাত্মা গান্ধী এটিকে স্বরাজের আত্মা রূপে বর্ণনা করেন।ব্রিটিশ পণ্য বিশেষত বস্ত্র,লবণ,চিনি,সিগারেট এবং বিলাস সামগ্রী বর্জনের পিছনে যেমন একটি অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল তেমনি এর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও ছিল।তা হলো দেশকে স্বনির্ভরশীল করে তোলা এবং বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষণা করতে ব্রিটিশ সরকারকে বাধ্য করা।স্বদেশী আন্দোলনকারীরা ঠিকই ধরে নিয়েছিলেন যে,বয়কট বা বর্জন আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিটিশ বস্ত্রশিল্প এবং বিলাস সামগ্রী উত্তপাদনকারী শিল্প-মালিকরা ব্রিটিশ সরকারকে বঙ্গভঙ্গ রদ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করবে।