যদি আপনার প্রশ্নের ব্যাখ্যায় আমি বিজ্ঞানীদের বিরুদ্ধে কথা বলি তাহলে হয়তো সবাই আমায় নিয়েই সমালোচনা করবেন,কিন্তু এখানে কিছুটা বিরুদ্ধাচরণ করতেই হচ্ছে।বিজ্ঞানীরা সাধারণতই একেক সময়ে একেক মতামত পোষণ করেন। দুধ কখনোই কেবল ছোটদের খাদ্য নয়।ছোটদের হাড় গঠনে দুধ যেমন ভূমিকা রাখে, তেমনই বড়দেরও হাড়ের গাঁথুনি মজবুত রাখতে দুদ্ধজাত খাবার খাওয়া প্রয়োজন।অন্যান্য উপাদানের কথা বাদ ই দিলাম,দুধ ক্যালসিয়ামের অনেক বড় একটি উৎস। আর এই ক্যালসিয়াম এর অভাব আপনাকে বর্তমানে পেইন না দিলেই,চল্লিশের পর থেকেই বুঝতে পারবেন কত ধানে কত চাল। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য মেনোপজের পর ক্যালসিয়ামের অভাব হতে অনেক ভোগান্তির কারণ। কাজেই আপনি কি মনে করেন দুধ কেবল ছোটরাই খেতে পারবে...?আর প্রক্রিয়াজাতকরণ এর কথা বলতে গেলে আমাকে তথাকথিত বাজারের প্যাকেটজাত দুধের উদাহরণ টানতে হবে। আপনি একটি বাচ্চাকে সেইসব প্যাকেটজাত দুধ(আড়ং,মিল্কভিটা ইত্যাদি) কিভাবে নিশ্চিন্তে খাওয়াবেন..? আপনি আপনার বাচ্চাকে যদি গরুর দুধও খাওয়াতে যান তাহলেও কিন্তু আপনি তা ফুটিয়ে খাওয়াচ্ছেন,সরাসরি নয়। তাহলে কিসে বিভেদ..? হ্যাঁ এই দুধ বড়দের ক্ষেত্রে যে সমস্যাটি বেশি করে তা হল,যাদের শরীরে 'ল্যাক্টেজ' নামক এনজাইমের অভাব আছে, তাদের সমস্যা হতে পারে।মূলত ল্যাক্টেজ দুধ হজম করতে আমাদের সাহায্য করে। এটি দুধের উপাদান ল্যাক্টোজ কে ভেঙে দেয়। বস্তুত আমাদের শরীর সরাসরি ল্যাক্টোজ গ্রহণ করতে পারে না। তাই ল্যাক্টেজের ভূমিকা এখানে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, যাদের শরীরে ল্যাক্টেজের অভাব আছে, তাদের দুধ খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান হওয়াই উচিৎ। কিন্তু এই কিছু কিছু মানুষের শারীরিক সমস্যার কারণে আমরা এটা বলতে পারিনা যে দুধ কেবল বাচ্চারাই খেতে পারে।এবার আসি বিজ্ঞানীদের আরেকটি তথ্যের কথা নিয়ে,তারা দাবি করে ১ বছরের আগে যদি শিশুদের গরুর দুধ খাওয়ানো হয়, তাহলে এতে থাকা প্রোটিন এবং খনিজ হজম করতে না পেরে শিশুর কিডনির সমস্যা, অ্যালার্জি, ডায়ারিয়া, পেটের রোগ, বমি এবং রক্তশূন্যতা দিতে পারে।তাহলে এবার আপনি কি বলছেন..? হ্যাঁ আমি মানলাম যে ১ বছর পার হলে শিশুর হজম ক্ষমতা একটু একটু করে বাড়তে থাকে,কিন্তু সে তো একলাফে বড় হয়ে গেল না তাইনা..? তাহলে এক্ষেত্রেও আপনাকে সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ কিন্তু বিজ্ঞানীরাই দিচ্ছে। অবশ্যই এবার অনেকেই ভাববে তাহলে দুধ খাওয়া উচিৎ কিনা। আমার মতামত, যেকোনো বয়সের মানুষই দুধ খেতে পারবে। তবে যাদের এলার্জি, অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ,গ্যাস্ট্রিক আলসার কিংবা যারা অপারেশনের রোগী তাদের দুধ সেবনে সতর্ক থাকা উচিৎ। তবে খাওয়া যাবেনা তা নয়, সপ্তাহে ২/৩ দিন ১৫০ থেকে ২০০ মিলিলিটার দুধ আপনি খেতেই পারেন। (এসব আমার মতামত,অন্য কারোর এসবের সাথে না ও মিলতে পারে,কাজেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি)